ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

হাসপাতালে পিনাকী ভট্টাচার্য, জানালেন আবেগময় বার্তা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মার্চ ০৭ ২২:৩০:২৩
হাসপাতালে পিনাকী ভট্টাচার্য, জানালেন আবেগময় বার্তা

জনপ্রিয় অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও লেখক পিনাকী ভট্টাচার্য আবারও শিরোনামে—তবে এবার কোনো তীক্ষ্ণ লেখা বা স্পষ্টবাদী বক্তব্যের জন্য নয়, বরং তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে। গুরুতর না হলেও, একটি জরুরি সার্জারির জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (৭ মার্চ) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক আবেগঘন পোস্টে তিনি জানান, তার শরীরে জেনারেল এনেস্থেসিয়া দিয়ে একটি সার্জারি করা হবে। যদিও এটি জীবন-মরণ সংকট নয়, তবে দীর্ঘদিন ধরে সহ্য করা এক যন্ত্রণার স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা এটি।

নব্বইয়ের দশকের ক্ষত এখনো বহন করছেন পিনাকী

নিজের শারীরিক সমস্যার উৎস সম্পর্কে বলার সময় পিনাকী ফিরে যান ১৯৯০-এর দশকে, যখন তিনি পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তার এক পা তখনই ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার ফলাফল আজও তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। দীর্ঘদিনের শারীরিক যন্ত্রণা কমানোর জন্যই এই সার্জারি বলে জানান তিনি।

"আমার শরীরে সেই ১৯৯০-এর পুলিশি নির্যাতনের পর একটা পা ছোট হয়ে যাওয়ায় নানা জায়গায় যন্ত্রণা থেকে গেছে," লিখেছেন তিনি। "এবারের সার্জারির মাধ্যমে সেই যন্ত্রণার একটি স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করা হবে।"

হাসপাতালে থেকেও থামবে না তার কণ্ঠস্বর

হাসপাতালে থাকার কারণে তার নিয়মিত ভিডিও প্রকাশ বন্ধ হয়ে যাবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন পিনাকী। তিনি জানান, তার কিছু ভিডিও আগেই রেকর্ড করা হয়েছে, তাই তার কণ্ঠস্বর শীঘ্রই থামছে না।

"আমার ভিডিও হয়তো নিয়মিতই দেওয়া যাবে। রেকর্ড করে দেওয়া আছে গত রাতেই," বলেন তিনি।

জীবন-মৃত্যুর ভাবনা, আর বাস্তবতার উপলব্ধি

সার্জারির আগে সাধারণত মানুষের মনে এক ধরনের উদ্বেগ কাজ করে। পিনাকীর মনেও সেই চিন্তা এসেছে। কিন্তু তার ভাবনার রঙ অন্যরকম—এক ধরণের আত্মসমর্পণ আর গভীর উপলব্ধি।

"এনেস্থেসিয়া নেওয়ার আগে মনে হয়, যদি আর কখনো জ্ঞান ফিরে না আসে? মন্দ না। যন্ত্রণাহীন মৃত্যুর চাইতে আনন্দময় কিছু নেই," তিনি লিখেছেন।

তার কাছে জীবন ছিল এক রোলার কোস্টার, যেখানে আনন্দ এসেছে স্বল্প পরিমাণে, কিন্তু যন্ত্রণা ছিল দীর্ঘস্থায়ী। তবু তিনি এই জীবনকে ভালোবেসেছেন, কারণ তা তাকে শিখিয়েছে, গড়ে তুলেছে, এবং অনেক ভালোবাসার মানুষের সংস্পর্শে এনেছে।

"এই জীবনের বেশির ভাগটাই যন্ত্রণার। খুব সামান্য অংশ আনন্দের। যন্ত্রণাটাই জীবন, আর আনন্দটা আপনার উপহার," বলেন তিনি।

ভক্তদের উদ্দেশে শেষ কথা: ইনসাফের শিখা জ্বালিয়ে রাখবেন

তার অনুগামীদের উদ্দেশে রেখে যান কিছু দিকনির্দেশনা—ক্ষমতার পাশে নয়, সত্যের পাশে দাঁড়ানোর।

"যদি সুস্থভাবে ফিরি, তাহলে আবার দেখা হবে। আর না ফিরলে মনে রাখবেন, পৃথিবী কারও জন্য থেমে থাকে না। শুধু মানুষের জন্য দরদ আর ইনসাফের শিখাটা জ্বালিয়ে রাখবেন। ক্ষমতা নয়, মজলুমের সঙ্গে থাকবেন, কারণ সত্য থাকে ওইখানেই।"

তিনি সবাইকে ভালো থাকার বার্তা দিয়ে বলেন,

"ভালো থাকবেন, নির্বিঘ্নে আর আনন্দে থাকবেন। ফি আমানিল্লাহ। ইনকিলাব জিন্দাবাদ।"

পিনাকীর এই কথাগুলো তার ভক্ত-অনুসারীদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। তারা তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন, অপেক্ষায় আছেন তার শক্তিশালী কণ্ঠস্বর আবারও ফিরে আসার জন্য।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ