ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩, ১৪ চৈত্র ১৪২৯

"ট্রল" বর্তমান বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের জন্য একটা আতংকের নাম

২০২৩ ফেব্রুয়ারি ০১ ১১:১৯:০২

আরমান হোসেন:- একটা সময় ছিলো যখন বাংলাদেশে ফুটবল খেলা ছিলো খুবই জনপ্রিয়। জাতীয় দল হোক বা ক্লাব ফুটবল খেলা নিয়ে চলতো আলোচনা সমালোচনা। এক একটি খেলা নিয়ে মাঠ অথবা মাঠের বাইরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করতো। চায়ের কাপে উঠত ঝড়। কিন্তুু ফুটবলের মান কমে যাওয়া আর বাফুফের উদাসীনতায় ফুটবলের সেই গৌরব এখন সোনালী অতিত।

১৯৯৭ সালে চাম্পিয়নস ট্রফি জয়ের পর থেকেই ক্রিকেট ধীরে ধীরে ফুটবলের জায়গা দখল করতে শুরু করে। সময়ের সাথে সাথে বর্তমানে ক্রিকেটের ধারে কাছে আর কোনো খেলা নেই। এই খেলাটি এখন জাতির আবেগে পরিনত হয়েছে। দলের সাফল্যে যেমন আনন্দে ভেসে যান সবাই তেমনি দল খারাপ করলে তারা নিজের অভিমান হতাশা প্রকাশ করেন। এর জন্য অনেকেই বেছে নেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কে। এখানেই খেলোয়ার কিংবা দলকে নিয়ে বিভিন্ন রকম ট্রল করা হয়। সেটা নিছকই মজা করে অনেকেই করে থাকেন। কিন্তুু কখনো কখনো এটা হয়ে যায় অতিরিক্ত।

লিটন দাসের কথা মনে আছে তো। বছর তিনেক আগে লিটন যখন তার সুযোগ কাজে লাগাতে পারছিলেন না তখন তাকে নিয়ে চারদিক থেকে শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা। হয়েছে অনেক ট্রল।লিটন তার জবাব দিয়েছেন ব্যাট দিয়েই। গত তিন বছরে লিটনের ধারেকাছে নেই বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটার। নিজেকে নিয়ে গেছেন বিশ্ব সেরাদের কাতারে। লিটনের ব্যাটিং দেখা এখন চোখের শান্তি। লিটন ফিরেছেন জবাব দিচ্ছেন ব্যাটেই কিন্তু তাকে যারা ট্রল করতেন তারা লিটনের ব্যাটিং দেখে কি এখন একটু হলেও অনুশোচনায় ভোগেন?

সৌম্য,সাব্বির,মোসাদ্দেক,নুরুল হাসান,ইয়াসির আলীদের নিয়েও ট্রল হয় হর হামেশা।কিন্তুু এই জাগায় নিজেকে সবচেয়ে বেশি দুর্ভাগা ভাবতে পারেন নাজমুল হোসেন শান্ত। শান্তর মতো এতো বেশি ট্রল আর কাওকে হয়নি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই শান্ত কে অনেক বেশি মেধাবি খেলোয়ার হিসেবে মনে করা হতো। একারনে শান্ত কে অনেক সুযোগ দেয়া হয়েছে। শান্ত সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। শুরু হয় সমালোচনার ঝড়।

কিন্তু গত বিশ্ব থেকেই শান্ত ব্যাটিংয়ে অনেক পরিবর্তন এসেছে। বিশ্ব কাপে ২ টি ফিফটিসহ ছিলেন দলের সেরা রান সংগ্রাহক।চলতি বিপিএলেও ৩৫০ রান নিয়ে আছেন ১ নম্বরে। ব্যাট করছেন সাবলীল ভাবেই। অথচ এখনো তাকে নিয়ে হচ্ছে ট্রল। এই বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যেই হতাশা জানিয়েছেন শান্ত।

এবার আরও একটু পেছনে ফিরে যাওয়া যাক। শান্তর মতোই আরও একজন খেলোয়ার ছিলেন শুভাগত হোম। কার্যকর অফ স্পিনের সাথে জোরে ব্যাটও চালাতে পারতেন। ঘরোয়া লীগে তিনি বরাবরই পারফর্ম করেছেন। কিন্তুু যখনই জাতীয় দলে আসতেন চারদিকে গেল গেল রব পরে যেতো।এসব কারনে পরে আর জাতীয় দলে ফিরতেই পারলেন না। অথচ চলতি বিপিএলে তার ব্যাটিং দেখে আফসোস করতেই হয়।

ক্রিকেট এখন জাতির একটা আবেগে পরিনত হয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে এটাও মনে রাখতে হবে একটা খেলোয়াড় যখন জাতিয় দলে আসে তখন অবশ্যই তার সেই যোগ্যতা আছে। হয়তো সময়টা খারাপ যেতে পারে। ট্রল করা যেতেই পারে কিন্তুু সেটা যেন হয় গঠন মুলক নিয়ন্ত্রিত। দিন শেষে খেলোয়াড়েরাও মানুষ তাদেরও পরিবার আছে। সুযোগ আর সঠিক পরিচর্যা পেলে শান্ত শুভাগতরাও হয়তো ফিরবেন লিটন তাসকিন হয়ে।

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

খেলা এর সর্বশেষ খবর

খেলা - এর সব খবর



রে