ঢাকা, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

ইসলামী ব্যাংকের ১০ কর্মকর্তার বিদেশ যাত্রায় আদালতের বাঁধা

অর্থনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ২৪ ১৬:১৭:০৭
ইসলামী ব্যাংকের ১০ কর্মকর্তার বিদেশ যাত্রায় আদালতের বাঁধা

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের অন্যতম বেসরকারি ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড—যেখানে আস্থার সঙ্গে জমা হয় কোটি টাকার আমানত, সেখান থেকেই নিয়ম ভেঙে বেরিয়ে গেছে হাজার কোটি টাকার ঋণ! আর সেই বিতর্কিত ঋণ বিতরণের পেছনে থাকা ১০ জন সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তার বিদেশযাত্রায় আজ আদালত কড়াভাবে 'না' বলেছে।

এস আলম গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে সন্দেহজনকভাবে ঋণ প্রদান, অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান চলছে। এই তদন্তের মাঝেই দেশ ছাড়তে পারেন—এমন আশঙ্কায় দুদকের পক্ষ থেকে আদালতে একটি আবেদন করা হয়। আবেদন যাচাই করে মঙ্গলবার (২৪ জুন) ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এই নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।

কারা কারা রয়েছেন নিষেধাজ্ঞার তালিকায়?

বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা হলেন—

মোহাম্মদ মনিরুল মাওলা, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)

মিফতাহ উদ্দিন

মোহাম্মদ ইহসানুল ইসলাম

মোহাম্মদ সিরাজুল কবির

মুহাম্মদ কায়সার আলী

তাহের আহমেদ চৌধুরী

মোহাম্মদ মোস্তাক আহমেদ

হোসেন মোহাম্মদ ফয়সাল

আহমেদ জুবায়েতুল হক

এস. এম. তানভির হাসান

দুদকের উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক স্বাক্ষরিত আবেদনে জানানো হয়, “এই কর্মকর্তারা দেশের বাইরে চলে গেলে তদন্তে বড় ধরনের বাধা সৃষ্টি হতে পারে। অভিযোগ গুরুতর—তাদের সহযোগিতায় এস আলমের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো পেয়েছে বিপুল অঙ্কের ‘নিয়ম বহির্ভূত’ ঋণ।"

জেলেও পাঠানো হয়েছে একজনকে

এই ঘটনায় আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে আদালত। গতকাল (২৩ জুন) একই আদালত দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলায় সাবেক এমডি মোহাম্মদ মনিরুল মাওলাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কেন এত উত্তেজনা এই মামলায়?

গত কয়েক বছরে ব্যাংকিং খাতে অব্যবস্থাপনা, দায়মুক্তি ও করপোরেট প্রভাবশালী গ্রুপগুলোর আধিপত্য নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। এর মধ্যে এস আলম গ্রুপের নাম উঠে আসা এবং ইসলামী ব্যাংকের সংশ্লিষ্টতা—সাধারণ আমানতকারীদের মাঝেও প্রশ্ন তৈরি করেছে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, অনুসন্ধানের জন্য ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, এবং প্রাথমিক পর্যবেক্ষণেই মিলেছে বেশ কিছু নথিভিত্তিক অসঙ্গতি।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা শুধু ইসলামী ব্যাংক নয়, পুরো ব্যাংকিং খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রশ্নকে সামনে এনে দিয়েছে। বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, তবে এই প্রক্রিয়া যেন থেমে না যায়—সেটাই এখন দেশের মানুষ চায়।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ