ঢাকা, সোমবার, ৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

১৭ বছরের পথচলার ইতি:

বিদায়ী মঞ্চে তামিমের আবেগঘন বার্তা

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ ফেব্রুয়ারি ০৮ ১০:৩০:০২
বিদায়ী মঞ্চে তামিমের আবেগঘন বার্তা

বাংলাদেশ ক্রিকেটের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র তামিম ইকবাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তার অংশগ্রহণ নিয়ে চলা অনিশ্চয়তার মধ্যেই বিপিএলের মাঝপথে এ ঘোষণা দেন তিনি। শুক্রবার বিপিএলের ফাইনাল শেষে বিসিবি তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানায়। ক্রিকেট বোর্ডের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি, নিজের অবসরের পেছনের গল্পও শোনালেন এই অভিজ্ঞ ওপেনার।

বিদায়ের মঞ্চে কৃতজ্ঞতার বার্তা

বিপিএল ফাইনালে ফরচুন বরিশালের শিরোপা উৎসবের মধ্যেই আবেগঘন এক মুহূর্তের সাক্ষী হলেন তামিম ইকবাল। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট বোর্ড সবসময় খেলোয়াড়দের জন্য গার্জিয়ানের ভূমিকা পালন করে। আমার ক্ষেত্রেও তারা তাই করেছে। ১৭ বছর ধরে আমাকে সহযোগিতা করার জন্য বিসিবিকে ধন্যবাদ জানাই। আগের সভাপতিরাও আমাকে সব সময় সাপোর্ট করেছেন।’

সময়ের আগেই নেওয়া বিদায়

তামিম সবসময় চেয়েছিলেন যখন তিনি বিদায় নেবেন, তখনও যেন তার ভেতর খেলার সামর্থ্য থাকে। ‘আমি সবসময় আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম, যেন এমন সময় অবসর নিই যখন মানুষ বলবে— তুমি আরও কিছুদিন খেলতে পারতে। এই ইচ্ছাটাই ছিল আমার মনে।’

বিশ্বকাপের পর কঠিন সিদ্ধান্ত

২০২৩ বিশ্বকাপের আগে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তনের প্রস্তাব মেনে না নেওয়ায় স্কোয়াড থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন তামিম। লম্বা বিরতিতে থাকা, মাঠের বাইরে সময় কাটানো— এসবই তার অবসরের সিদ্ধান্তকে ত্বরান্বিত করেছে। ‘গ্যাপটা না হলে হয়তো আরও এক-দেড় বছর খেলতে পারতাম। কামব্যাক করলে হয়তো ভিন্ন কিছু হতে পারত, কিন্তু সবকিছু বিবেচনায় এনে আমি আগেভাগেই সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

তামিমের ছেলের অনুরোধও বিবেচনায় ছিল

তামিমের ছেলে ক্রিকেটের বড় ভক্ত এবং বাবাকে খেলতে দেখতে চেয়েছিল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে সিদ্ধান্ত নিতে তার সন্তানের চাওয়াও ভূমিকা রেখেছিল। ‘আমার ছেলে খুব চাইত আমি আরও কিছুদিন খেলি। কিন্তু বিশ্বকাপের পর দীর্ঘ বিরতিটা আমার সিদ্ধান্তে বড় প্রভাব ফেলেছে।’

বিসিবির বিশেষ সম্মাননা

বিদায়ী সংবর্ধনায় তামিমকে নিয়ে বিসিবির তৈরি ভিডিও জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখানো হয়। তার সতীর্থ ও কোচদের বক্তব্যে ভরা এই আবেগঘন আয়োজনে আপ্লুত হন তিনি। ‘বিসিবি যা করেছে, আমি কৃতজ্ঞ। তারা আমাকে যথাযথ সম্মান দিয়েছে, যা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।’

এক স্বপ্নময় ক্যারিয়ারের সমাপ্তি

২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া তামিম বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান। ৩৮৭ ম্যাচ, ৪৪৮ ইনিংস, ১৫,১৯২ রান, ২৫টি সেঞ্চুরি ও ৯৪টি ফিফটির মালিক এই কিংবদন্তি। ওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তামিম ২৪৩ ম্যাচে ৮,৩৫৭ রান করেছেন।

তামিম ইকবালের বিদায়ে শেষ হলো এক গৌরবময় অধ্যায়, কিন্তু তার নাম বাংলাদেশের ক্রিকেটে চিরকাল উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।

আপার জন্য বাছই করা কিছু নিউজ