ঢাকার ক্লাবগুলোর হাতে জিম্মি দেশের ক্রিকেট

ঢাকা প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ শুরু হওয়ার কথা ছিল আজ থেকে, কিন্তু তা আর হয়নি। ঢাকার ক্লাবগুলো একজোট হয়ে ঘোষণা দিয়েছে, তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কোনো লিগেই তারা অংশ নেবে না। এ দাবির মাধ্যমে ঢাকার ক্লাবগুলোর সেই পুরোনো চেহারাটাই আবারও সামনে এসেছে—তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য পুরো দেশের ক্রিকেটকেই জিম্মি করে রাখতে তারা পিছপা হয় না।
জুলাই-জাগরণের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া শুরু করেছিল। দীর্ঘদিন বিসিবি সভাপতির দায়িত্বে থাকা নাজমুল হাসানের বিদায়ের পর নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন ফারুক আহমেদ। নতুন সরকারের অধীনে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে বিসিবির পরিচালনা পর্যদে নতুন দুই পরিচালক নিয়োগ করা হয়, যাদের মধ্যে অন্যতম হলেন নাজমূল আবেদীন।
নাজমূল আবেদীনের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি বিসিবির গঠনতন্ত্র সংশোধনের প্রস্তাব তৈরি করছে। ফাঁস হওয়া সেই প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্রের খসড়া দেখে ঢাকার ক্লাবগুলোর সংগঠকেরা রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। তাদের অভিযোগ, প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্রে ঢাকার ক্লাবগুলোর দীর্ঘদিনের আধিপত্য হ্রাস পেতে পারে। ফলে তারা নাজমূল আবেদীনের পদত্যাগ দাবি করে আন্দোলনে নেমেছে।
বর্তমান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, বিসিবির ১৭১ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৭৬ জনই ঢাকার ক্লাব থেকে মনোনীত। পরিচালনা পর্যদের ২৫ সদস্যের মধ্যে ১২ জনই ঢাকার ক্লাব প্রতিনিধিত্ব করেন। অন্যদিকে বিভাগীয় বা আঞ্চলিক পর্যায় থেকে মাত্র ১০ জন পরিচালক আসেন। এ অবস্থায় বিসিবি কার্যত ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড’ নয়, বরং ‘ঢাকা ক্রিকেট বোর্ড’ হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছে।
প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্রে ঢাকার ক্লাবগুলোর কাউন্সিলর সংখ্যা ৩০-এ কমিয়ে আনার এবং পরিচালকের সংখ্যা ৪-এ সীমিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে, বিভাগীয় বা আঞ্চলিক পর্যায় থেকে ১৩ জন পরিচালক আসার পরিকল্পনা রয়েছে। পরিচালনা পর্ষদের আকার ২৫ থেকে কমিয়ে ২১ জন করার কথাও বলা হয়েছে।
ঢাকার ক্লাবগুলো দাবি তুলেছে, এই পরিবর্তন তাদের ‘অন্যায্য’ভাবে কোণঠাসা করার পরিকল্পনা। তবে বিসিবির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই পরিবর্তনের মাধ্যমে সারা দেশের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বর্তমান কাঠামো অনুযায়ী, একটি তৃতীয় বিভাগ ক্লাবের প্রতিনিধি বিসিবির কাউন্সিলর হতে পারেন, যেখানে রাজশাহী বা খুলনার মতো বড় ক্রিকেট কেন্দ্র থেকেও মাত্র একজন প্রতিনিধি থাকতে পারে। এই বৈষম্য দূর করাই গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের উদ্দেশ্য।
বাংলাদেশের ক্রিকেট কাঠামোতে ঢাকার ক্লাবগুলোর ঐতিহাসিক অবদান রয়েছে। তবে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার দুই যুগ পরও আঞ্চলিক ক্রিকেটের উন্নয়ন হয়নি। চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী বা সিলেটে ঢাকার মতো শক্তিশালী লিগ এখনো গড়ে ওঠেনি। এতে বিসিবির মূল কাঠামো ঢাকার ক্লাবকেন্দ্রিক রয়ে গেছে।
আদর্শ কাঠামো অনুযায়ী, বিভাগীয় ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনগুলোর প্রতিনিধিরা বিসিবিতে আসা উচিত। এর ফলে আঞ্চলিক ক্রিকেটের উন্নয়ন যেমন হবে, তেমনই জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব আরও সুষম হবে।
বর্তমান সময়টা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য সংস্কারের আদর্শ সময়। টেস্ট খেলুড়ে দেশের একটি বোর্ডের কাঠামোতে সারা দেশের সুষম প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা জরুরি। ঢাকার ক্লাবগুলোর চাপের কাছে নতি স্বীকার করা মানে এই গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের সুযোগ হারানো।
বাংলাদেশ ক্রিকেটকে ঢাকার ক্লাবকেন্দ্রিক প্রভাবমুক্ত করে আঞ্চলিক ভিত্তিতে শক্তিশালী কাঠামো গড়ে তোলাই দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের চাবিকাঠি। এজন্য প্রয়োজন কার্যকর পরিকল্পনা এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা: প্রথম টেস্ট প্রথম দিনেই বাংলাদেশ ৪ রেকর্ড
- বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা: বৃষ্টির কারণে বন্ধ ম্যাচ
- বাংলাদেশের শীর্ষ ১০ নিরাপদ ব্যাংকের তালিকা প্রকাশ
- আলোচিত ১০ সিনেমা যেখানে নায়ক-নায়িকা সত্যি মিলিত হয়েছেন
- শেখ হাসিনা যাকে প্রধানমন্ত্রী করতে চেয়েছিলেন, জানালেন অলি
- আ. লীগের কার্যক্রম স্থগিত, নিষিদ্ধ করা হয়নি: ড. ইউনূস
- ভয়াবহ অন্ধকারে ঢাকার একাংশ
- মারা গেলেন ভারতের উদিয়মান তারকা ক্রিকেটার
- আজ ৮ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা, থাকুন সতর্ক
- সাপে কামড়ানোর পর ১০ মিনিটের মধ্যে যা করবেন, তাতেই বাঁচবেন
- করোনা সংক্রমণ: স্কুল বন্ধ নাকি চলবে, সিদ্ধান্ত জানালো মাউশি
- সোনার দামে বড় পতনের শঙ্কা, আসছে বড় পরিবর্তন
- বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা: শান্ত-নিসাঙ্কার সেঞ্চুরিতে ড্র টেস্ট
- ত্রয়োদশ নির্বাচনে বিএনপি ১০০ আসনও পাবে না
- বৃষ্টির কারণে বন্ধ বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ম্যাচ