ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আমি টেস্ট ভালোবাসি তাই নিজেকে প্রমাণে মুখিয়ে: এনামুল

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২২ জুন ২৩ ১৪:১২:৫৯
আমি টেস্ট ভালোবাসি তাই নিজেকে প্রমাণে মুখিয়ে: এনামুল

এই মৌসুমের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে রানের বন্য বইয়ে দিয়ে লম্বা সময় পর জাতীয় দলে ফেরেন এনামুল। সুযোগ পান ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের বাংলাদেশ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলে। পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজে ইয়াসির আলি চৌধুরি চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ায় টেস্ট দলেও যুক্ত করা হয় এনামুলকে।

শুধু স্কোয়াডে ফেরাই নয়, নাটকীয় কিছু না হলে শুক্রবার শুরু হতে যাওয়া সেন্ট লুসিয়া টেস্ট দিয়ে মাঠের ক্রিকেটেও ফিরতে যাচ্ছেন ২৯ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। ক্যারিয়ারের চার টেস্টের সবশেষটি তিনি খেলেছিলেন ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে, এই সেন্ট লুসিয়াতেই! তখন স্টেডিয়ামের নাম ছিল বোশেজো স্টেডিয়াম। এখন নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দেওয়া সেন্ট লুসিয়ার সন্তান ড্যারেন স্যামির নামে।

লম্বা সময় পর টেস্ট খেলার সামনে দাঁড়িয়ে স্বাভাবিকভাবেই রোমাঞ্চিত এনামুল। বিসিবির ভিডিও বার্তায় বললেন, সুযোগটি হারাতে চান না হেলায়।

“এটা সত্যি যে আমি সাদা বলের ক্রিকেটে ডাক পেয়েছিলাম এবং সাদা বলে অনুশীলন করছিলাম। তবে মাথার ভেতর সবসময়… আগেও অনেকবার বলেছি এবং নিজে বিশ্বাস করি, টেস্ট ক্রিকেট অনেক বেশি ভালোবাসি। এটা আমার মধ্যে অনেক বেশি তীব্রভাবে কাজ করে। যখন সুযোগ পাব, অবশ্যই লুফে নেওয়ার চেষ্টা করব।”

“৮ বছর পর টেস্টে ডাক পেয়েছি, আমার জন্য এটা বড় সুযোগ। আমি যে আসলেই টেস্ট পছন্দ করি, তা দেখানোর বড় সুযোগ এটি। আমি অবশ্যই রোমাঞ্চিত। প্রক্রিয়াটা অনুসরণ করব, যেভাবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট এতদিন ধরে অনুসরণ করে আসছি। নতুন করে কিছু বদলাতে চাই না। যেভাবে এতদিন খেলেছি মন দিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে, সেটাই চেষ্টা করব দেশের জন্য করার।”

বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেট যে তার পছন্দ, তা অবশ্য প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তিনি দেখিয়েছেন। ১০৫ ম্যাচ খেলে ২২ সেঞ্চুরি তার। বাংলাদেশের বাস্তবতায় সেঞ্চুরির এই হার অসাধারণ। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৪৫.৩২ গড়ে তার রান ৪ হাজার ৪৭৯।

তবে মজার ব্যাপার হলো, এমন এক সময়ে তিনি টেস্ট দলে ডাক পেলেন, যখন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এক যুগের মধ্যে তার সবচেয়ে বাজে মৌসুম কেটেছে। গত ১২ বছরে এই প্রথমবার লাল বলের ক্রিকেটে গোটা মৌসুমে সেঞ্চুরি করতে পারেননি ১৫ ইনিংস খেলে ৩৯৬ রান করেছেন স্রেফ ২৮.২৮ গড়ে।২০১৪ সালে সবশেষ টেস্ট খেলার পর এবারের আগে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে কোনো মৌসুমেই তার গড় ৩৭-এর নিচে নামেনি। ক্যারিয়ারের ২২ সেঞ্চুরির ১৪টিই করেছেন এই সময়ে।

তবে টেস্টের প্রতি ভালোবাসাই এনামুলের জন্য জ্বালানি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা তার কাছে প্রেরণার উৎস।

“এটাই আমার সাহস, এটাই শক্তি। আমি মনে করি যে এটা আমাকে বাড়তি সাহস জোগায়, মনের কোণে থাকে, নিজেকে একটা জায়গায় নিয়ে গেছি যে এই জিনিসগুলো দেখলে আমার বাড়তি প্রেরণা বলুন বা আত্মবিশ্বাস, আসে এটা। অবশ্যই এটা আমাকে সাহায্য করবে।”

“আমার জন্য এটা বড় অভিজ্ঞতা যে এতদিন ধরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছি। প্রতিটি ক্রিকেটারের স্বপ্ন থাকে যে সে অভিজ্ঞ হবে এবং অভিজ্ঞতা কাজে লাগাবে। আমিও আশাবাদী যে অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে এবং দেশের হয়ে অবদান রাখতে পারব।”

এনামুলকে টেস্টে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে মূলত টপ অর্ডারের দুর্বলতা ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা হিসেবে। ওপেনিংয়ে তরুণ মাহমুদুল হাসান জয় অধরাবাহিক এবং এখনও নবীন। তিন ও চারে নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ।

ব্যাটিং অর্ডারে এনামুলকে হয়তো দেখা যেতে পারে তিন নম্বরে। সুযোগ পেলে নিজের লক্ষ্যও তিনি ঠিক করে রেখেছেন।

“আমি যদি সুযোগ পাই, নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব, যেন বাংলাদেশ দলকে ভালো একটা সংগ্রহ দিতে পারি স্কোরবোর্ডে। দ্রুত উইকেট পড়ে যাওয়াটা থামানো থেকে শুরু করে রানটাকে এগিয়ে নেওয়া, ওই জায়গাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য।”

সবশেষ যখন বাংলাদেশের ড্রেসিং রুমে ছিলেন এনামুল, তখন থেকে এখন পরিবর্তন অনেক। বদলে গেছে অধিনায়ক, কোচিং স্টাফ, দলের আবহ থেকে শুরু করে অনেক কিছুই। তিনি নিজে এই দলের আবহ দারুণ পছন্দ করছেন বলেই জানালেন।

“খুবই ভালো লাগছে। এবার এসে আনন্দ পেয়েছি। আমার বয়সী যারা বা আমার জুনিয়র ও সিনিয়র, সবাই খুব ভালোভাবে স্বাগত জানিয়েছে। দল হিসেবেও মনে হচ্ছে আমরা ভালো অবস্থানে আছি।”

“অবশ্যই হয়তো ফলাফল আমাদের পক্ষে আসেনি, আসছে না কিছুদিন হলো। তবে আমি মনে করি, এই দল বাংলাদেশকে অনেক দূর নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে এবং আশাও করি তা। আমি চাইব, সবসময় এই দলের অংশ হয়ে থাকতে।”

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে