ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ!

প্রবাসী ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৭ ১৫:৩৮:০৪
বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ!

ইরাকে কর্মী নিয়োগে নতুন দিগন্ত: বাংলাদেশিদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ!

বাংলাদেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর জন্য ইরাকের শ্রমবাজারে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। গত ১৩ ও ১৪ অক্টোবর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে, কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত এক যুগান্তকারী 'রেকর্ড অব ডিসকাশন' স্বাক্ষরিত হয়েছে, যেখানে ইরাক বাংলাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক কর্মী নিতে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে।বৈঠকের গভীরে: সহযোগিতা ও কর্মসংস্থান

এই দুই দিনব্যাপী ফলপ্রসূ আলোচনায়, উভয় পক্ষ শ্রম অভিবাসন প্রক্রিয়াকে আরও নিরাপদ, সুশৃঙ্খল এবং নিয়মিত করার ওপর জোর দেয়। বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল:

দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি: ইরাকে দক্ষ, আধা-দক্ষ এবং অদক্ষ শ্রমিকের চাহিদা পূরণে বাংলাদেশের কর্মীদের সুযোগ সৃষ্টি।

অনিয়মিত কর্মীদের বৈধকরণ: ইরাকে বর্তমানে কর্মরত অনিয়মিত বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়মিতকরণের একটি কার্যকর প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা।

চুক্তির মূল প্রতিপাদ্য: নিরাপদ অভিবাসনের নিশ্চয়তা

স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় যে প্রধান সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে, তা কর্মপ্রত্যাশীদের জন্য এক সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবে:

ভিসা প্রদানে ইরাকের ভূমিকা: ইরাক সরকার বাংলাদেশের কর্মীদের জন্য বিভিন্ন সেক্টরে ভিসা প্রদানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।

দূতাবাসের সত্যায়ন: ইরাকী নিয়োগকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত চাকরির চাহিদাপত্র বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক যাচাই ও সত্যায়ন করা হবে, যা জালিয়াতি প্রতিরোধে সহায়তা করবে।

চুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থান: কর্মীরা ইরাকে যাওয়ার পূর্বেই তাদের কর্মসংস্থান চুক্তি স্বাক্ষর করবে, যা তাদের অধিকার ও দায়িত্ব সুস্পষ্ট করবে।

তথ্য সংগ্রহ ও কর্মী প্রেরণ: ইরাকের কোন কোন খাতে কর্মীদের চাহিদা রয়েছে, সে বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করবে এবং সেই অনুযায়ী কর্মী পাঠানোর ব্যবস্থা নেবে।

অনিয়মিত কর্মীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা: ইরাকে অবস্থানরত অনিয়মিত বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়মিতকরণে ইরাকী প্রতিনিধিদল ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ইরাক সরকারের কাছে সাধারণ ক্ষমার আওতায় আবেদন করবে।

বার্ষিক পর্যালোচনা: কর্মী প্রেরণের প্রক্রিয়াকে মসৃণ রাখতে, যৌথ কমিটি প্রতি বছর অন্তত একবার বৈঠকে মিলিত হবে।

উচ্চপর্যায়ের উপস্থিতি ও স্বাক্ষর:

এই ঐতিহাসিক নথিতে বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আহমাদুল হক এবং ইরাকের পক্ষে মিডিয়া, আরব ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মহাপরিচালক কাজিম আবদুর রেজা খাইয়ুন আত-ওয়ানি স্বাক্ষর করেন। এ সময় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। এর পূর্বে, ইরাকি প্রতিনিধিদল প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

এই চুক্তিটি উভয় দেশের জন্য একটি উইন-উইন পরিস্থিতি তৈরি করবে বলে আশা করা হচ্ছে; যেখানে বাংলাদেশ তার জনশক্তি রপ্তানি বাড়াতে পারবে এবং ইরাক তাদের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রয়োজনীয় শ্রমশক্তি পাবে। এটি দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককেও আরও সুদৃঢ় করবে।

আমিনুল ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ