ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

লকডাউন ছাড়াই সিঙ্গাপুরে যেভাবে নিয়ন্ত্রণে করোনাভাইরাস

প্রবাসী ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২০ এপ্রিল ০১ ১১:৩৭:০৫
লকডাউন ছাড়াই সিঙ্গাপুরে যেভাবে নিয়ন্ত্রণে করোনাভাইরাস

৩১ মার্চ পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৭৯ জন৷মারা গেছে ৩ জন। সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ২২৮ জন। বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৬৪৮ জন। তাহলে এত ঘনবসতির দেশ হয়েও কিভাবে সিঙ্গাপুর লকডাউন ছাড়াই করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে রাখলো।

সিঙ্গাপুর সচেতনতার দিক দিয়ে পৃথিবীর সেরা দেশ তা আরও একবার প্রমাণ করলো। চীনের উহানে ৩১ ডিসেম্বর করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর পৃথিবীর উন্নত রাষ্ট্রগুলো হালকাভাবে নিলেও সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এটাকে হালকাভাবে নেয়নি। যার কারণে ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলো প্রতিদিন হাজার হাজার করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলেও দেশটির চিত্র ঠিক তার বিপরীত।

বাংলাদেশের অবস্থাও দিনেদিনে ভয়াবহতার দিকে যাবার অসংখ্য কারণ আছে যদি সবাই এই ঘাতক করোনাকে পাত্তা না দিয়ে এটাকে হালকা ভাবে নেয়।

এখন দেখা যাক সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে কী কী পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিলো-

* চীনের উহানে ৩১ ডিসেম্বর করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর ২ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে উহান থেকে আসা সবগুলো ফ্লাইটের যাত্রীদের তাপমাত্রা স্ক্রিনিং শুরু হয়।

* ২০ জানুয়ারি চীন থেকে আসা সব ফ্লাইটের যাত্রীদের তাপমাত্রা স্ক্রিনিং শুরু হয় এবং চীন থেকে আসা সকল যাত্রীকে ১৪ দিন বাধ্যতামূলক নির্দিষ্ট স্থানে কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। যে স্থানটি আগেই সব যাত্রীদের সকল সুযোগ-সুবিধা বজায় রেখে প্রস্তুত রাখা হয়েছিল।

* ২৩ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরে প্রথম শনাক্ত হয় করোনাভাইরাস, আক্রান্ত ব্যক্তি চীনা নাগরিক যিনি চীনের উহান থেকে ২২ জানুয়ারি এসেছিলেন।

* ২৪ জানুয়ারি বিমান বন্দর, স্থল বন্দর ও সমুদ্র বন্দর দিয়ে আসা সকল যাত্রীর স্ক্রিনিং শুরু হয়। সন্দেহজনক যাত্রীদের আলাদা করে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। যেটা এখনও অব্যাহত রয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভ্রমণকারীদের সিঙ্গাপুর ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

* ফেব্রুয়ারি নতুন কয়েকজনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর স্কুল, কলেজ, অফিস, আদালত, শপিংমলসহ সবকিছু খোলা রেখে সমগ্র সিঙ্গাপুরে চলাচলের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। বিনাপ্রয়োজনে বাইরে যাওয়া নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। জরুরি প্রয়োজনে চলাচলের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দূরুত্ব (একজন থেকে আরেক জনের দূরুত্ব কম পক্ষে ৩ ফুট) বজায় রাখতে বলা হয় এবং মাস্ক ও হ্যান্ড সেনিটিইজার ব্যবহার করতে পরামর্শ দেওয়া হয়, যেটা সবাই মেনে চলছেন এবং অব্যাহত আছে।

* এই সমস্ত পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণের ফলে তারা এই মরণঘাতি করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছেন।

সবাই একটু সতর্ক হলেই এই ভাইরাসকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। যার উদহারণ সিঙ্গাপুর, সচেতন জনগণের সহযোগিতায় তারা এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছেন। আমরা যদি বিনাপ্রয়জনে ঘর থেকে বের না হই এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপদেষ গুলো মেনে চলি তবে এই ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব।

লেখক : শেখ আকতার উদ্দীন আহমেদ , ব্যাংকার , কুয়ালা লামপুর , মালয়েশিয়া।

সুত্রঃ জাগোনিউজ২৪

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে