ঢাবির শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস শ্রাবণী: জালিয়াতির অভিযোগে নতুন তথ্য প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০১৮-১৯ সেশনের উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস শ্রাবণীর বিরুদ্ধে জালিয়াতির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, জান্নাতুল ফেরদৌস শ্রাবণী তার সহপাঠীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে নানা প্রতিষ্ঠানে সাহায্যের আবেদন করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।
শিকারি বানিয়ে জালিয়াতির চালানো
জান্নাতুল ফেরদৌস শ্রাবণী মূলত আর্থিক কষ্টে থাকা ছাত্রীদের বিশ্বাস অর্জন করতেন। তাদেরকে কাছের বন্ধু হিসেবে মনে করে নানা ধরনের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিতেন, আর তারপর তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করতেন। এসব তথ্য ব্যবহার করে তিনি বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম অ্যাকাউন্ট তৈরি করতেন এবং সাহায্য চেয়ে অর্থ সংগ্রহ করতেন।
এ ধরনের জালিয়াতির প্রথম বড় শিকার হন ঢাবির বোটানি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জুলফা। তিনি জানান, "সে আমার পরিচয়ে টাকা সংগ্রহ করেছে। আমার ছবি, আইডি কার্ড, সনদপত্র ব্যবহার করে আমাকে অপমান করেছে। আমি বিচার চাই।"
অর্থ সংগ্রহের কৌশল: ভুয়া পরিচয়, ভুয়া সহায়তা
জান্নাতুল ফেরদৌস শ্রাবণী গত বছর মার্চে সিলেটের বন্যাদুর্গতদের সাহায্যের জন্য ৩০,০০০ থেকে ৩৫,০০০ টাকা সংগ্রহ করেছেন। এ জন্য তিনি জুলফার ব্যক্তিগত ডকুমেন্টস ব্যবহার করে একটি ভুয়া সাহায্যের আবেদন করেন। এর পর তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৩০,০০০ টাকা এবং জুলফার পরিচয়ে আরও ৪০,০০০ টাকা উত্তোলন করেন। তদন্তে এও জানা যায় যে, তিনি বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে শিক্ষা সহায়তার নামে অর্থ সংগ্রহ করেছেন।
এছাড়া, জান্নাতুল ফেরদৌস শ্রাবণী আরেক শিক্ষার্থী আয়েশার কাছ থেকে ১৫,০০০ টাকা নিয়েছিলেন এবং অন্য এক ছাত্রীর পরিচয়ে আরও ৪০,০০০ টাকা সংগ্রহ করেন।
গ্রিন ফিউচার সিইও খালিদ বলেছেন, "জান্নাতুল ফেরদৌস শ্রাবণী আমাদের জন্য বড় একটি ধোঁকা ছিল। তদন্তে তার কর্মকাণ্ড সঠিকভাবে প্রমাণিত হওয়ার পর, আমরা তাকে গ্রিন ফিউচার থেকে বহিষ্কার করেছি।"
তার সাথে একাধিক সহপাঠীরাও প্রতারিত হয়েছেন। পেইড ফরওয়ার্ড স্কলারশিপ প্রোগ্রামের আবু বকর বলেন, "আমরা জানতাম না, সে একটি জালিয়াত। তার সাহায্যে আমরা তাকে স্কলারশিপ দিয়েছিলাম।"
শরীরিক কষ্টের অজুহাত: 'আমার বাবা নেই'
জান্নাতুল ফেরদৌস শ্রাবণী যখন এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তখন সে জানিয়েছে, "আমি খুবই অভাবী ছিলাম। আমার বাবা নেই, তাই এসব করেছি। তবে আমি এখন আমার ভুল স্বীকার করছি।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত এবং সিদ্ধান্ত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. দিলওয়ার হোসেন জানান, "আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি এবং সে সমস্ত দোষ স্বীকার করেছে। তাকে ১০টা পর্যন্ত লিখিত ব্যাখ্যা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।"
এছাড়া, কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সালমা নাসরিন বলেছেন, "যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
এ ঘটনায় ভবিষ্যতের শিক্ষা
এই ঘটনা একটি বড় শিক্ষা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনই প্রতারণার বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে উদগ্রীব। তাছাড়া, সহপাঠীদের কাছে সতর্কতা বার্তা পাঠানো জরুরি, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এই ধরনের ধোঁকার শিকার না হন।
এটি এমন একটি ঘটনা, যা শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষতি নয়, পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এই ধরনের প্রতারণা ভবিষ্যতে যাতে না ঘটে, সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আরও সচেতন এবং তৎপর হতে হবে।
মো: রাজিব আলী/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- বাংলাদেশে ১৮ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট, ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপার মূল্য তালিকা
- দেশের বাজারে ইতিহাস গড়ে কমলো সোনার দাম, জেনেনিন বাজার মূল্য
- সিলেটে ক্রিকেট মাঠে শোকের ছায়া: বিসিবি কর্মকর্তার অকাল মৃত্যু
- অভিনেতা সিদ্দিককে পিটিয়ে পুলিশে দিল ছাত্রদল কর্মীরা
- ৬ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঘোষণা, কারা কত শতাংশ দিচ্ছে
- বাংলাদেশ স্কোয়াডে দুই পরিবর্তন, আসছে এক চেনা মুখ ও এক নতুন নাম
- বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করলেন হাসানত আব্দুল্লাহ
- মার্জিন রুলস ১৯৯৯-এ বড় পরিবর্তন: পুঁজিবাজারের নতুন দিগন্ত
- ১১ কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ: কার লাভ, কার ক্ষতি?
- শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল বিএসইসি
- বাঁচাও শেয়ারবাজার’: বিনিয়োগকারীদের গর্জনে কাঁপলো মতিঝিল
- বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার মারা গেছেন
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ৭ কোম্পানির নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা
- রিয়াল বনাম বার্সা ফাইনাল: কখন, কোথায়, কিভাবে দেখবেন আজ রাতে
- শ্রীলঙ্কার ‘না’ বলে দেওয়া, ভারতের সেতু স্বপ্ন স্থগিত