ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

সূচকে পতন, তবু জমজমাট শেয়ারবাজার! কী বার্তা দিচ্ছে বিনিয়োগকারীদের আচরণ?

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৭ ১৫:১৫:৩৮
সূচকে পতন, তবু জমজমাট শেয়ারবাজার! কী বার্তা দিচ্ছে বিনিয়োগকারীদের আচরণ?

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) টানা তিন কর্মদিবসে সূচকে কিছুটা পতন দেখা গেলেও বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও অংশগ্রহণে ভাটা পড়েনি। বিশ্লেষকরা বলছেন, আগের ধারাবাহিক উত্থানের পর সূচকে এ ধরনের শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদে একটি সুস্থ ও ভারসাম্যপূর্ণ বাজারের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তাদের মতে, এই পরিস্থিতিকে হতাশার নয়, বরং নতুন বিনিয়োগের প্রস্তুতির সময় হিসেবে দেখা উচিত।

এর আগে টানা তিন কর্মদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক ২৩৮ পয়েন্ট বেড়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশাবাদ তৈরি করেছিল। বিশ্লেষকদের ধারণা ছিল, এ ধরনের উত্থানের পর বাজারে স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা সংশোধন আসতে পারে। বাস্তবেও তাই হয়েছে—গত তিন কর্মদিবসে ডিএসইর সূচক কমেছে ১২৮ পয়েন্ট। তবে তারা মনে করছেন, এটি একটি স্বাস্থ্যকর বাজার চিত্র এবং এতে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

তরলতায় ঘাটতি নেই

সূচক পতনের মাঝেও লেনদেনের তথ্য বলছে, বাজারে বিনিয়োগকারীদের সক্রিয়তা রয়েছে। যদিও সাম্প্রতিক তিন কর্মদিবসে লেনদেন হাজার কোটির নিচে ছিল, তবুও প্রতিদিন গড়ে ৭০০ কোটির বেশি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এটি প্রমাণ করে, বাজারে এখনও পর্যাপ্ত তরলতা রয়েছে।

সোমবার: লেনদেন ৯১২ কোটি টাকা

বুধবার: লেনদেন ৮৯০ কোটি টাকা

বৃহস্পতিবার: লেনদেন ৭০৬ কোটি টাকা

বিশ্লেষকরা বলছেন, ধারাবাহিক উত্থানের পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এতে সূচকে কিছুটা চাপ পড়লেও, এটি বাজারকে আরও সুসংগঠিত ও টেকসই বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত করে।

বৃহস্পতিবারের বাজার চিত্র

বৃহস্পতিবার ডিএসইতে সূচকের নিম্নমুখী ধারা বজায় ছিল। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৩.০৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫,৪০৮.০৭ পয়েন্টে।

ডিএসইএস কমেছে ১৩.৫০ পয়েন্ট, দাঁড়িয়েছে ১,১৭০.৪৩ পয়েন্টে

ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ২৭.৮১ পয়েন্ট, অবস্থান করছে ২,০৯৭.৬৯ পয়েন্টে

এই দিনে মোট ৩৯৮টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নেয়। এর মধ্যে:

দর বেড়েছে: ৭৯টি

দর কমেছে: ২৬৮টি

অপরিবর্তিত: ৫১টি

লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭০৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা, যা আগের দিনের ৮৮৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার তুলনায় প্রায় ১৮৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা কম।

সিএসইর পরিস্থিতি

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) ছিল মিশ্র প্রবণতা। আজ লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি ১৬ লাখ টাকার, যেখানে আগেরদিন লেনদেন হয়েছিল ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকার।

দর বেড়েছে: ৫৮টি প্রতিষ্ঠান

দর কমেছে: ১৪১টি

অপরিবর্তিত: ২৪টি

সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৮৬.৩৩ পয়েন্ট, দাঁড়িয়েছে ১৫,১৬৮.৯০ পয়েন্টে। আগের দিন এই সূচক কমেছিল ৭৩.০৯ পয়েন্ট।

সূচকের সাম্প্রতিক শুদ্ধিকরণকে শেয়ারবাজার বিশ্লেষকরা ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং বাজারে তারল্য ধরে রাখা প্রমাণ করে, শেয়ারবাজার এখনও চাঙা রয়েছে এবং দীর্ঘমেয়াদে এটি বিনিয়োগের জন্য একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে।

আল-আমিন ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ