শেয়ারবাজারে ভয়াবহ সংকট, প্রতিদিনই হারাচ্ছে পুঁজি

নিজস্ব প্রতিবেদক: এপ্রিল মাস শেয়ারবাজারের জন্য ছিল চরম হতাশার। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মাসজুড়ে সূচক পড়েছে ৩০২ পয়েন্ট, হারিয়েছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার পুঁজি। ১৮ কার্যদিবসের মধ্যে ১৫ দিনই সূচকের পতন হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তীব্র আস্থার সংকট তৈরি করেছে।
মাসের শুরুতে ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল ৫,২১৯ পয়েন্টে, কিন্তু মাস শেষে তা নেমে আসে ৪,৯১৭ পয়েন্টে। শুধু প্রধান সূচক নয়, শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস কমেছে ৭৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ কোম্পানিগুলোর সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৯২ পয়েন্ট।
সিডিবিএলের তথ্য বলছে, এপ্রিল মাসে ১১ হাজার ৪২৯ জন বিনিয়োগকারী তাদের বিও (Beneficiary Owner) অ্যাকাউন্টে থাকা সমস্ত অর্থ তুলে নিয়েছেন। বর্তমানে জিরো ব্যালেন্স বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৩ লাখ ৮০ হাজার ছাড়িয়েছে। চালু থাকা অ্যাকাউন্টের সংখ্যা এক মাসেই কমেছে ১০ হাজারের বেশি।
বিনিয়োগকারীদের অনেকেই বলছেন, ভালো কোম্পানির শেয়ারেও এখন বড় ধরনের পতন হচ্ছে। পাঁচ বছর ধরে বাজারে থাকা বিনিয়োগকারী তারেক হোসেন বলেন, “কমিশন সবসময় বলত, ভালো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করলে লোকসান হবে না। কিন্তু এখন তো সেই শেয়ারগুলোই ১০০ টাকা থেকে ৩০-৪০ টাকায় নেমে এসেছে। এর কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে না।”
আরেক বিনিয়োগকারী মনসুর আলী জানান, “মার্জিন ঋণ সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে। এই ঋণ নিয়ে শেয়ার কিনেছিলাম, আর এখন ফোর্স সেলের কারণে ভালো শেয়ারগুলোও বিক্রি হয়ে গেছে।”
শেয়ারবাজার সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্সের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মার্জিন ঋণ এখন বাজারের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। টাস্কফোর্স কমিশনের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে—মার্জিন ঋণের সীমা সর্বোচ্চ ১০ কোটি ও সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, বিনিয়োগ ছাড়া কেউ এই ঋণ না পায় সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে।
তারা আরও সুপারিশ করেছে, লক-ইন শেয়ার, উদ্যোক্তা শেয়ার, প্লেসমেন্ট, অতালিকাভুক্ত কোম্পানি, বন্ড, ডিবেঞ্চার ও মিউচুয়াল ফান্ডে মার্জিন ঋণের অর্থ ব্যবহার না করতে।
আরও পড়ুন:
তিন ব্যাংকের ডিভিডেন্ড অপরিবর্তিত, বিনিয়োগকারীদের জন্য স্থিতিশীলতা
ডিভিডেন্ড কমালো ৪ ব্যাংক, বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্ক সংকেত
সাত ব্যাংকের ডিভিডেন্ডে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি, বিনিয়োগকারীদের মুখে হাসি
ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান আবু আহমেদ মনে করেন, “দেশের বড় বড় বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনতে পারলে বিনিয়োগকারীরা আস্থা ফিরে পাবে।” তবে বিএসইসির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরে বড় কোনো আইপিও আসার সম্ভাবনা নেই। এতে করে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে এমন আশা কমে যাচ্ছে।
এছাড়া সম্প্রতি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) অভ্যন্তরীণ গোলযোগ এবং ২১ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার ঘটনাও বাজারে নেতিবাচক বার্তা দিয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বর্তমানে বাজারের সবচেয়ে বড় সংকট হলো আস্থাহীনতা। বিনিয়োগকারীরা প্রতিদিন আশাভঙ্গের শিকার হচ্ছেন, নতুন করে কেউ পুঁজি আনছেন না, বরং পুরোনো বিনিয়োগকারীরাও অর্থ তুলে নিচ্ছেন। এখনই যদি সঠিক সিদ্ধান্ত ও শক্তিশালী সংস্কার না আসে, তবে এই সংকট আরও দীর্ঘায়িত হবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আল-আমিন ইসলাম/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- বাংলাদেশে১৮, ২১ ও২২ ক্যারেট সোনার আজকের বাজার মূল্য
- আজ বাংলাদেশের বাজারে১৮ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট ও ২২ ক্যারেট সোনার দাম
- ৬৯০ টাকায় সাড়ে ১২ কেজির এলপি গ্যাস, কেন পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ?
- আজ বাংলাদেশের বাজারে ১৮, ২১ ও ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপার মূল্য তালিকা
- জ্বালানি তেলে সুখবর: মে মাসে কমলো ডিজেল ও পেট্রোলের দাম
- ৯ দিনে সোনার দাম কমলো ২৯০ ডলার
- অভিনেতা সিদ্দিককে পিটিয়ে পুলিশে দিল ছাত্রদল কর্মীরা
- বাংলাদেশে আজকের সোনার দাম ও রুপার বাজার মূল্য
- ৪১ কোম্পানির ইপিএস প্রকাশ: লাভবান ও ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানির তালিকা
- ৬ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঘোষণা, কারা কত শতাংশ দিচ্ছে
- ১৬ কোম্পানির ইপিএস প্রকাশ: কার আয় বাড়ল, কে পড়ল লোকসানে
- আজকের সৌদি রিয়াল রেট (২৮ এপ্রিল ২০২৫)
- সকালে ভেজানো কিসমিস খাওয়ার চমকপ্রদ ৭টি উপকার
- বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করলেন হাসানত আব্দুল্লাহ
- আরব আমিরাতে ২০২৫ ঈদুল আজহার ছুটি ঘোষণা