ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ফাইনাল ম্যাচে ভারতের একাদশে ঠাঁই হচ্ছে না দুই তারকা ক্রিকেটার

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৩ জুন ০১ ১৮:১৭:৪৬
ফাইনাল ম্যাচে ভারতের একাদশে ঠাঁই হচ্ছে না দুই তারকা ক্রিকেটার

২০২১-এ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পৌঁছেও খালিহাতে ফিরতে হয়েছিলো ভারতকে। সাউদাম্পটনের মাঠে খেতাব ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো নিউজিল্যান্ড। দুই বছর আগের সেই বেদনাদায়ক স্মৃতির পুনরাবৃত্তি চান না রোহিত শর্মারা। দশ বছর কোনো আইসিসি ট্রফি জেতেনি ভারত। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেই সেই খরা কাটাতে বদ্ধপরিকর তারা।

ইংল্যান্ডের পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিয়ে আগেভাগেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে ভারতীয় দল। ইংল্যান্ড পৌঁছে গিয়েছেন কোচ রাহুল দ্রাবিড়। যে ক্রিকেটাররা আইপিএলের প্লে-অফ খেলার সুযোগ পান নি, তাঁরাও আগেই গিয়েছেন ইংল্যান্ডে। প্লে-অফের কোয়ালিফায়ার পর্বে ছিটকে যাওয়ায় ইংল্যান্ডে পৌঁছে গিয়েছেন রোহিত শর্মা, সূর্যকুমার যাদবদের মত ক্রিকেটারও। মহম্মদ শামি, শুভমান গিল, রবীন্দ্র জাদেজার মত যাঁরা আইপিএলের ফাইনাল খেলেছেন তাঁরাও দ্রুত যোগ দেবেন দলের সঙ্গে।

জোরকদমে চলছে অনুশীলন। ঋষভ পন্থ, জসপ্রীত বুমরাহ, শ্রেয়স আইয়ারদের মত ক্রিকেটাররা না থাকায় দল সাজাতে চিন্তায় টিম ইন্ডিয়া। ইংল্যান্ডের মাঠে স্পিনের বিশেষ ভূমিকা থাকে না। মেঘলা আবহাওয়ায় সাধারণত বল স্যুইং হতে দেখা যায় বেশী। সেই কথা মাথায় রেখে স্পিনারদের বাইরে রেখে পাঁচ পেসারে অজিদের বিপক্ষে অল-আউট আক্রমণের পথে হাঁটতে পারে ভারত।

মহম্মদ শামি-

পিঠের চোটের কারণে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেই জসপ্রীত বুমরাহ। তাঁর অবর্তমানে টিম ইন্ডিয়ার বোলিং বিভাগের অলিখিত নেতা হতে চলেছেন মহম্মদ শামিই। ডান-হাতি পেসার শামির বোলিং-এর মূল শক্তি তাঁর নিয়ন্ত্রণ। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নতুন ডিউক বল হাতে অজিদের ওপেনিং জুটিকে ভাঙার জন্য শামির দিকেই তাকিয়ে থাকবে দল। মাসখানেক আগে অস্ট্রেলিয়া যখন ভারতে টেস্ট খেলতে এসেছিলো তখন বল হাতে অজি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারকে বেশ সমস্যায় ফেলেছিলেন শামি।

ইংল্যান্ডের স্যুইং সমৃদ্ধ পিচে শামির বলের কারিকুরী ফের একবার চাপে ফেলতে পারে ওয়ার্নারকে। ডিউক বল পুরনো হলেও তা থেকে স্যুইং আদায় করে নিতে পারেন বোলাররা। সেই কারণে শামির স্যুইং করানোর দক্ষতাকে গোটা টেস্টেই কাজে লাগাতে চাইবে ভারত। ‘মেন ইন ব্লু’কে ভরসা যোগাচ্ছে শামির ফর্মও। আইপিএলে ২৮ উইকেট নিয়ে পার্পল ক্যাপ জিতেছেন তিনি।

মহম্মদ সিরাজ-

শামির সাথে নতুন বল হাতে দেখা যেতে পারে মহম্মদ সিরাজকে। হায়দ্রাবাদের পেসার গত কয়েক মাসে ভারতের অন্যতম সেরা পেসার হিসেবে উঠে এসেছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের আলোচনায়। সিরাজের বোলিং-এ উন্নতির পিছনে অন্যতম কারণ তাঁর নিয়ন্ত্রণ। দিনকয়েক আগে একদিনের ক্রিকেটে বিশ্বের এক নম্বর বোলারের তকমা পেয়েছিলেন। এই বছর আইপিএলেও নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন। বিশেষত পাওয়ার প্লে’তে তাঁকে দেখা গিয়েছে ‘টেস্ট লেন্থে’ বল রেখে ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলতে। অজিদের বিরুদ্ধেই টেস্ট অভিষেক হয়েছিলো তাঁর। এক ইনিংসে পাঁচ উইকেটও নিয়েছেন ক্যাঙারু বাহিনীর বিপক্ষে। সেই পারফর্ম্যান্সের পুনরাবৃত্তি করতে চাইবেন তিনি।

শার্দূল ঠাকুর-

তৃতীয় পেসার হিসেবে ভারতের জার্সিতে দেখা যেতে পারে শার্দূল ঠাকুরকে। বিদেশের মাঠে ব্যাটে হোক বা বল হাতে-বারবার ভারতের ত্রাতা হতে দেখা গিয়েছে শার্দূলকে। পার্টনারশিপ ভাঙার ব্যাপারে সিদ্ধহস্ত শার্দূলকে প্রথম একাদশে সুযোগ দিতে পারেন রোহিত শর্মা। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্স জার্সিতে শার্দূল এবার বিশেষ সুবিধা করতে পারেন নি ।

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে একটি ঝোড়ো ইনিংস ব্যতীত বড় রান আসে নি তাঁর ব্যাট থেকে। ১০ ইনিংসে করেছেন ১১৩ রান। পেয়েছেন মাত্র ৭ উইকেট। তবে ইংল্যান্ডের পরিবেশে ডিউক বল হাতে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন তিনি। নিজের টেস্ট কেরিয়ারে ব্যাট হাতে ৮ টেস্টে ২৫৪ রান করেছেন তিনি। নিয়েছেন ২৭ উইকেটও। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে লড়াকু অর্ধশতরানও রয়েছে তাঁর।

উমেশ যাদব-

চতুর্থ পেসার হিসেবে ভারতীয় দলে জায়গা হতে পারে উমেশ যাদবের। বিদর্ভের ডান হাতি পেসারের অভিজ্ঞতার ঝুলি পরিপূর্ণ। ৫৬ টেস্টে তিনি নিয়েছেন ১৬৮ উইকেট। এবারের আইপিএলে বিশেষ কিছু করে দেখাতে পারেন নি উমেশও। ৭ ম্যাচে মাত্র ১ উইকেটই জুটেছে তাঁর। তবুও উমেশকে ভারতীয় দল প্রথম একাদশে রাখতে পারে তাঁর অভিজ্ঞতার জন্য। ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে তৃতীয় টেস্টে সুযোগ পেয়েই দারুণ বল করেছিলেন উমেশ।

স্পিন সহায়ক ইন্দোর পিচেও ৫ ওভারে মাত্র ১২ রান খরচ করে তুলে নেন ৩ উইকেট। কঠিন পরিস্থিতিতে সেই দাপুটে পারফর্ম্যান্স দৌড়ে রেখেছে উমেশকে। পাশাপাশি লোয়ার অর্ডারে কার্যকরী ব্যাটার হয়ে উঠতেও তাঁকে দেখা গিয়েছে বেশ কয়েকবার। সহজাত দক্ষতায় বড় শট মারতে পারেন উমেশ। তাঁর উপস্থিতি নিঃসন্দেহে টিম ইন্ডিয়াকে শক্তিশালী করবে।

জয়দেব উনাদকাট-

পঞ্চম পেসার হিসেবে দলে থাকতে পারেন জয়দেব উনাদকাট। ২০১০ সালে টেস্টে অভিষেক হয়েছিলো তাঁর। দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে একটি ম্যাচ খেলার পর অপেক্ষা করতে হয় বারো বছর। ২০২২ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কেরিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট খেলেন তিনি। এরপর অস্ট্রেলিয়া সিরিজে দলে থাকলেও মাঠে নামার সুযোগ পান নি। মাঝপথে ভারতীয় শিবির থেকে অব্যাহতি চেয়ে নেন। রঞ্জি ফাইনালে সৌরাষ্ট্রের হয়ে মাঠে নেমে বাংলাকে হারিয়ে জেতেন ট্রফি। রঞ্জি ট্রফিতে এবার বেশ ভালো বোলিং করেছেন তিনি।

আইপিএলে ৩ ম্যাচ খেলে কোনো উইকেট পান নি। তারপর চোটের শিকারও হয়েছিলেন। কিন্তু সেই অন্ধকার অধ্যায়কে পিছনে ফেলে এখন আলোর সন্ধানে তিনি। জয়দেব উনাদকাট বাঁ-হাতি পেসার। প্রতিপক্ষের মিচেল স্টার্কের উত্তর হতে পারেন তিনি। পাশাপাশি উনাদকাটের বাঁ-হাতি স্যুইং ভারতীয় পেস আক্রমণে বৈচিত্র্যও যোগ করতে পারে, যার ফলে তাঁকেও প্রথম একাদশে রাখতে পারেন রোহিত।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে