ঢাকা, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

শেয়ারবাজারে নেগেটিভ ইক্যুইটি: উত্তরণের রোডম্যাপ চায় বিএসইসি

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ২২ ১৯:৩৬:০৬
শেয়ারবাজারে নেগেটিভ ইক্যুইটি: উত্তরণের রোডম্যাপ চায় বিএসইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারের আকাশে জমে থাকা কালো মেঘের নাম ‘নেগেটিভ ইক্যুইটি’। বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণের বিপরীতে অনাদায়ী ক্ষতির এই ছায়া এখন বাজারের অন্যতম বড় সংকটে পরিণত হয়েছে। এই অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরার পথ খুঁজছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা—বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সমস্যার সমাধানে এবার এক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তে বহু দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভরসা করছে বিএসইসি। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউজগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ আহ্বান জানিয়েছেন—প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান যেন নিজেদের বাস্তবতা অনুযায়ী পৃথক পরিকল্পনা জমা দেয়।

"সবার সমস্যা এক নয়, তাই সমাধানও একরকম হতে পারে না," বলেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।"কার কী ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেটা আপনারাই ভালো জানেন। তাই প্রতিষ্ঠানভিত্তিক সমাধানের খসড়া দিন। আমরা তা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করব।"

এই আহ্বান শুধু কাগজে-কলমে নয়—বরং একটি বাস্তব ও কার্যকর নীতিগত নির্দেশনার দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রথম ধাপ। বৈঠকে উপস্থিত প্রতিনিধিরা জানান, সাম্প্রতিক বাজার পরিস্থিতিতে অনেক বিনিয়োগকারী মার্জিন ঋণের চাপে বিপর্যস্ত। ফলে তাদের ইক্যুইটি নেতিবাচক ঘরেই অবস্থান করছে, যা ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ এবং আস্থা—উভয়কেই বাধাগ্রস্ত করছে।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, নেগেটিভ ইক্যুইটি শুধু সংখ্যার হিসাব নয়, এটি বিনিয়োগকারীদের মনোবল ও বাজারের তারল্যের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। আর সেই প্রভাব কাটিয়ে উঠতে হলে চাই সুসংহত ও বাস্তবসম্মত সমাধান—যা এক ছাঁচে ফেলা সম্ভব নয়।

এই কারণেই বিএসইসির এ সিদ্ধান্তকে অনেকেই বলছেন ‘মলম নয়, অপারেশন’ ধরনের পদক্ষেপ।বাজারসংশ্লিষ্টদের মতে, যদি প্রতিষ্ঠানগুলো আন্তরিকভাবে সমস্যা চিহ্নিত করে পরিকল্পনা দেয় এবং কমিশন তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করে—তাহলে ঘুরে দাঁড়ানো খুব একটা দূরের বিষয় হবে না।

একাধিক ব্রোকারেজ হাউজের প্রতিনিধিরা বৈঠকে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “আমরা চাই বাজারে আস্থা ফিরে আসুক, বিনিয়োগকারী রক্ষা পাক। এ ধরনের খোলামেলা আলোচনা ও অংশীদারিত্বই পারে সেই আস্থার ভিত্তি গড়ে তুলতে।”

নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন উদার ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপে আশার আলো দেখছেন বিনিয়োগকারীরাও। তবে আগামী দিনগুলোতে এই পরিকল্পনাগুলো বাস্তবতার পরীক্ষায় কতটা টেকে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

রাজিব/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ