বিশ্বকাপের মিশন পর, তামিমের পরবর্তী গন্তব্য যেখানে

ক্রিকেট খেলার দেশগুলির মধ্যে, বাংলাদেশ সম্ভবত সবচেয়ে দৃশ্যমান দেশ যে অল্প বয়সে তার জাতীয় দলে আত্মপ্রকাশ করেছে। একই সময়ে, আমাদের দেশে ৩০-৩২ বছর বয়সে জাতীয় দলে অভিষেক হওয়া খুব বিরল। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ডে একজন ক্রিকেটার পরিণত হয় এবং তাকে জাতীয় দলে সুযোগ দেওয়া হয়। উল্টোটা আমাদের দেশে। সেইসব ক্রিকেটাররা সুযোগ পেয়েও খুব দ্রুত ঝড় তোলেন।

প্রত্যাশার চেয়ে কম সময়ে জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছে বাংলাদেশের অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটারের। কয়েকজন বাদে অধিকাংশ ক্রিকেটারই ঝড়ের মধ্য দিয়ে গেছেন। কিছুদিন আগে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও দেশের প্রথম তারকা ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুল বলেছিলেন, যে বয়সে তাকে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা ভুল সিদ্ধান্ত। শুধু আশরাফুলই নয়, এই ঝড়ের কবলে পড়া অনেক ক্রিকেটারই মনে করেন, তারা আরও পরিপক্ক হয়ে জাতীয় দলে সুযোগ পেলে তাদের ক্যারিয়ার আরও সমৃদ্ধ হতো।

এবারের বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশ দলে থাকা কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটারের মধ্যে একজন তানজিদ হাসান তামিম। সিনিয়র তামিম বিশ্বকাপ না খেলায় তানজিদ তামিমের মাথা ফাঁস হয়ে যায়। মাত্র ২০ বছর বয়সে বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে খেলা তামিমের জন্য নিঃসন্দেহে বড় রোমাঞ্চ। হতাশাজনকও। এই তরুণ ক্রিকেটার এখনও পর্যন্ত দলের প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং ক্রমাগত খারাপ পারফরম্যান্সের কারণে নিজের উপর চাপও দিচ্ছেন।

ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ ছাড়া অন্য কোনো ম্যাচে নিজের ইনিংসকে এগিয়ে নিতে পারেননি তিনি। ভারতের বিপক্ষে তার ৫১ রানের ইনিংসটি বাদ দিয়ে, এই প্রতিভাবান ওপেনারের ১৬ রানের ইনিংসটি বর্তমান বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস। ওপেনার হিসেবে ব্যাটিংয়ে ৭ ম্যাচ খেলা তামিমের গড় মাত্র ১৪!

তানজিদ তামিমের খারাপ পারফরম্যান্সের জন্য তার চেয়েও বেশি দায়ী আমাদের দেশের ক্রিকেট ব্যবস্থা। তামিম কি সত্যিই বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে খেলার মতো পরিপক্ক ছিলেন? বিশ্বকাপের আগে তামিম কয়টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন? তামিমের বড় দলের বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অতটা সহজ নয় এবং বিশ্বকাপের মঞ্চ তার চেয়েও কঠিন। হঠাৎ করেই তামিমকে বিশ্বকাপের দলে এনে তাকে আবার নিয়মিত খেলায় তার ক্যারিয়ার হুমকির মুখে ফেলেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। ধারাবাহিক বাজে পারফরম্যান্সের কারণে বিশ্বকাপ শেষে তামিম বাদ পড়লে আরেক প্রতিভা হারিয়ে যাবে। যেহেতু তামিমকে বিশ্বকাপের মতো একটি প্ল্যাটফর্মে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তাই বিশ্বকাপের পরও তাকে ২-৩ সিরিজে সুযোগ দেওয়া উচিত। কেউই চায় না যে অল্প বয়সে ডেবিউ করার পর অন্য তরুণ প্রতিভা ছড়িয়ে পড়ুক।