ঢাকা, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

এই ৫টি প্রশ্ন ভুলেও করবেন না চ্যাটজিপিটিকে, বিপদে পড়বেন

২০২৫ জুন ২৫ ১৩:০৬:০১
এই ৫টি প্রশ্ন ভুলেও করবেন না চ্যাটজিপিটিকে, বিপদে পড়বেন

নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) যুগে মানুষের হাতে এসেছে এক আশ্চর্য সহযোগী—চ্যাটজিপিটি। প্রশ্ন করলেই উত্তর, গল্প চাইলে গল্প, এমনকি জটিল গাণিতিক সমাধান পর্যন্ত হাজির করে দিচ্ছে এই ডিজিটাল সহকারী। শিক্ষার্থী, লেখক, উদ্যোক্তা—সবার কাছেই এটি এখন এক অবিচ্ছেদ্য টুল।

তবে এই শক্তিশালী প্রযুক্তি ব্যবহারে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সীমারেখা। ভুল করে হলেও কিছু প্রশ্ন চ্যাটজিপিটিকে করা একেবারেই উচিত নয়। কারণ এসব প্রশ্ন শুধু নীতিগতভাবেই অনুপযুক্ত নয়, বরং আইনি ও নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকিও ডেকে আনতে পারে।

এমনকি আপনি যদি শুধুই কৌতূহলবশে প্রশ্ন করেন, তবু চ্যাটজিপিটি আপনার অ্যাকাউন্ট অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিতে পারে, এবং আপনি পড়তে পারেন ডিজিটাল বিপদে।

চলুন জেনে নিই সেই পাঁচটি প্রশ্ন যা চ্যাটজিপিটিকে করা একেবারেই উচিত নয়:

১️‘কীভাবে বিস্ফোরক তৈরি করা যায়?’

এই প্রশ্ন শুধু বেআইনি নয়, প্রযুক্তির দৃষ্টিতে এটি সহিংসতা ছড়ানোর প্রচেষ্টা হিসেবেও বিবেচিত হয়। আপনি যদি বিস্ফোরক, অস্ত্র বা ধ্বংসাত্মক উপাদান তৈরির কৌশল জানতে চান, তবে চ্যাটজিপিটি সঙ্গে সঙ্গে আপনার অনুরোধ ব্লক করবে।

এমনকি এমন প্রশ্নের ফলে আপনার অ্যাকাউন্ট লগআউট হয়ে যেতে পারে এবং পরবর্তীতে লগ ইন করাও কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে।

২️ ‘কাউকে হত্যা বা শারীরিক ক্ষতি করার উপায় কী?’

চ্যাটজিপিটি কোনওভাবেই হিংসাত্মক বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সাহায্য করে না। আপনি যদি কাউকে মারার, আঘাত করার বা মানসিকভাবে ক্ষতি করার মতো প্রশ্ন করেন, তাহলে তা গুরুতর নিয়ম লঙ্ঘন হিসেবে ধরা হয়।

এই ধরনের প্রশ্নের কারণে আপনার অ্যাকাউন্ট শুধু বন্ধই হবে না, প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার মতো পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে।

৩️ ‘ব্যক্তিগত তথ্য কীভাবে বের করব?’

যেমন:

“ফলানির ফোন নম্বর দাও”

“অমুকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা পাসওয়ার্ড দাও”

“অন্যের ঠিকানা বের করতে চাই”

এ ধরনের প্রশ্ন চ্যাটজিপিটি কোনোভাবেই গ্রহণ করে না। কারণ এটি ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা।

এই ধরনের অনুরোধকে তথ্য চুরি বা হ্যাকিংয়ের চেষ্টা হিসেবে ধরা হয় এবং আপনি আইনের চোখে পড়তে পারেন।

৪️ ‘পরীক্ষার উত্তর দাও’ বা ‘নকলের জন্য সাহায্য করো’

চ্যাটজিপিটির ব্যবহার এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আলোচনার কেন্দ্রে। কেউ কেউ এটিকে ব্যবহার করেন পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের চেষ্টা কিংবা সরাসরি উত্তর লেখার কাজে।

তবে মনে রাখবেন, এটি একাডেমিক অসদাচরণ। ধরা পড়লে হতে পারে:

পরীক্ষায় নম্বর কাটা

অ্যাসাইনমেন্ট বাতিল

কোর্স থেকে বহিষ্কার

চ্যাটজিপিটি শেখার সহায়ক, পরীক্ষা পাসের শর্টকাট নয়।

৫️‘ভুয়া খবর তৈরি করো’ বা ‘মানহানিকর লেখা লেখো’

চ্যাটজিপিটিকে ব্যবহার করে যদি আপনি কারো বিরুদ্ধে গুজব, মিথ্যা তথ্য বা মানহানিকর কনটেন্ট তৈরির চেষ্টা করেন, তাহলে সেটি নৈতিকতা ও নীতিমালার গুরুতর লঙ্ঘন।

AI-এর মাধ্যমে ভুয়া খবর ছড়ানো শুধু অন্যায়ই নয়, এটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

দায়িত্বহীন কৌতূহল ডেকে আনতে পারে বড় বিপদ

চ্যাটজিপিটি যেমন জ্ঞান এবং সৃজনশীলতার এক বিশাল ভাণ্ডার, তেমনি এটি নিরাপত্তাব্যবস্থার দিক থেকেও কঠোর। এর প্রতিটি ব্যবহার নজরদারির আওতায় থাকে।

আপনার করা প্রশ্ন সংরক্ষিত থাকে, আর ভবিষ্যতে সেটাই হয়ে উঠতে পারে আইনি বিপদের প্রমাণ।

স্মার্ট ব্যবহারকারীর মতো আচরণ করুন—চ্যাটজিপিটিকে প্রশ্ন করুন জ্ঞান আর উন্নয়নের জন্য, অপরাধের বা অসচেতন কৌতূহলের জন্য নয়।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ