ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের রহস্য: তামিম বলছেন ৫ কারণ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০১৮ আগস্ট ০৯ ০১:৩৭:১০
ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের রহস্য: তামিম বলছেন ৫ কারণ

হ্যাঁ, টেস্ট সিরিজের দুই ম্যাচেই বিশাল হারের পরও এটাই বলতে হবে। ক্রিকেটীয় যুক্তি খাটালে বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ওদেরই মাঠে টেস্টে হারিয়ে দেবে, এমন আশা বাড়াবাড়িই ছিল। ওই ব্যর্থতা ভুলে দলটা যে চকিতে ঘুরে দাঁড়াল, সেটিই বরং বড় প্রাপ্তি। পুরো সিরিজেই দারুণ ফর্মে থাকা তামিম ইকবাল কাল মুঠোফোনে জানিয়েছেন, তাঁর চোখে বাংলাদেশের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পাঁচ কারণ।

মাশরাফির জাদুমাশরাফি কি তাহলে জাদুকর? কখনো কখনো তা-ই। ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সময়ে নইলে কেন তাঁর উপস্থিতিতেই বদলে যায় দলের চেহারা! টেস্টের ভরাডুবির পরও যে ওয়ানডেতে বাংলাদেশ বিপুল বিক্রমে ঘুরে দাঁড়াল, তামিমের চোখে সেটির অন্যতম কারণ দলে অধিনায়ক মাশরাফির উপস্থিতি, ‘মাশরাফি ভাইয়ের উপস্থিতি বড় একটা ভূমিকা রেখেছে। এটার দরকার ছিল। টেস্ট সিরিজে আমরা বাজে সময় কাটিয়েছি। এরপর মাশরাফি ভাই এসে যে ছোট ছোট কথাগুলো বলেছেন, সবাইকে যেভাবে অনুপ্রাণিত করেছেন; সেটা আমাদের ভালো কিছু করতে আত্মবিশ্বাসী করেছে। টেস্টের খারাপ খেলাটা কেউ আর মনে রাখেনি।’

নতুন সংস্করণ, নতুন আশাঅ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪৩ রানে অলআউটের অঘটন ঘটে যাওয়ার পর সেটির একটি রেশ টেস্ট সিরিজের পরের ইনিংসগুলোতেও থেকে যাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ফিরে বাংলাদেশ যেন ফিরে পেল অক্সিজেন! ওয়ানডেতে নিয়মিতই বড় দলকে হারানোটা যখন তাদের অভ্যাস, ওয়েস্ট ইন্ডিজও কেন নয়? তামিমই বলেছেন, ‘আমাদের বিশ্বাস ছিল নিজেদের খেলাটা খেলতে পারলে ওদের হারানো সম্ভব।’ ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় দেখিয়ে দিয়েছে সেটিই।

সাকিব-তামিমের ২০৭দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম উইকেটের পতন। টেস্টের পর সেন্ট কিটসে প্রথম ওয়ানডেটাও বাংলাদেশ দলের জন্য শুরু হয়েছিল অমঙ্গল বার্তা দিয়ে। কিন্তু সকালের সূর্য সব সময়ই সারা দিনের পূর্বাভাস দেয় না। ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ জেতে ৪৮ রানে। দ্বিতীয় উইকেটে তামিম-সাকিবের ২০৭ রানের জুটি দলকে নিয়ে যায় ক্যারিবীয়দের ধরাছোঁয়ার বাইরে। সিরিজ শেষে তামিমের বিশ্লেষণ বলছে, তাদের ওই জুটি দলের সবার মনোবলই বাড়িয়ে দিয়েছিল, ‘সাকিব আর আমার জুটি সবার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়। টেস্ট সিরিজে হারিয়ে ফেলা বিশ্বাস খুঁজে পায় সবাই, যেটা পরে প্রতি ম্যাচেই কাজে দিয়েছে।’ তাঁদের এই জুটি নিয়ে কিছু নেতিবাচক আলোচনাও অবশ্য হয়েছে। তামিম ভুল ভাঙাতে চাইলেন, ‘আমি জানি আমাদের ব্যাটিং নিয়ে সেদিন অনেকে অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু আমি আর সাকিব এবং আমাদের দলের অন্যরা ঠিকই জানে, ওই ম্যাচে কত কষ্ট করে রান করতে হয়েছে।’

পঞ্চপাণ্ডব’ ও মোস্তাফিজমোস্তাফিজের কথাটাই আগে বললেন তামিম। ওয়ানডের তিন ম্যাচে ২৬.৩ ওভার বল করে ২৮.৪০ গড়ে ১৪২ রানে ৫ উইকেট পেয়েছেন বাঁহাতি পেসার। আর তিন টি-টোয়েন্টির ৯.১ ওভারে ১২.৩৭ গড়ে ৯৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ৮ উইকেট। কিন্তু শুধু উইকেট আর কত রান দিলেন, তা দিয়ে মোস্তাফিজের পারফরম্যানস বিচার করছেন না তামিম, ‘বলতে পারেন ও রান বেশি দিয়েছে। কিন্তু মোস্তাফিজ কখন বোলিং করেছে, সেটাও দেখুন। বেশির ভাগ ওভার সে করেছে পাওয়ার প্লে অথবা স্লগে। অধিনায়ক যখনই তাঁকে বোলিংয়ে এনেছেন, মোস্তাফিজ উইকেট পেয়েছে। তার প্রশংসা না করাটা অন্যায় হবে।’ওয়ানডে দলে পাঁচ সিনিয়র খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্স আলাদা করেই চোখে পড়েছে সবার। টি-টোয়েন্টিতেও তা-ই। তামিমের চোখে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টির সাফল্যে এটি ছিল বড় প্রভাবক। সঙ্গে অবশ্য বলেছেন, ‘এটা ঠিক যে সিনিয়ররা ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলেছে। তবে এটাই তাদের দায়িত্ব। একটা দলে তিন-চারজন গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার থাকবে, অন্যদের মধ্য থেকেও দুই-তিনজন উঠে আসবে, এটাই হয় সাধারণত। শ্রীলঙ্কা দলে যখন মাহেলা জয়াবর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারারা ছিল, সেখানেও এ রকমই দেখেছি। অন্যরা তাদের সাহায্য করে গেছে।’

টি-টোয়েন্টিতে সাকিবের নেতৃত্বগত আফগানিস্তান সিরিজেও সাকিবের নেতৃত্বের সমালোচনা হয়েছিল। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নিজের বোলিংয়ে না আসা বা মাহমুদউল্লাহকে ঠিকভাবে কাজে না লাগানো-এ রকম কত কী! কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সাকিবের নেতৃত্বে শুধু ইতিবাচক দিকই দেখছেন তামিম। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া বলতে যা বোঝায়, সাকিব করেছেন সেটাই। ‘সব ম্যাচেই দারুণ তৎপর ছিল ও। এটা অন্য ক্রিকেটারদের উৎসাহিত করেছে। দলের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল সাকিবের অধিনায়কত্ব’, বলেছেন বাংলাদেশ ওপেনার। তামিমের সবচেয়ে ভালো লেগেছে, সাকিবের মনেপ্রাণে টি-টোয়েন্টি সিরিজটা জিততে চাওয়া, ‘প্রথম ম্যাচে হারার পর যে মনোভাব নিয়ে ও দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিটা খেলতে নামল, এককথায় অসাধারণ। ও খুব চাচ্ছিল সিরিজটা আমরা জিতি। অধিনায়কত্ব, নিজের পারফরম্যান্স-সব দিক দিয়েই সফল ছিল সাকিব। অন্যরাও তাতে উজ্জীবিত হয়েছে।’

সামনে আরও ব্যস্ত সময় আসছে বাংলাদেশ দলের। সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ দিয়ে যার শুরু। এরপর একটার পর একটা সিরিজ চলতেই থাকবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে শিখে আসার সাফল্যের মন্ত্র মনে রাখা চাই সেখানেও। নইলে উন্নতির গ্রাফটা যে আবারও থমকে যেতে পারে!

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে