ইরাক বনাম দক্ষিণ কোরিয়া — প্রিভিউ, সম্ভাব্য একাদশ ও দলীয় খবর

নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বসরা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে গ্রুপ বি-তে মুখোমুখি হচ্ছে ইরাক ও দক্ষিণ কোরিয়া। দুটি দলই গ্রুপের শীর্ষ চার অবস্থানে রয়েছে এবং এখনও বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার আশা বাঁচিয়ে রেখেছে।

ম্যাচ প্রিভিউ

গ্রুপ বি-তে আর মাত্র দুটি ম্যাচ বাকি, এবং ইরাক এখনও ১৯৮৬ সালের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার লড়াইয়ে রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক ফর্মে কিছুটা ভাটা পড়ায় শীর্ষ দুইয়ে জায়গা করে নেওয়া কঠিন হয়ে উঠেছে।

প্রথম তিনটি ম্যাচ থেকে সাত পয়েন্ট সংগ্রহ করার পর (২ জয়, ১ ড্র), পরবর্তী পাঁচ ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে ইরাক (২ ড্র, ২ হার)। সর্বশেষ পর্বে তারা ১-০ ব্যবধানে ওমানকে হারালেও এরপর কুয়েতের সঙ্গে ২-২ ড্র এবং ফিলিস্তিনের কাছে ২-১ ব্যবধানে হারে।

বর্তমানে ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে ৫৯ নম্বরে থাকা ইরাক গ্রুপ বি-তে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে এবং পরবর্তী রাউন্ড নিশ্চিত করতে তাদের বাকি দুই ম্যাচ থেকে মাত্র এক পয়েন্ট প্রয়োজন।

গ্যাহাম আর্নল্ডের দল দ্বিতীয় স্থানে থেকে সরাসরি বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করতে চায়, তবে জর্ডানের চেয়ে মাত্র এক পয়েন্ট পিছিয়ে থাকায় তাদের শেষ ম্যাচটি, যেখানে প্রতিপক্ষ হবে জর্ডান, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

ইরাক তাদের শেষ তিন ম্যাচেই দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে হেরেছে এবং এবার যদি আবারও হারতে হয়, এবং জর্ডান ওমানের বিপক্ষে জয় পায়, তাহলে ইরাকের শীর্ষ দুইয়ের স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থা

অন্যদিকে, দক্ষিণ কোরিয়া যদি বৃহস্পতিবার ইরাককে হারাতে পারে এবং জর্ডান ওমানের বিপক্ষে জয় না পায়, তাহলে তারা গ্রুপ বি-তে শীর্ষস্থান নিশ্চিত করে ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট কেটে ফেলবে, যেমনটি করেছে জাপান ও ইরান।

হেড কোচ হং মিয়াং-বে’র অধীনে এখনও পর্যন্ত অপরাজিত দক্ষিণ কোরিয়া (৪ জয়, ৪ ড্র) ১৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা জর্ডানের চেয়ে তিন পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছে।

তবে শেষ তিন ম্যাচেই ১-১ গোলে ড্র করেছে দক্ষিণ কোরিয়া—প্যালেস্টাইন, ওমান এবং জর্ডানের বিপক্ষে। যদিও গত বছর অক্টোবর মাসে ইরাককে ঘরের মাঠে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়েছিল তারা।

বর্তমানে ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে ২৩ নম্বরে থাকা দক্ষিণ কোরিয়া ইরাকের বিপক্ষে সর্বশেষ ১০ ম্যাচে অপরাজিত রয়েছে (৬ জয়, ৪ ড্র)। ১৯৭২ সালের এশিয়ান কাপ ফাইনালে ১-০ গোলে পরাজয়ই ছিল শেষ হার।

দলীয় খবর

ইরাক:

ডান-ব্যাক মুস্তাফা সাদুন ইনজুরির কারণে স্কোয়াড থেকে ছিটকে গেছেন। এছাড়া অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার আমজাদ আতওয়ান (৮৪ ক্যাপ) এবং হুসেইন আলি আল-সাঈদি (৫০ ক্যাপ) প্রাথমিক স্কোয়াডে থাকলেও চূড়ান্ত দলে রাখা হয়নি।

ইরাকের ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ গোলদাতা (৩২ গোল) আয়মেন হুসেইন দলকে নেতৃত্ব দেবেন এবং তার পাশে থাকতে পারেন ইউসুফ আমিন ও কোমোর আলি জাসিম। রেবিন সুলাকা এই ম্যাচে মাঠে নামলে এটি হবে তার ৫০তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ।

দক্ষিণ কোরিয়া:

দলের প্রধান তারকা হলেন টটেনহ্যামের অধিনায়ক ও ইউরোপা লিগ জয়ী সন হিউং-মিন, যিনি ১৩৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। আরও চারটি ম্যাচ খেললেই তিনি দেশের সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলা খেলোয়াড় হয়ে যাবেন।

সন খেলবেন সেন্টার ফরোয়ার্ড পজিশনে, তার পেছনে থাকবেন উলভারহ্যাম্পটনের হোয়াং হি-চান, সেলটিকের ইয়াং হিউন-জুন এবং পিএসজির লি কাং-ইন (চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী)।রক্ষণভাগে থাকবে চো ইউ-মিন ও কাওন কিয়ং-ওনের জুটি, কারণ বায়ার্ন মিউনিখের কিম মিন-জায়কে এই স্কোয়াডে রাখা হয়নি।

সম্ভাব্য একাদশ

ইরাক (৩-৪-৩):

বাসিল; সুলাকা, ইউনিস, হাশেম; বায়েশ, আল-আম্মারি; রাশিদ, ইয়াহিয়াল; আমিন, জাসিম; হুসেইন

দক্ষিণ কোরিয়া (৪-২-৩-১):

জো; সিওল, চো, কাওন, টি. লি; আই. হোয়াং, ওয়াই. পার্ক; ইয়াং, কে. লি, এইচ. হোয়াং; সন

এই ম্যাচটি হতে চলেছে একদম হাড্ডাহাড্ডি, যেখানে দুই দলের সামনে বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার সুযোগ রয়েছে। দর্শকদের জন্য এটি হতে পারে এক উত্তেজনাপূর্ণ লড়াই।

জামিরুল ইসলাম/