ঢাকা, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১

তিন বিভাগে ব্যাপক কমেছে পুরুষের জন্মের হার

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৩ ডিসেম্বর ১০ ১৮:৩৯:১২
তিন বিভাগে ব্যাপক কমেছে পুরুষের জন্মের হার

দেশের তিন বিভাগের গ্রামীণ এলাকায় পুরুষ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে। তিনটি বিভাগ হলো: বরিশাল, ময়মনসিংহ ও রংপুর। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ (ষষ্ঠ) আদমশুমারি ও গৃহ শুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বিবিএস গত ২৮ নভেম্বর এই জাতীয় প্রতিবেদন (১ম খণ্ড) প্রকাশ করে।

বিবিএসের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায় যে ২০২১ সালের আদমশুমারি (পঞ্চম) থেকে বরিশাল বিভাগে পুরুষ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমছে। এ বছরের আদমশুমারিতে এই হার কম। এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের নাম। তিনটি বিভাগেই পুরুষ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নেতিবাচক।

বিবিএসের কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিভাগ তিনটিতে মূলত তিন কারণে পুরুষ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমছে। প্রথমত, এই তিন বিভাগে পুরুষের অভ্যন্তরীণ অভিবাসী হওয়ার হার বেশি। দ্বিতীয়ত, নারীর তুলনায় পুরুষের মৃত্যুহার বেশি। তৃতীয়ত, ছেলেসন্তানের তুলনায় মেয়েসন্তানের জন্মের হার বেশি।

এবারের জনশুমারির তথ্য অনুযায়ী, বরিশাল বিভাগে নারীর সংখ্যা ৪৬ লাখ ৬০ হাজার ১৬৩ জন। পুরুষ ৪৪ লাখ ৩৯ হাজার ৬১৬ জন। ময়মনসিংহ বিভাগে নারীর সংখ্যা ৬২ লাখ ৩৬ হাজার ৫৫৭ জন। পুরুষ ৫৯ লাখ ৮৮ হাজার ২৩৩ জন। রংপুর বিভাগে নারীর সংখ্যা ৮৮ লাখ ৭৮ হাজার ৮৯৫ জন। পুরুষ ৮৭ লাখ ৩১ হাজার ৪১৫ জন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম বলেন, একক কোনো কারণে এই তিন বিভাগে পুরুষ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম, এটা বলা ঠিক হবে না। তিনটি বিভাগে কর্মসংস্থান হওয়ার মতো শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠেনি।

এসব এলাকায় দারিদ্র্যের হার তুলনামূলক বেশি। এ কারণে পুরুষের অভ্যন্তরীণ অভিবাসী হওয়ার প্রবণতা বেশি। পুরুষ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম হওয়ার এটি একটি কারণ হতে পারে। ছেলেসন্তান জন্মের হার কম, এটিও একটি কারণ হতে পারে। এর বাইরে নারীর তুলনায় পুরুষের মৃত্যুহার বেশি—এটি একটি কারণ হতে পারে। এসব কারণে এই তিন বিভাগে পুরুষ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম হতে পারে।

বিবিএসের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বরিশাল বিভাগের মানুষ নিজ এলাকায় বসবাস করে সবচেয়ে কম। সেখানকার ৭৮ শতাংশ মানুষ নিজ বিভাগে অবস্থান করছে। একই বিভাগের সবচেয়ে বেশি, প্রায় ১৯ ভাগ মানুষ ঢাকায় অবস্থান করছে।

অন্যদিকে, সিলেট বিভাগের মানুষ নিজ বিভাগে সবচেয়ে বেশি বসবাস করে। এখানকার ৯৬ শতাংশ মানুষই নিজ বিভাগে বসবাস করছে। মাত্র ৪ শতাংশ মানুষ ঢাকায় অবস্থান করছে।

গত বছরের ১৫ থেকে ২১ জুন দেশজুড়ে ষষ্ঠ জনশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশে এখন মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ। এর মধ্যে নারী ৮ কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ হাজার (৫০.৪৬ শতাংশ)। পুরুষ ৮ কোটি ৪১ লাখ ৩৪ হাজার (৪৯.৫৪ শতাংশ)। অর্থাৎ জাতীয়ভাবে দেশে এখন পুরুষের তুলনায় নারী প্রায় ১৬ লাখ বেশি।

অভ্যন্তরীণ অভিবাসীর বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম বলেন, ঢাকার বাইরে অন্য এলাকায় এখনো ভারী শিল্পকারখানা গড়ে ওঠেনি। সে কারণে মানুষ এখনও ঢাকামুখী হচ্ছে।

সবশেষ জনশুমারিতে দেখা যায়, জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনায় সবচেয়ে বেশি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এ এলাকায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৩৯ হাজার ৪০৬ জন বসবাস করে। জনসংখ্যার ঘনত্ব সবচেয়ে কম রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকায়। সেখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বসবাস করে ৩ হাজার ৪৪৫ জন।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে