ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অবিশ্বাস্যভাবে শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ে মধ্যকার ৬১০ রানের ম্যাচ, দেখেনিন ফলাফল

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২২ আগস্ট ০৫ ২১:২১:০২
অবিশ্বাস্যভাবে শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ে মধ্যকার ৬১০ রানের ম্যাচ, দেখেনিন ফলাফল

সেঞ্চুরির পর দ্রুতই আউট হয়েছেন কাইয়া। মোসাদ্দেকের লেংথ ডেলিভারিতে স্লগ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে থাকা শরিফুলের হাতে ক্যাচ দেন ১১০ রানে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার। যদিও আগের বলেই ফিরতে পারতেন তিনি। মোসাদ্দেকের বল ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে বলের লাইন মিস করেছিলেন কাইয়া। তবে উইকেটকিপার এনামুল হক বিজয় স্টাম্পিং করতে না পারায় জীবন পান তিনি।

ম্যাচের লাগাম টেনে ধরতে বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হওয়ার বিকল্প ছিল না জিম্বাবুয়ের ব্যাটারদের। সুযোগ পেয়ে সেই কাজটা দারুণভাবে করেছেন কাইয়া ও রাজা। তাসকিনের বলে এক রান নিয়ে ১১৫ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি তুলে নেন কাইয়া। ডানহাতি এই ব্যাটারের পর সেঞ্চুরি পেয়েছেন রাজাও। সেই ওভারের শেষ বলে দুই রান নিয়ে ৮১ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি।

ব্যাটিং করার সময় পেশিতে টান লাগার কারণে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছেড়েছিলেন লিটন দাস। বিসিবি এখন পর্যন্ত কোনো বিবৃতি না দিলেও ক্রিকইনফো জানিয়েছে, ৪-৬ সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে যেতে পারেন লিটন।

হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে জয়ের জন্য ৩০৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। মুস্তাফিজুর রহমানের প্রথম ওভারের শেষ বলে বোল্ড আউট হন রেজিস চাকাভা। বাঁহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারিতে কভার দিয়ে খেলতে গিয়ে আউট হয়েছেন ৪ রান করা জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক।

চাকাভার পর দ্রুতই সাজঘরে ফেরেন তারিসাই মুসাকান্দা। শরিফুল ইসলামের লেংথ ডেলিভারিতে কভারে থাকা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৪ রান করা এই ওপেনার। এরপর দারুণভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ওয়েসলে মাধেভেরে এবং তিনাশে কাইতানো। পঞ্চাশ পেরোনোর পর তাদের জুটি ভাঙেন মেহেদি হাসান মিরাজ।

ডানহাতি এই অফ স্পিনারের বল ডাউন দ্য উইকেটে এসে ফ্লিক করে দুই রান নিয়ে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন মাধেভেরে। ডানহাতি এই ব্যাটার করেছেন ২৭ বলে ১৯ রান। মাধেভেরে ফেরার পর ৬৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন কাইয়া। হাফ সেঞ্চুরির পর সিকান্দার রাজার সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ে তোলেন তিনি। দারুণ ব্যাটিংয়ে হাফ সেঞ্চুরি পান রাজাও। ৫৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার।

হাফ সেঞ্চুরির পর দুজনই আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করতে থাকেন। ইনিংসের ৩৩তম ওভারে আঘাত পেয়ে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন শরিফুল।

এর আগে তামিম ইকবাল-লিটন দাসের একশো পেরোনো জুটির পর দারুণ ব্যাটিং করেছেন এনামুল হক বিজয়। সাড়ে সাত বছর পর ওয়ানডেতে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন এই ব্যাটার। তার এমন দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বড় রানের পথে হাটছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ ৫ ওভারে রোডেশিয়ান বোলারদের উপর চড়াও হতে পারেননি মুশফিকুর রহিম-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জুটি। শেষ ৩০ বলে ৩৯ রান যোগ করতে পেরেছেন তারা। শেষ পর্যন্ত ২ উইকেট হারিয়ে ৩০৩ রান করেছে বাংলাদেশ।

হারারে স্পোর্টস ক্লাবে ম্যাচের শুরুতে উইকেট থেকে ভালোই সুবিধা পেয়েছেন জিম্বাবুয়ের পেসাররা। কয়েক দফা দুই ওপেনারকে অস্বস্তিতে ফেললেও তামিম ইকবাল এবং লিটন দাসের সতর্ক ব্যাটিংয়ে সেই সুযোগ কাজে লাগানো হয়নি রোডেশিয়ানদের।

রিচার্ড এনগারাভা দিনের প্রথম বল থেকেই জায়গা বুঝে বোলিং করতে থাকেন। উদ্বোধনী স্পেলে তাকে সঙ্গ দেন ভিক্টর এনিউচি। তবে দেখেশুনে খেলে স্কোরবোর্ডে রান তুলতে থাকেন তামিম ও লিটন। দুজনে মিলে ৯.৪ ওভারের মধ্যে জুটির হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন। এই জুটিতে বেশীরভাগ রানই এসেছে তামিমের ব্যাটে।

লিটনের তুলনায় শুরু থেকে আগ্রাসী খেললেও হাফ সেঞ্চুরির আগে একটু বেশিই মন্থর হয়ে যায় তামিমের ব্যাট। তবে ঠিকমতোই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫৪তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনি। ৭৯ বলে আসে তামিমের হাফ সেঞ্চুরি।

এদিকে ম্যাচে নামার আগেই দারুণ এক মাইলফলকের সামনে ছিলেন তামিম। এই ম্যাচে ৫৭ রান পেলেই আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে ৮ হাজারি ক্লাবে প্রবেশের সুযোগ ছিল তার সামনে। সেই সুযোগ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন তামিম। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে এই এলিট ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন তিনি।

অধিনায়ক হাফ সেঞ্চুরি করার একটু পরই দলীয় শতক পূর্ণ করে বাংলাদেশ। ২৩.১ ওভারে শত রান আসে তাদের। হাফ সেঞ্চুরির পর টানা দুটি ওভারে দুটি চার মারেন তামিম। কিন্তু মাঝের সময়টায় অনেক বেশি ডট বল খেলে ফেলায় রান তোলার চাপে পড়ে যান তামিম। এই সুযোগে তামিমকে বিদায় করেন সিকান্দার রাজা। শর্ট থার্ড ম্যান অঞ্চলে কায়াকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তামিম। ৮৮ বলে ৯টি চারে ৬২ করেন তামিম।

শুরুটা রয়ে সয়ে করলেও সময়ের সাথে সাথে আরও পরিণত ব্যাটিং করতে শুরু করেন লিটন। দেখেশুনে খেলে ক্যারিয়ারের সপ্তম হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ডানহাতি এই ব্যাটার। হাফ সেঞ্চুরির পর ওয়েলিংটন মাসাকাদজার একই ওভারে টানা তিনটি চার হাঁকান তিনি।

সিকান্দার রাজার করা ইনিংসের ৩৪তম ওভারের প্রথম বল সফট হ্যান্ডে অন সাইডে খেলে এক রান নেন লিটন। রানিং শেষ করেই হ্যামস্টিংয়ের চোটে মাটিতে শুয়ে পড়েন তিনি। এ্ররপর স্ট্রেচারে করে মাঠের বাইরে নেয়া হয় এই ওপেনারকে। এখনও পর্যন্ত দলের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কিছু না জানালেও তার চোট গুরুত্বর হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

ওয়ানডেতে প্রায় ৭ বছর পর হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেলেন এনামুল হক বিজয়। আর ইনিংসের হিসেবে ১২ ইনিংস পর। ওয়ানডেতে বিজয় সর্বশেষ হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন মিরপুরে ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর। সেই ম্যাচেও প্রতিপক্ষ ছিল এই জিম্বাবুয়ে। হাফ সেঞ্চুরির পর আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন বিজয়। ব্যাক্তিগত ৭১ রানে নাগারাভার বলে জীবন পেয়েছেন এই ব্যাটার। এরপর আর বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে পারেননি তিনি। নাওচির বলে সাজঘরে ফেরার আগে ৬২ বলে ৭৩ রান করেছেন বিজয়।

বিজয়ের বিদায়ের পর বাকিটা সময় আর উইকেট হারাতে দেননি মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ জুটি। ইনিংসের শেষ ওভারে গিয়ে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন মুশফিক। আর মাহমুদউল্লাহ অপরাজতি ছিলেন ১২ বলে ২০ রান করে। শেষ পর্যন্ত ২ উইকেট হারিয়ে ৩০৩ রান করে টাইগাররা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

বাংলাদেশ- ৩০৩/২ (৫০ ওভার) (লিটন ৮১*, বিজয় ৭৩, তামিম ৬২, মুশফিক ৫২*)

জিম্বাবুয়ে- ৩০৭/৫ (৪৮.২ ওভার) (কাইয়া ১১০, মাধেভেরে ১৯, সিকান্দার ১৩৫*)

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে