ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

৪০ ফুট গর্তেও খুঁজে না পেলে শেষ যে উপায়ে খোঁজা হবে শিশু সাজিদকে

সারাদেশ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১১ ১১:৪০:৪৯
৪০ ফুট গর্তেও খুঁজে না পেলে শেষ যে উপায়ে খোঁজা হবে শিশু সাজিদকে

গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে যাওয়া দুই বছর বয়সী শিশু সাজিদকে উদ্ধারে গত ২০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের অভিযান চলছে। উদ্ধারে প্রথম দফার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর বর্তমানে আরও গভীর খোঁড়াখুঁড়ি চালাচ্ছে উদ্ধারকারী দল। তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যাওয়ায় শিশুটিকে জীবিত উদ্ধারের আশা কমছে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা ও স্থানীয় জনতা।

রাজশাহীর জেলার একটি এলাকায় গতকাল বুধবার (সময় উল্লেখ করা নেই, তবে ভিডিওতে গতকাল দুপুর দেড়টা ও বিকাল চারটার তথ্য আছে) খেলার সময় পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে যায় দুই বছর বয়সী শিশু সাজিদ। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবেই এলাকাবাসীর অনানুষ্ঠানিক উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়। পরে গতকাল বিকাল ৪টা নাগাদ ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা পৌঁছালে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়।

প্রথম দফার ব্যর্থতা ও দ্বিতীয় দফার কৌশল পরিবর্তন

প্রাথমিকভাবে ফায়ার সার্ভিসের ধারণা ছিল, শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য নলকূপের পাশ দিয়ে প্রায় ৪০ ফুট গভীর একটি গর্ত খুঁড়ে সেখান থেকে একটি টানেল দিয়ে মূল গর্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে। সেই অনুযায়ী একটি বিশাল গর্ত খনন করা হয়। উদ্ধারকারী দল আশা করেছিল, সকাল ৭:৩০ থেকে ৮:০০টার মধ্যে হয়তো অভিযান শেষ হবে। তবে ৪০ ফুট গভীরতায় পৌঁছানোর পর ক্যামেরা নামিয়ে দেখা যায়, সেখানে খড় ও মাটি ছাড়া শিশুটির কোনো চিহ্ন নেই। এতে প্রথম দফার চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

বর্তমানে দ্বিতীয় বা তৃতীয় দফায় উদ্ধারকাজ চলছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা হাল ছাড়েননি। তারা এখন ওই খননকৃত ৪০ ফুটের গভীর গর্তের পাশ ঘেঁষে এস্কেভেটর (খননযন্ত্র) দিয়ে আরও মাটি কেটে নলকূপের গর্তের দিকে এগোচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, নলকূপটি প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ ফুট গভীর হতে পারে। আপাতত নলকূপের গা ঘেঁষে ২০ ফুটের একটি সাদা পাইপ নামিয়ে মেশিন দিয়ে মাটি কেটে অপসারণ করা হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানাচ্ছেন, তারা এখন আরও ১৫ ফুট গভীর পর্যন্ত খনন করবেন, যেখানে শিশুটি আটকে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেখানে পৌঁছানোর পরই সাজিদকে পাওয়া যাবে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

জনতার ভিড় ও আশঙ্কার মেঘ

উদ্ধার অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়ায় রাতভর এবং আজ সকালেও ঘটনাস্থলে হাজার হাজার উৎসুক জনতা ভিড় জমিয়েছেন। স্থানীয় মানুষজন ভিড় করে উদ্বিগ্নভাবে উদ্ধার অভিযানের দিকে চেয়ে আছেন এবং শিশুটির জন্য দোয়া করছেন। এত মানুষের ভিড় সামলাতে পুলিশ ও স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।

উদ্ধার অভিযান ২০ ঘণ্টার বেশি সময় পেরিয়ে যাওয়ায় হতাশা বাড়ছে। গতকাল বিকাল ৪টা থেকে শিশুটির কোনো নড়াচড়া বা ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি বলে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে। ফলে সাজিদকে জীবিত উদ্ধারের আশা ক্ষীণ হয়ে আসছে বলে অনেকেই মনে করছেন।

যদি খনন করেও শিশুটিকে পাওয়া না যায়, তাহলে ফায়ার সার্ভিসের কাছে একটি সনাতন পদ্ধতি আছে, যেখানে একটি ধাতব বা লোহার আঁকড়া ব্যবহার করে গর্তে প্রবেশ করিয়ে ভিকটিমের শরীরে বেঁধে টেনে তোলা যায়। তবে এই পদ্ধতির জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি শিশুটির পরিবারের অনুমতির প্রয়োজন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা প্রথমে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে সফলতার চেষ্টা করছেন।

উদ্ধার অভিযানে কোনো বিলম্ব যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে এসে তদারকি করছেন এবং সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। সবাই একইসাথে উৎকণ্ঠা ও আশা নিয়ে অপেক্ষা করছেন, যেন শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় ফিরে পাওয়া যায়।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ