ঢাকা, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

একীভূতকরণে ফার্স্ট সিকিউরিটির সমর্থন: উন্মোচিত হলো ব্যাংক কেলেঙ্কারি

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ০৮:১০:১১
একীভূতকরণে ফার্স্ট সিকিউরিটির সমর্থন: উন্মোচিত হলো ব্যাংক কেলেঙ্কারি

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচটি ব্যাংক একীভূতকরণের বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগকে শর্তসাপেক্ষে স্বাগত জানিয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। মঙ্গলবার (০২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান এই সমর্থনের কথা জানান, তবে একইসাথে ব্যাংকটির বর্তমান বিপর্যয়ের পেছনের চাঞ্চল্যকর কারণ হিসেবে 'বেনামি ঋণের' বিষয়টি উন্মোচন করেন। বৈঠকে ডেপুটি গভর্নর ড. কবির আহমেদসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত এই একীভূতকরণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার ছিল এই ধারাবাহিক কর্মসূচির তৃতীয় দিন। এর আগে, রোববার এক্সিম ব্যাংক এবং সোমবার সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক নির্ধারিত থাকলেও, গভর্নরের আকস্মিক অসুস্থতার কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়।

আগামী বুধবার ইউনিয়ন ব্যাংক এবং বৃহস্পতিবার গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। স্থগিত হওয়া এক্সিম ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বৈঠকের পরিবর্তিত সময়সূচি পরবর্তীতে জানানো হবে।

বৈঠক শেষে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান গণমাধ্যমকে বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে আমাদের কোনো দ্বিমত নেই। তবে, আমানতকারীদের সুরক্ষার বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নিবিড়ভাবে দেখভাল করতে হবে।”

তিনি আরও বিস্ফোরক তথ্য দিয়ে জানান, ব্যাংকটির বর্তমান ভয়াবহ সংকটের নেপথ্যে রয়েছে বিশাল অঙ্কের বেনামি ঋণ। তার ভাষ্যমতে, “ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে এস আলম বেনামে প্রায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা তুলেছে। নিজের নামে এত বিশাল অর্থ নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় বেনামি ঋণের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। সেই বিপুল অঙ্কের টাকা ফেরত না আসার কারণেই ব্যাংকটি আজ এই চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন।”

বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে পাঁচটি ব্যাংকের মধ্যে এই একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, এই সুদূরপ্রসারী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের ব্যাংক খাতের সামগ্রিক ঝুঁকি কমবে এবং আমানতকারীদের হারানো আস্থা পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এই সরাসরি, কিন্তু শর্তযুক্ত সমর্থন, একীভূতকরণ উদ্যোগকে আরও বেশি গতি দেবে এবং ব্যাংক খাতের সংস্কারে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এই একীভূতকরণ প্রক্রিয়া দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এবং আমানতকারীদের স্বার্থ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে কতটা সফল হয়, তা সময়ই বলে দেবে।

আব্দুর রহিম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ