ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট ২০২৫, ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

রহিমা ফুডের অস্বাভাবিক শেয়ার দাম উল্লম্ফন, হঠাৎ কারখানা বন্ধ

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৪ ০০:০১:১৩
রহিমা ফুডের অস্বাভাবিক শেয়ার দাম উল্লম্ফন, হঠাৎ কারখানা বন্ধ

আয় ও মুনাফা কমার পরও শেয়ারের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে প্রশ্ন তৈরি করেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে মাত্র ২৪ কার্যদিবসে ১০৫ শতাংশ দাম বাড়ার পর হঠাৎ করেই নিজেদের কাজুবাদাম প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি রহিমা ফুড করপোরেশন লিমিটেড। কোম্পানির আয় এবং মুনাফা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ার পরও শেয়ারের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তীব্র কৌতূহল ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

আজ (১৩ আগস্ট) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে রহিমা ফুড জানায়, গত ১২ আগস্ট কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তাৎক্ষণিকভাবে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কাজুবাদাম প্ল্যান্টের উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

ডিএসইর তথ্যমতে, গত ৭ জুলাই কোম্পানিটির নারকেল তেল কারখানা বন্ধের ঘোষণার পর শেয়ারের দাম ছিল ৮২.২ টাকা। সেখান থেকে মাত্র এক মাসের ব্যবধানে গত ১১ আগস্ট প্রতিটি শেয়ারের দাম ১৬৮.৯ টাকায় পৌঁছায়, যা ছিল গত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

আয় কমলেও দাম বাড়ে যেভাবে

আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) রহিমা ফুডের আয় এবং মুনাফা দুটোই ব্যাপকভাবে কমেছে। তারপরও শেয়ারের দামে এমন উল্লম্ফন ঘটায় বিনিয়োগকারীরা অবাক হয়েছেন।

কোম্পানিটির দাম-আয় অনুপাত (পি/ই রেশিও) দাঁড়িয়েছে ৪৪৩-এর মতো, যা অস্বাভাবিকভাবে অনেক বেশি। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এত উচ্চ পি/ই অনুপাত বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।কারখানা বন্ধের খবরে দরপতন

কাজুবাদাম কারখানা বন্ধের ঘোষণার পর আজ ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কমেছে। প্রতিটি শেয়ারের দাম ৭.৭৯% বা ১৩ টাকা কমে ১৫৩.৮০ টাকায় নেমে আসে। দিনশেষে মোট ১৫.৬৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।

এর ঠিক এক মাস আগে, গত ২ জুলাই, রহিমা ফুড তাদের নারকেল তেল উৎপাদন কারখানাও বন্ধ করে দিয়েছিল। কোম্পানির আয়ের প্রধান উৎস ছিল কাজুবাদাম, নারকেল তেল এবং কাজুবাদামের উপজাত পণ্য বিক্রি।কর্তৃপক্ষের নীরবতা

তবে কারখানা বন্ধের কারণ সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তিতে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে কোম্পানির সচিব মো. জাকির হোসেনের সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

এদিকে, গত তিন মাসে রহিমা ফুডের শেয়ারের দাম প্রায় ১৫০% বেড়েছে। এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে ডিএসই চারবার কোম্পানিটিকে নোটিশ পাঠায়। প্রতিবারই জবাবে রহিমা ফুড জানায়, সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধির পেছনে তাদের কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই।

কোম্পানির আর্থিক অবস্থা

২০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের এই কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ২ কোটি। অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৮% কমে ৮.৭২ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে, কর পরবর্তী মুনাফা ৬৯% কমে মাত্র ৫১ লাখ টাকায় নেমেছে, এবং শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে মাত্র ০.২৬ টাকা। আগের বছর একই সময়ে মুনাফা ছিল ১.৬৬ কোটি টাকা এবং ইপিএস ছিল ০.৮৩ টাকা।

উল্লেখ্য, গত অর্থবছরে কোম্পানিটি ২.১৩ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল এবং শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০% নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

আরও পড়ুন:

‘জেড’ ক্যাটাগরির দুই কোম্পানির শেয়ারে বাজিমাত

শেয়ারবাজারে ৭ কোম্পানিতে বিদেশি বিনিয়োগে ভাটা

মো: রাজিব আলী/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ