ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

বাংলাদেশের পাল্টা পদক্ষেপে ভারতের বাণিজ্যিক সংকট

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মে ০১ ১৬:৫৭:৪৭
বাংলাদেশের পাল্টা পদক্ষেপে ভারতের বাণিজ্যিক সংকট

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কৌশলগত পদক্ষেপ ভারতের বাণিজ্যিক বাজারে এক নজিরবিহীন বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। ভারত, যা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশকে উপেক্ষা করে আসছিল, এখন নিজ দেশের অর্থনীতি এবং আঞ্চলিক নেতৃত্বের জন্য বড় ধরনের সংকটে পড়েছে। এই সংকটের শুরু হয়েছিল ভারতের হঠাৎ ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষকদের জন্য ছিল এক বিস্ময়।

ভারতের দাবি ছিল, তাদের বন্দরে অতিরিক্ত চাপের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে বাস্তবতা বলছে, বাংলাদেশের পণ্য আমদানি এতটা কম ছিল যে ভারতের অবকাঠামোতে কোনো অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করার মতো পরিস্থিতি ছিল না। প্রকৃতপক্ষে, এটি ছিল ভারতের পুরনো ঔপনিবেশিক মানসিকতার প্রকাশ—বাংলাদেশকে চাপ দিয়ে নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখার একটি প্রচেষ্টা। কিন্তু ভারত হিসাব ভুল করেছিল।

বাংলাদেশ এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে নিজেদের কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তারা বিশেষভাবে ভারতের সুতা রপ্তানি, যা বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা বন্ধ করে দিয়েছে। মোদি সরকারের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে ধাক্কা দেওয়া, কিন্তু বাস্তবে তারা নিজের বাজারেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই পাল্টা আঘাত ভারতকে এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে যে, তাদের অর্থনীতি এবং অহংকার উভয়ই চূর্ণবিচূর্ণ হয়েছে।

বাংলাদেশের এই পদক্ষেপ ভারতের অর্থনীতি, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি এবং চেন্নাইয়ের হাসপাতাল, হোটেল এবং পর্যটন শিল্পে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। কলকাতার ব্যবসায়ীরা এখন সরাসরি ভারতের কূটনীতির ব্যর্থতার জন্য সমালোচনা করছেন। ভারতের হাসপাতালগুলোতে রোগী সংকট দেখা দিয়েছে, এবং চেন্নাইয়ের মেডিকেল সেক্টর এখন বাংলাদেশী রোগীদের ফিরিয়ে আনতে নানা প্রস্তাব দিচ্ছে। তবে বাংলাদেশি জনগণ বুঝে গেছে, যেখানে সম্মান নেই, সেখানে টাকা খরচ করা অর্থহীন।

এদিকে, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মঞ্চে তার অবস্থান আরো দৃঢ় করতে কাজ শুরু করেছে। আরসিইপি (Regional Comprehensive Economic Partnership) জোটে যোগ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে যে, তারা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নির্ভরতাকে কমিয়ে বৈশ্বিক শক্তির সাথে কাঁধ মিলাতে চায়। চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোর সাথে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ নতুন অর্থনৈতিক বাজারে প্রবেশ করতে চায়। এই পদক্ষেপ ভারতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে, কারণ বাংলাদেশ এইভাবে ভারতের একচেটিয়া বাজারের উপর নির্ভরতা কমিয়ে নতুন ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে।

বাংলাদেশের কৌশল ছিল অত্যন্ত পরিকল্পিত এবং কার্যকর। তারা কোনো রকম আলোচনার বদলে সরাসরি কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে ভারতের অর্থনীতিতে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। বিশেষত, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো যেমন আসাম, মেঘালয় এবং ত্রিপুরায় ব্যবসায়িক কার্যক্রমে বিপর্যয় এসেছে, কারণ বাংলাদেশের উপর দিয়ে সরবরাহ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পণ্যের পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে।

বাংলাদেশের এই পদক্ষেপ ভারতের আঞ্চলিক নেতৃত্বের দাবি প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। ভারত এতদিন দাবি করত যে তারা দক্ষিণ এশিয়ার নেতা, কিন্তু বাংলাদেশের দৃঢ় মনোভাব এখন দেখিয়ে দিয়েছে, আঞ্চলিক নেতৃত্বের জন্য সম্মান, সহযোগিতা এবং পারস্পরিক স্বীকৃতি অপরিহার্য।

এছাড়া, বাংলাদেশের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক কূটনীতি এখন আরও শক্তিশালী হয়েছে। আরসিইপি জোটে যোগ দিলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনেক বেড়ে যাবে, এবং ভারত থেকে তাদের নির্ভরশীলতা সম্পূর্ণরূপে কমে যাবে। চীনের সহায়তায়, বাংলাদেশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যে নতুন বাজার খুঁজে বের করছে, যা ভারতের জন্য এক নতুন দুঃস্বপ্ন তৈরি করেছে।

বাংলাদেশের এই পদক্ষেপ ভারতের ভুল ধারণাকে উল্টে দিয়ে তাদের নিজেদের বাজারে চরম বিপর্যয় নিয়ে এসেছে। ভারতের ভেতরের বিশ্লেষকরা এখন বুঝতে পারছেন, বাংলাদেশের এই কৌশল তাদের অর্থনীতি ও কূটনীতির জন্য এক বিপর্যয় তৈরি করেছে। ভবিষ্যতে, বাংলাদেশ আরও আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে তার শক্তি প্রতিষ্ঠিত করবে, যেখানে ভারত এবং অন্য কোনো দেশ আর বাংলাদেশকে অবহেলা করতে পারবে না।

আল-আমিন ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এক নজরে ৬৩ কোম্পনির ইপিএস: কার লাভ, কার লোকসান

এক নজরে ৬৩ কোম্পনির ইপিএস: কার লাভ, কার লোকসান

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৬৩টি কোম্পানি সম্প্রতি তাদের প্রথম এবং তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনগুলোতে কোম্পানিগুলোর... বিস্তারিত