ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

রাতে বিদায় নিলো রোনালদো, সকালে বিদায় মেসির

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মে ০১ ১০:১৯:৫৩
রাতে বিদায় নিলো রোনালদো, সকালে বিদায় মেসির

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফুটবল বিশ্বে এমন দিন খুব কমই আসে—যেদিন দু’জন যুগপ্রতিম নায়ক একসঙ্গে পরাজয়ের ভার কাঁধে নিয়ে নীরবে নেমে যান আলোর মঞ্চ থেকে। ১ মে, ২০২৫—এই দিনটিই ইতিহাসে লেখা থাকবে ‘নক্ষত্রপতনের’ দিন হিসেবে। রাতে হতাশ রোনালদো, আর সকালে কষ্টবিদ্ধ মেসি; যেন একই গল্পের দুই অধ্যায়, একসঙ্গে লেখা এক করুণ সমাপ্তির খেলা।

রাতটা শুরু হয়েছিল জেদ্দার কিং আবদুল্লাহ স্পোর্টস সিটির সবুজ মাঠে। এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল। মুখোমুখি সৌদি ক্লাব আল নাসর ও জাপানের কাওয়াসাকি ফ্রন্তেল। বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৩০ মিনিটে যখন ম্যাচ শেষ হয়, তখন স্কোরবোর্ডে লেখা ৩–২। কাওয়াসাকির জয়। আর মাঠের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে একা রোনালদো—চোখে ক্লান্তি, মুখে বিষণ্নতা, আকাশের দিকে একবার তাকিয়ে নিঃশব্দে যেন নিজের ভাগ্যকে প্রশ্ন করলেন।

৪০ বছর বয়সে এসেও রোনালদোর হৃদয়ে প্রতিযোগিতার আগুন। কিন্তু সেই আগুনে এ রাতে আশার আলো জ্বলেনি। ৯৫ মিনিটে সহজ এক গোলের সুযোগ হাতছাড়া করলেন, একা পেয়েছিলেন কাওয়াসাকির গোলরক্ষককে, কিন্তু বল জাল ছুঁতে পারল না। শেষ বাঁশির পর অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড খুলে যখন মাঠ ছাড়ছিলেন, তখন মনে হচ্ছিল—দীর্ঘ যাত্রাপথ পেরিয়ে আসা এক সেনানায়ক নিজের পরাজয়কে মেনে নেওয়ার চরম যন্ত্রণায় ভুগছেন।

এমন বিদায়ের পরও তিনি ভেঙে পড়েননি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ লিখলেন, “স্বপ্ন কখনো কখনো অপেক্ষা করতে বলে। আমি এই দল এবং পারফরম্যান্স নিয়ে গর্বিত।” কথাগুলো নিঃসন্দেহে হার না মানা মনোবলের প্রতিচ্ছবি।

রাত পার হতেই এলো ভোর। যারা রোনালদোর দুঃখ নিয়েই ঘুমাতে গিয়েছিলেন, তারা ভোর ৬টা ৩০ মিনিটে জেগে উঠলেন আরেকটি নক্ষত্রের জন্য—লিওনেল মেসি। কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে মেসির ইন্টার মায়ামি খেলছিল ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসের বিপক্ষে। প্রথম লেগে ২–০ গোলে পিছিয়ে থাকা মায়ামি ম্যাচের ৯ মিনিটে আশার আলো জ্বালিয়েছিল। মেসির পাস, সুয়ারেজের পায়ে এবং শেষে জর্দি আলবার গোলে এগিয়ে গিয়েছিল দলটি।

কিন্তু ভাগ্য সঙ্গ দিল না। বিরতির পরই তিন গোল করে ম্যাচ উল্টে দেয় কানাডিয়ান ক্লাবটি। মেসি পেয়েছিলেন বেশ কয়েকটি সুযোগ, তবে কোনোটা সফল হয়নি। পরিসংখ্যান বলছে, ভ্যাঙ্কুভারই প্রথম দল যারা মেসির বিপক্ষে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচেই জয় পেল।

শেষ বাঁশির পর মেসির মুখেও ফুটে ওঠে চিরচেনা সেই হার মানা কষ্ট। ৩৮ বছর বয়সেও তাঁর চোখে যেন সেই কৈশোরের ছায়া, যেখানে হার মানে অন্তরের গভীরে জমে থাকা অপ্রাপ্তির জ্বালা।

এই দিনে, ফুটবল যেন তার সবচেয়ে নির্মম রূপটি তুলে ধরল। রোনালদো ও মেসি—দুই মহাতারকা, দুই যোদ্ধা, দুই স্বপ্নবাজ হার মানলেন একই সূর্যোদয়ের নিচে। কিন্তু এ হার কি তাদের ক্ষয়? নাকি আরও একবার ঘুরে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি?

ফুটবল ইতিহাস বলছে, তারা যতবার হারিয়েছেন, ততবারই ফিরেছেন। হয়তো এবারও ফিরবেন। তবে ১ মে, ২০২৫—এই দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে ফুটবলপ্রেমীদের কাছে, একটি যুগের নীরব কান্নার প্রতিধ্বনি হিসেবে।

আজকের আকাশটা তাই একটু বেশি খালি মনে হয়—দুটি তারা নিভে গেছে বলে।

মোঃ রাজিব/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এক নজরে ৬৩ কোম্পনির ইপিএস: কার লাভ, কার লোকসান

এক নজরে ৬৩ কোম্পনির ইপিএস: কার লাভ, কার লোকসান

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৬৩টি কোম্পানি সম্প্রতি তাদের প্রথম এবং তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনগুলোতে কোম্পানিগুলোর... বিস্তারিত