ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বের হয়ে এলো বিপিএলের মানহীন হয়ে পড়ার আসল কারণগুলো

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৩ জানুয়ারি ২৫ ২০:১৮:৫৫
বের হয়ে এলো বিপিএলের মানহীন হয়ে পড়ার আসল কারণগুলো

তবে বর্তমানে একাধিক লীগ অনুষ্ঠিত হওয়ায় এক ধরনের খেলোয়াড় সংকটে ভুগতে হচ্ছে ফ্রাঞ্চাইজি দলগুলোর। বিপিএলসহ এখন বিশ্বজুড়ে চারটি ফ্রাঞ্চাইজি লিগ চলছে। অস্ট্রেলিয়াতে চলমান রয়েছে তাদের ফ্রাঞ্চাইজি লীগ বিগ ব্যাস, দক্ষিণ আফ্রিকাতে সিএসএ টি-টোয়েন্টি লিগের খেলা চলছে। এবং এশিয়ার সবচেয়ে ধনী দেশ আরব আমিরাতে চলছে তাদের নিজস্ব টি-টোয়েন্টি লিগ। বিগ ব্যাশ ছাড়া বাকি দুটি ফ্রাঞ্চাইজি লীগের প্রতিটি ফ্রাঞ্চাইজি আইপিএল ফ্রাঞ্চাইজি মালিকদের মালিকানায় রয়েছে। ফলে বিগ ব্যাশ-বিপিএলের চেয়েও বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করছে এই দুটি লীগ।

বিপিএল-বিগ ব্যাশের অনেক পরে শুরু হওয়া এইসব লীগে ইতিমধ্যে ডিআরএস সহ সব ধরনের আধুনিক প্রযুক্তির দেখা মিলেছে। অপরদিকে বিপিএল এবং বিগ ব্যাশে অনুপস্থিত ডিআরএস। দুটি লিগেই আম্পায়ারিং এর মান নিয়ে বিস্তর সমালোচনা উঠেছে।

এখন প্রশ্ন জাগতেই পারে সবগুলো লিগ একই সিডিউলে আয়োজন করার মানেটা কি? আয়োজকরা কি জানতেন না একই সময় অন্যান্য লীগগুলো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মূলত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যস্ত সিডিউল এবং আইপিএল এবং পিএসএলের সাথে সংঘর্ষ এড়ানোর জন্যই এই পদক্ষেপ। ২০২৩ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য অন্যতম ব্যস্ত বছর ফলে এই বছরে অন্য কোনো ফাকা জায়গা খালি ছিল না। এছাড়াও যে সময় খালি রয়েছে তাতে অনুষ্ঠিত হবে আইপিএল।

এছাড়া পিএসএলও অনুষ্ঠিত হবে। সব মিলিয়ে এসব কারণেই গাদাগাদি করে চারটি লীগ একসাথে আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয় আয়োজকরা। এতগুলো লীগ একসাথে আয়োজিত হলে স্বাভাবিকভাবেই তুলনা হওয়াটা প্রত্যাশিত। তবে তুলনা করতে গেলে বেশ হতাশ হতে হবে টাইগার সমর্থকদের। অন্যান্য লিগ গুলোর তুলনায় বিপিএল যে একপ্রকার প্রতিযোগিতারই বাহিরে।

বিসিবির পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল যে আইপিএলের পর বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা ফ্রাঞ্চাইজি লীগ বিপিএল। নিশ্চিতভাবেই বিসিবির এই বিবৃতিটি আবেগী প্রলাপ ছাড়া আর কিছুই ছিল না। মাঠের খেলাতেই অন্যান্য লীগগুলোর সাথে বিপিএলের পার্থক্য পরিষ্কার। বিশ্ব ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা সাকিব আল হাসানকে এইবারের আসর শুরু আর আগে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল বিশ্বের অন্যান্য ফ্রাঞ্চাইজি লীগ গুলোর প্রেক্ষাপটে বিপিএলের অবস্থান কোথায়।

সাকিব আল হাসানের সোজা উত্তর ছিল বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার হিসেবে বিপিএল প্রতিযোগিতারই বাহিরে। অথচ অন্যান্য লীগ গুলোর তুলনায় বিপিএলেরই এগিয়ে থাকার কথা ছিল। সারা বিশ্বে আইপিএলের পর শুরু হওয়া দ্বিতীয় ফ্রাঞ্চাইজি লীগটি ছিল বিপিএল। বিপিএলের অনেক পর বিগ ব্যাশ, পিএসএল, সিপিএল ইত্যাদি লীগগুলো অনুষ্ঠিত হয়।

সময়ের পালা বদলে এইসব লীগ গুলোই মানের দিক দিয়ে বিপিএলের চেয়ে ঢের এগিয়ে গিয়েছে। বিশ্বের নামিদামি সকল ক্রিকেটারদেরই উপস্থিতি দেখা যায় এসব লীগে। অপরদিকে নিজেদের দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটেই ঠিকমতো সুযোগ না পাওয়া বিভিন্ন ক্রিকেটার এখন বিদেশি কোটায় খেলতে আসে বিপিএলে। বিপিএলে ডাক পাওয়া অনেক বিদেশী ক্রিকেটারদের স্পোর্টস সাংবাদিকরাও অনেক সময় চিনতে ভুল করেন।

দূরদর্শিতার অভাব নাকি আন্তরিকতার তা বিসিবি ভালো বলতে পারবে, তবে বিপিএলের এভাবে মানহীন হয়ে পড়ার দায়টা এড়াতে পারবেনা দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি। ফ্রাঞ্চাইজিদের লম্বা সময়ের জন্য দল নিয়ে কাজ করতে না দেওয়া, ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়া এবং বিতর্ক ও ফিক্সিং জাতীয় কলঙ্কের সাথে বিপিএলের যুক্ত থাকা। ইত্যাদির কারণে অন্যান্য লীগ গুলোর তুলনায় সময়ের সাথে সাথে পিছিয়ে পড়েছে বিপিএল।

সিদ্ধান্তটা এখন বিসিবিরই নিতে হবে, তারা কি এভাবেই বিপিএলটি চালিয়ে যেতে চায়? তারা কি এ ধরনের নিম্নমানের বিপিএল দ্বারা সন্তুষ্ট? নাকি বিপিএলকে ওয়াল্ড ক্লাস স্ট্যান্ডার্ডে নেওয়ার ইচ্ছা তাদেরও রয়েছে। এইসব প্রশ্নের উত্তর পেতে অপেক্ষা করতে হবে পরবর্তী বিপিএল পর্যন্ত। আশা করা যাক পরবর্তী বিপিএলে কিছুটা হলেও উন্নতি চোখে পড়বে। কারণ এবারের বিপিএল যে অনুষ্ঠিত হয়েছে তা বোধ হয় দেশবাসী ছাড়া বিশ্বের অন্য কেউ জানেই না।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে