ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

এইমাত্র শেষ হলো ইংল্যান্ড বনাম ভারতের খেলা, দেখেনিন ফলাফল

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২২ জুলাই ০৫ ১৮:৪০:২৩
এইমাত্র শেষ হলো ইংল্যান্ড বনাম ভারতের খেলা, দেখেনিন ফলাফল

জো রুট আর জনি বেয়ারেস্টোর ব্যাটে শেষ পর্যন্ত ইতিহাসটা গড়েই ফেললো ইংল্যান্ড। বার্মিংহ্যামের এজবাস্টনে ৩৭৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ঠিকই ইংল্যান্ডকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়েছেন এই দুই ব্যাটার। দু’জনই করেছেন সেঞ্চুরি। জনি বেয়ারেস্টো তো অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করে যাচ্ছেন। তিন টেস্টে এটা তার চতুর্থ সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ারে ২৮তম সেঞ্চুরির দেখা পেয়ছেন জো রুট।

বিনা উইকেটে ১০৭ রান থেকে ১০৯ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে বসেছিল ইংল্যান্ড। চতুর্থ দিন বিকেলেই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে ফেলতে পারতো ভারতীয় বোলাররা। কিন্তু উল্টো সবাইকে চমকে দিয়ে ভাগ্যটা গড়ে নিয়েছিলেন জো রুট আর জনি বেয়ারেস্টো। ১৫০ রানের জুটি গড়ে অবিচ্ছিন্ন থাকেন তারা দু’জন।

পঞ্চম দিন সকালে ব্যাট করতে নেমে জসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ শামি, মোহাম্মদ সিরাজ কিংবা শার্দুল ঠাকুরদের বেশ কিছু দুর্দান্ত ডেলিভারির মুখোমুখি হতে হয়েছিল রুট-বেয়ারেস্টোকে। কিন্তু তারা ছিলেন অবিচল। লক্ষ্য পূরণ না করে কেউ বিচ্ছিন্ন না হওয়ার পণ করেই যেন মাঠে নেমেছিলেন তারা।

শেষ পর্যন্ত ভারতের তুমুল প্রতাপশালী পেস আক্রমণ ছিড় ধরাতে পারেনি রুট-বেয়ারেস্টোর জুটিতে। ২৬৯ রানের জুটিতে অবিচ্ছিন্ন থেকে ইংল্যান্ডকে ঐতিহাসিক জয়টি এনে দিলেন এই দুই ব্যাটার। ১৪৫ বলে ১১৪ রান করে বেয়ারেস্টো এবং ১৭৩ বলে ১৪২ রানে অপরাজিত থাকেন জো রুট।

অবিশ্বাস্য এই জয়ের সঙ্গে সিরিজও ২-২ ব্যবধানে ড্র করলো ইংলিশরা। গত বছর (২০২১ সালে) আইপিএলের দ্বিতীয় ভাগ আরব আমিরাতে শুরুর আগে ইংল্যান্ডে ৫ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের চারটি খেলেছিল ভারত। তাতে ২-১ ব্যবধানে এগিয়েই ছিল তখনকার বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন দলটি।

এজবাস্টন টেস্টের আগে করোনার অজুহাতে ম্যাচটিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে দেয়া হয়। এ সুযোগে ভারতীয় ক্রিকেটাররা এসে যোগ দেয় আইপিএলে নিজ নিজ ফ্রাঞ্চাইজির ক্যাম্পে। বাকি থাকা সেই টেস্ট ম্যাচটিই এবার ইংল্যান্ডের এজবাস্টনে গিয়ে খেললো ভারতীয়রা। কোহলির পর হাত বদল হতে হতে নেতৃত্বের ব্যাটন এখন জসপ্রিত বুমরাহর বাহুতেই বাধা।

টেস্টে ইংল্যান্ডের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড এটি। এর আগে ২০১৯ সালে হেডিংলিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৫৮ তাড়া করে ৯ উইকেটে ৩৬২ তুলে জিতেছিল ইংল্যান্ড। সেটিই ছিল এতদিন তাদের ইতিহাসসেরা।

৭৪ বছরের মধ্যে ইংল্যান্ডের মাটিতে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড। ১৯৪৮ সালে হেডিংলিতে ৪০৪ তাড়া করে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। এটি এখন পর্যন্ত ইংল্যান্ডের মাটিতে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড।

সব মিলিয়ে এটি টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে অষ্টম সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড। ২০০৩ সালে অ্যান্টিগায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪১৮ রান তাড়া করে জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওটাই এখনও পর্যন্ত টেস্টে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড।

অথচ, এই টেস্ট ম্যাচটি নিশ্চিত জিতেই যাচ্ছিল জসপ্রিত বুমরাহর ভারত। প্রথম ইনিংসে রিশাভ পান্ত (১৪৫) এবং রবিন্দ্র জাদেজার (১০৪) দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে ৪১৬ রানের ইনিংস গড়েছিল ভারত। জবাব দিতে নেমে ইংল্যান্ড পড়ে যায় দারুণ বিপদে। একের পর এক উইকেট পড়তে থাকে ভারতীয় পেসারদের আগুনে বোলিংয়ের সামনে।

কিন্তু ইংলিশদের ত্রাতা হয়ে আবির্ভূত হন জনি বেয়ারেস্টো। তার ১০৬ রানের ওপর ভর করে ইংল্যান্ড সংগ্রহ পায় ২৮৪ রানের। ১৩২ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে ভারত। চেতেশ্বর পুজারা (৬৬) আর রিশাভ পান্তের ব্যাটে (৫৭) ভর করে ২৪৫ রান তুলতে সক্ষম হয় সফরকারীরা।

সব মিলিয়ে ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে জয়ের জন্য ৩৭৮ রানের লক্ষ্য পায় ইংল্যান্ড। রীতিমত বিশাল লক্ষ্য। এতবড় রান তাড়াও করতে নামার আগে প্রতিটি দলেরই পিলে চমকে যাওয়ার কথা। কিন্তু ইংলিশরা যেন পণ করেই নামে, লক্ষ্য যত বড়ই হোক, তারা তাড়া করবেই।

দুই ওপেনার অ্যালেক্স লিস এবং জ্যাক ক্রাউলি মিলে সূচনাটা করেন দুর্দান্ত। ১০৭ রানের জুটি গড়ে বিচ্ছিন্ন হন তারা দু’জন। ক্রাউলি করেন ৪৬ রান। অ্যালেক্স লিস আউট হন ৫৬ রান করে। অলি পোপ কেবল কোনো রান করতে পারেননি। এরপরের গল্প তো সবারই জানা। বেয়ারেস্টো আর জো রুটের ব্যাটে ঠিকই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ইংল্যান্ড।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ভারত: ১ম ইনিংস ৪১৬ ও ২য় ইনিংস ২৪৫/১০, ৮১.৫ ওভার ৮১.৫ (চেতেশ্বর পুজারা ৬৬, রিশাভ পান্ত ৫৭, জাদেজা ২৩, কোহলি ২০)।

ইংল্যান্ড: ১ম ইনিংস ২৮৪ ও ২য় ইনিংস ৩৭৮/৩, ৭৬.৪ ওভার (জো রুট ১৪২*, জনি বেয়ারেস্টো ১১৪, অ্যালেক্স লিস ৫৬, জ্যাক ক্রাউলি ৪৬)।

ফল: ইংল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: জনি বেয়ারেস্টো।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে