ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

বেগম জিয়ার এক কথায় বদলে গেলো দেশের রাজনীতির ছক

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ১৪ ০৯:২৫:৪৯
বেগম জিয়ার এক কথায় বদলে গেলো দেশের রাজনীতির ছক

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার একমাত্র সিদ্ধান্ত বদলে দিয়েছে দেশের রাজনীতির গতিপথ। যখন আন্দোলনের প্রস্তুতিতে উত্তপ্ত হতে যাচ্ছিল রাজপথ, তখন বেগম জিয়ার এক কথায় থেমে গেছে সব উত্তেজনা। সংঘাতের বদলে আলোচনা—এই নির্দেশনায় বিএনপির অবস্থানে এসেছে নাটকীয় পরিবর্তন।

ঈদের ঠিক আগ মুহূর্তে দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা যখন আশঙ্কা করছিলেন, বিএনপির আন্দোলন আবারও জনদুর্ভোগ ডেকে আনতে পারে, ঠিক তখনই বেগম জিয়া দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, এখন সংঘাত নয়, বরং আলোচনার মাধ্যমেই দাবি আদায়ের পথ খুঁজতে হবে।

রাজনীতিতে দূরদর্শী কৌশলের প্রতিফলন

বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, বেগম জিয়ার নির্দেশেই দলের সবস্তরের নেতাকর্মীদের আন্দোলনের প্রস্তুতি থেকে সরে আসতে বলা হয়েছে। তার এই সিদ্ধান্তের পরপরই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সৌজন্য সাক্ষাৎকে স্বাগত জানায় দল। রাজনৈতিক অঙ্গনে এই সাক্ষাৎকে ইতিবাচক বার্তা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, বেগম খালেদা জিয়া আবারও দেখিয়ে দিয়েছেন—তিনি কেবল একজন রাজনীতিক নন, বরং একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক, যিনি জনস্বার্থকে প্রাধান্য দেন সবকিছুর উপরে। তার সিদ্ধান্ত দেশের রাজনীতিকে সংঘাতের দোলাচল থেকে আলোচনার টেবিলে নিয়ে এসেছে।

আন্দোলনের আগুন নিভিয়ে দিলেন নেত্রী

দলীয় সূত্র বলছে, বিএনপির ভেতরে যখন একদল মাঠে নামার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন ঈদের দিন (২০ জুন) রাতে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে একান্ত আলোচনায় বেগম জিয়া বলেন—“প্রকাশ্যে সংঘাতে না গিয়ে, দাবি থাকলে তা আলোচনা করে মেটাতে হবে।” তার এই কথাতেই আন্দোলনের উত্তেজনায় ঘি পড়া থেমে যায়।

এই একটি সিদ্ধান্তই প্রমাণ করে, কিভাবে বেগম জিয়া দেশের রাজনীতিকে উত্তেজনার দোলনা থেকে স্থিতিশীলতার পথে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। আন্দোলনের পথ থেকে সরে এসে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের কৌশল—এটা বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় এক সাহসী ও প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত।

নির্যাতনের অতীত, দায়িত্বশীল বর্তমান

২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বেগম জিয়াকে যে পরিমাণ রাজনৈতিক নির্যাতনের সম্মুখীন হতে হয়েছে, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। মামলার ঘেরাটোপ, কারাবাস, সন্তানহারা শোক, চিকিৎসা বঞ্চনা—সবকিছু পেরিয়েও তিনি কখনো প্রতিশোধপরায়ণ হননি। বরং দেশের স্বার্থে তার রাজনৈতিক অবস্থান সবসময়ই ছিল ধৈর্য ও দৃঢ়তায় পূর্ণ।

রাজনীতিতে তার এই প্রজ্ঞা আর আত্মনিয়ন্ত্রণই তাকে এনে দিয়েছে সাধারণ মানুষের সম্মান ও ভালোবাসা। ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে অনেক দূরে থাকলেও আজও তিনি রাজনৈতিক ভারসাম্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।

রাজনৈতিক সংঘাত যখন নৈমিত্তিক হয়ে উঠছিল, তখন বেগম খালেদা জিয়ার একটি নির্দেশনা আবারও দেখিয়ে দিল—রাজনীতি শুধু প্রতিযোগিতা নয়, বরং দায়িত্বশীলতা ও বিবেকের নাম। তার নির্দেশনায় শান্ত হয়েছে উত্তপ্ত পরিবেশ, আলোচনার পথে ফিরেছে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া।

দেশের মানুষ আজ অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়। সেই লক্ষ্যে রাজপথ নয়, আলোচনাই যদি সমাধানের পথ হয়—তবে বেগম জিয়ার এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী এবং ঐতিহাসিক বলেই বিবেচিত হবে।

FAQ (সাধারণ জিজ্ঞাসা ও উত্তর):

প্রশ্ন: বেগম খালেদা জিয়ার কোন সিদ্ধান্ত দেশের রাজনীতি পাল্টে দিয়েছে?

উত্তর: আন্দোলনের পথ পরিহার করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার নির্দেশ দিয়ে তিনি দেশের রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা ফেরানোর দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

প্রশ্ন: এই সিদ্ধান্তে বিএনপির অবস্থানে কী পরিবর্তন এসেছে?

উত্তর: বিএনপি সংঘাতের বদলে আলোচনাকে গুরুত্ব দিচ্ছে, এবং তা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ সুগম করতে পারে।

প্রশ্ন: তারেক রহমানের সাক্ষাৎ কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল?

উত্তর: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তার সাক্ষাৎ রাজনৈতিক সমঝোতার প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

প্রশ্ন: বেগম জিয়ার অতীত নির্যাতনের প্রেক্ষাপটেও তিনি প্রতিশোধপরায়ণ হননি কেন?

উত্তর: তার রাজনৈতিক দর্শন হলো জনগণের কল্যাণ; তাই প্রতিশোধ নয়, বরং শান্তিপূর্ণ সমাধানই তিনি বরাবর প্রাধান্য দিয়েছেন।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ