ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

শিক্ষকদের বড় সুখবর দিলো সরকার

শিক্ষা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ০২ ১৭:৫১:১০
শিক্ষকদের বড় সুখবর দিলো সরকার

বাজেটে শিক্ষাখাতে বড় অগ্রাধিকার, সুখবর পাচ্ছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষকদের মুখে হাসি ফোটাতে যাচ্ছে প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট। শুধু সংখ্যার খেলা নয়—এবারের বাজেটে শিক্ষকদের স্বপ্ন, নিরাপত্তা ও পেশাগত সম্মানকে জায়গা দেওয়া হয়েছে বিশেষভাবে। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য বোনাস ও গ্রাচ্যুইটি বাড়ানোর প্রস্তাব, প্রশিক্ষণের বিস্তৃত পরিকল্পনা এবং বিশাল বাজেট বরাদ্দ—সব মিলে এটি যেন শিক্ষকদের জন্য এক বাস্তব আশ্বাস।

আজ সোমবার (২ জুন) বিকেলে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন বিটিভিতে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তার কণ্ঠে উচ্চারিত প্রতিটি শব্দ যেন একেকটি শিক্ষকের মনের আশা পূরণের প্রতিধ্বনি।

তিনি বলেন, “শিক্ষকদের মানবসম্পদ উন্নয়নকে বাজেটে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।” অর্থাৎ শুধু পাঠদান নয়, শিক্ষক নিজেই হবেন আধুনিক জ্ঞানে সমৃদ্ধ, আর্থিকভাবে স্থিতিশীল ও পেশাগতভাবে আত্মবিশ্বাসী। এ লক্ষ্যে বোনাস ও গ্রাচ্যুইটির পরিমাণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা তাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশার বাস্তব রূপ।

শিক্ষাব্যবস্থার কাঠামোগত উন্নয়ন নিয়েও বাজেট ভাষণে তুলে ধরা হয় বড় পরিকল্পনা। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীনে বাস্তবায়নাধীন ৬২টি প্রকল্পে প্রায় ১ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে জানানো হয়, গত এক বছরে উপবৃত্তি পেয়েছেন প্রায় ৬০ লাখ অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থী—যা ভবিষ্যতের আলোকবর্তিকা গড়ে তুলতে সহায়ক।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা খাতে বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ৪৭ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৩ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা বেশি। এই বরাদ্দ শুধু পরিসংখ্যান নয়, এটি এক বড় দায়বদ্ধতা—শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য একটি উন্নত, আধুনিক ও মানবিক শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি।

তিনি আরও বলেন, “শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করা হবে। প্রত্যেক স্তরের শিক্ষককেই প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে, যেন তারা যুগোপযোগী পাঠদান পদ্ধতিতে দক্ষ হন।”

বাজেট বক্তৃতার পরিসংখ্যানগত অংশেও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। এবারের বাজেটে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৯ শতাংশ। বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা পূরণে নির্ভর করতে হবে বৈদেশিক ঋণ, ব্যাংক ঋণ ও সঞ্চয়পত্রের উপর।

তবে অর্থনীতির জটিল হিসাবপত্রের ভেতর থেকেও শিক্ষকদের জন্য যে বার্তাটি সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক, সেটি হলো—তাদের সম্মান, নিরাপত্তা ও পেশাদারিত্বকে সরকার অবশেষে গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে। তাদের জীবনে এসেছে আশার নতুন সকাল।

এই বাজেট শুধু আর্থিক নথি নয়, এটি যেন হয়ে উঠেছে শিক্ষকদের জন্য এক স্বীকৃতির দলিল—যেখানে তাঁদের পরিশ্রম, তাঁদের অবদান আর তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনার প্রকাশ স্পষ্ট। এখন অপেক্ষা বাস্তবায়নের, যেন এই বাজেটের প্রতিটি অঙ্গীকার পরিণত হয় শিক্ষাক্ষেত্রে বাস্তব পরিবর্তনে।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ