ঢাকা, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

হট স্টক অ্যালার্ট! ৩ সিগন্যালে ৯ শেয়ারে চমক, কিনবেন কি?

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৪ ০০:২১:০২
হট স্টক অ্যালার্ট! ৩ সিগন্যালে ৯ শেয়ারে চমক, কিনবেন কি?

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা সবসময় একটি নির্ভরযোগ্য সংকেতের অপেক্ষায় থাকেন, যা আগাম ট্রেন্ড সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে। ঠিক এমন এক মুহূর্তে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (DSE) তালিকাভুক্ত ৯টি কোম্পানিতে একসাথে তিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ টেকনিক্যাল বুলিশ সিগন্যাল—মুভিং এভারেজ, MACD (মুভিং এভারেজ কনভারজেন্স ডাইভারজেন্স) এবং এঙ্গালফিং প্যাটার্ন—গঠিত হয়েছে। স্টকনাও সূত্র মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) লেনদেন শেষে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে।

এই তিনটি সিগন্যাল একসাথে পাওয়া মানে বাজারের একটি বড় পরিবর্তনের পূর্বাভাস, যা অনেক সময় কোম্পানির মৌলিক অবস্থার আগেই ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেয়।

যে ৯টি কোম্পানিতে এই ইতিবাচক ইঙ্গিত:

যে ৯টি ভাগ্যবান কোম্পানিতে এই শক্তিশালী বুলিশ সিগন্যালগুলো দেখা গেছে, সেগুলো হলো:

এবি ব্যাংক

গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক

আইএফআইসি ব্যাংক

এনআরবিসি ব্যাংক

প্রিমিয়ার ব্যাংক

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক

ফিনিক্স ফাইন্যান্স

ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস

রিংশাইন টেক্সটাইল

চলুন, এই তিনটি টেকনিক্যাল সিগন্যালের গুরুত্ব এবং তাদের সম্মিলিত বার্তা বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

১. মুভিং এভারেজ: স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী উত্থানের পূর্বাভাস

মুভিং এভারেজ একটি শেয়ারের নির্দিষ্ট সময়ের গড় মূল্য নির্দেশ করে। ট্রেডারদের কাছে ৫০ দিনের এবং ২০০ দিনের মুভিং এভারেজ সবচেয়ে জনপ্রিয়।

স্বল্পমেয়াদী গতি: যখন কোনো শেয়ারের মূল্য তার ৫০ দিনের মুভিং এভারেজের উপরে অবস্থান করে, তখন এটিকে স্বল্পমেয়াদী বুলিশ বা উত্থানের সংকেত ধরা হয়।

দীর্ঘমেয়াদী দৃঢ়তা: আর যদি শেয়ারের মূল্য তার ২০০ দিনের মুভিং এভারেজের উপরে থাকে, তবে তা দীর্ঘমেয়াদে একটি শক্তিশালী এবং স্থিতিশীল অবস্থানের ইঙ্গিত দেয়।

এই ৯টি কোম্পানির বেশিরভাগ শেয়ারে বর্তমানে ইতিবাচক মুভিং এভারেজ দেখা যাচ্ছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ারের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনছে।

২. MACD: বাজারের শক্তিশালী মোমেন্টাম ও কেনার চাপ

MACD (মুভিং এভারেজ কনভারজেন্স ডাইভারজেন্স) হলো বাজারের ট্রেন্ড ও মোমেন্টাম বোঝার জন্য একটি পরীক্ষিত টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর।

পজিটিভ ক্রসওভার: MACD লাইন যখন তার সিগন্যাল লাইনকে নিচের দিক থেকে উপরের দিকে অতিক্রম করে (পজিটিভ ক্রসওভার), তখন এটি একটি শক্তিশালী কেনার ইঙ্গিত হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি শেয়ারে নতুন করে ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়ার লক্ষণ।নেগেটিভ ক্রসওভার: এর বিপরীতে, যদি MACD লাইন সিগন্যাল লাইনের নিচে নেমে যায়, তবে তা বিক্রির সংকেত দেয়।

সুখবর হলো, এই ৯টি কোম্পানির শেয়ারের MACD চার্টে শক্তিশালী পজিটিভ ক্রসওভার দেখা গেছে, যা আগাম আপট্রেন্ডের স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করছে।

৩. এঙ্গালফিং প্যাটার্ন: ট্রেন্ড পরিবর্তনের নির্ভরযোগ্য সংকেত

এঙ্গালফিং ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্নকে অন্যতম নির্ভরযোগ্য রিভার্সাল সিগন্যাল হিসেবে ধরা হয়, যা বাজারের বর্তমান ট্রেন্ড পরিবর্তনের পূর্বাভাস দেয়।

বুলিশ এঙ্গালফিং: যদি একটি বড় বুলিশ ক্যান্ডেল তার আগের দিনের একটি ছোট বিয়ারিশ ক্যান্ডেলকে সম্পূর্ণরূপে ঢেকে ফেলে, তবে এটিকে 'বুলিশ এঙ্গালফিং' বলা হয়। এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে বাজারে ক্রেতাদের চাপ বাড়ছে এবং শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে।বিয়ারিশ এঙ্গালফিং: এর বিপরীত ঘটনা ঘটলে (বড় বুলিশ ক্যান্ডেলকে ছোট বিয়ারিশ ক্যান্ডেল দিয়ে ঢেকে দেওয়া), তা দাম কমার সতর্কবার্তা দেয়।

এই ৯টি কোম্পানির শেয়ারে বুলিশ এঙ্গালফিং প্যাটার্ন দেখা গেছে, যা বিনিয়োগকারীদের কাছে একটি অত্যন্ত ইতিবাচক সিগন্যাল।বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ: সতর্কতা ও সুযোগের সমন্বয়

বাজার বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেন, "টেকনিক্যাল সিগন্যাল সবসময় শতভাগ নির্ভুল নাও হতে পারে। তবে, যখন তিনটি শক্তিশালী বুলিশ সিগন্যাল একসাথে আবির্ভূত হয়, তখন বিনিয়োগকারীদের সতর্কতা ও আগ্রহ উভয়ই বৃদ্ধি পায়।"

তারা আরও উল্লেখ করেন, এবি ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং এনআরবিসি ব্যাংকের মতো ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলোতে এই টেকনিক্যাল সিগন্যালগুলো এখন অনেক বেশি ইতিবাচক মনে হচ্ছে। তবে, ফিনিক্স ফাইন্যান্স, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস এবং রিংশাইন টেক্সটাইলের মতো অন্যান্য শেয়ারে সিগন্যালগুলো দেখা গেলেও, তাদের স্থিতিশীলতা কিছুটা অনিশ্চিত থাকতে পারে।

বিনিয়োগকারীদের জন্য চূড়ান্ত বার্তা:

মুভিং এভারেজ, MACD এবং এঙ্গালফিং প্যাটার্নের সম্মিলিত উপস্থিতি অনেক সময় শেয়ারের মূল্যে একটি বড় পরিবর্তনের পূর্বাভাস দেয়। তবে, যেকোনো বিনিয়োগের আগে কেবল টেকনিক্যাল চার্টের ওপর নির্ভর না করে, সংশ্লিষ্ট কোম্পানির মৌলিক আর্থিক অবস্থা, লভ্যাংশের ইতিহাস এবং বাজারের সামগ্রিক পরিস্থিতি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা অত্যাবশ্যক। সর্বদা মনে রাখবেন, জেনে-বুঝে বিনিয়োগ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

Disclaimer: এই সংবাদটি শুধুমাত্র তথ্য প্রদানের উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে এবং কোনো প্রকার বিনিয়োগের পরামর্শ নয়। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ। বিনিয়োগের পূর্বে একজন পেশাদার আর্থিক উপদেষ্টার সাথে পরামর্শ করার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।

আমিনুল ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ