ঢাকা, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২

১০ কোম্পানির দ্বিতীয় প্রান্তিকের আয় প্রতিবেদন প্রকাশ

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুলাই ৩০ ২২:১৬:৫১
১০ কোম্পানির দ্বিতীয় প্রান্তিকের আয় প্রতিবেদন প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কয়েকটি ব্যাংক ও বীমা খাতভুক্ত কোম্পানি ২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) বেশ কয়েকটি কোম্পানির আয় ও মুনাফা বৃদ্ধির পাশাপাশি কিছু কোম্পানির পারফরম্যান্সে নেতিবাচক প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে।

পূবালী ব্যাংক লিমিটেড

পূবালী ব্যাংক চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি-জুন মেয়াদে সমন্বিত ইপিএস দেখিয়েছে ৪.৪৪ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩২ শতাংশ বেশি (২০২৪ সালে ছিল ৩.৩২ টাকা)।

এই সময় শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ৩৮.৫৪ টাকা, যা গত বছরের তুলনায় সামান্য উন্নত (৩৮.৩৮ টাকা)।

৩০ জুন ২০২৫ তারিখে কোম্পানির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৪৪.১৭ টাকা।

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড

২০২৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটির ইপিএস কমে দাঁড়িয়েছে ০.৪৩ টাকা, যেখানে আগের বছর একই সময়ে ছিল ১.৫০ টাকা।

ছয় মাসের ইপিএস হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছর জানুয়ারি-জুনে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ২.৪৭ টাকা, যা গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম (২.৫৯ টাকা)।

শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো বেড়ে হয়েছে ১৫.৩৩ টাকা, যা আগের বছর ছিল ১২.৪৮ টাকা।

শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য বর্তমানে ২২.৩৩ টাকা।

সিকদার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড

২০২৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস কমে ০.১৪ টাকা হয়েছে, যেখানে গত বছর ছিল ০.২২ টাকা।

ছয় মাসে কোম্পানির ইপিএস দাঁড়িয়েছে ০.৩৫ টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় কম (০.৪৪ টাকা)।

তবে ক্যাশ ফ্লো উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে ০.৩৪ টাকা হয়েছে, যেখানে আগের বছর ছিল মাত্র ০.০২ টাকা।

৩০ জুন ২০২৫ অনুযায়ী, কোম্পানির এনএভি দাঁড়িয়েছে ১০.০৮ টাকা।

ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ লিমিটেড

এই কোম্পানির দ্বিতীয় প্রান্তিকের ইপিএস হয়েছে ০.৭৮ টাকা, যা গত বছরের (০.৭৩ টাকা) তুলনায় কিছুটা বেশি।

জানুয়ারি-জুন মেয়াদে ইপিএস হয়েছে ১.৫৮ টাকা, যা আগের বছরের (১.৪৫ টাকা) চেয়ে উন্নত।

শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লোও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.০৬ টাকা, যেখানে আগের বছর ছিল ০.৩২ টাকা।

শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য এখন ২৪.২১ টাকা।

পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড

দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ০.৪৫ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় সামান্য কম (০.৪৮ টাকা)।

ছয় মাসে ইপিএস হয়েছে ০.৭৮ টাকা, আগের বছর ছিল ০.৯০ টাকা।

তবে ক্যাশ ফ্লো বেড়ে দাঁড়িয়েছে ০.৭০ টাকা, যেখানে আগের বছর ছিল ০.৫৪ টাকা।

৩০ জুন ২০২৫ অনুযায়ী, এনএভি দাঁড়িয়েছে ১৪.৭৯ টাকা।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক

দ্বিতীয় প্রান্তিকে এই ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৯ টাকা ২৪ পয়সা, যেখানে আগের বছর একই প্রান্তিকে ইপিএস ছিল ৪৪ পয়সা।

অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন, ২০২৫) শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ১ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ৭৪ পয়সা ইপিএস।

ক্যাশ ফ্লোও উল্লেখযোগ্যভাবে নেতিবাচক—মাইনাস ২২ টাকা ৭ পয়সা, যেখানে গত বছর তা ছিল ৮ টাকা ২২ পয়সা।

৩০ জুন ২০২৫ তারিখে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (NAV) দাঁড়িয়েছে মাত্র ২ টাকা ৩৯ পয়সা।

মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক

এই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩২ পয়সা, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৩৮ পয়সা।

ছয় মাসে ইপিএস অপরিবর্তিত—১ টাকা ১৮ পয়সা।

তবে ক্যাশ ফ্লো কমেছে: বর্তমানে ২ টাকা ৯৭ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ২১ টাকা ৯১ পয়সা।

শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ২৭ টাকা ২৬ পয়সা।

এসবিএসি ব্যাংক

এসবিএসি ব্যাংকের দ্বিতীয় প্রান্তিকের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৫ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ২৩ পয়সা।ছয় মাসের হিসাবে ইপিএস ১৪ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ৪৬ পয়সা।

৩০ জুন পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য ১৩ টাকা ৭২ পয়সা।

এনআরবি ব্যাংক

এ প্রান্তিকে এনআরবি ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ২৯ পয়সা, যেখানে আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ১৩ পয়সা।

ছয় মাসে কোম্পানিটির লোকসান দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ২৪ পয়সা, গত বছর একই সময়ে ছিল ১৫ পয়সা ইপিএস।

ক্যাশ ফ্লোও হ্রাস পেয়েছে—এবার ৪ টাকা ৭৯ পয়সা, যেখানে গত বছর ছিল ১৩ টাকা ৬৮ পয়সা।NAV দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৪৫ পয়সা।

এক্সিম ব্যাংক

এক্সিম ব্যাংকের ছয় মাসে সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ১৩ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ১৪ পয়সা।শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো মাইনাস ১২ টাকা ৭১ পয়সা (গত বছর ৫ পয়সা)।

৩০ জুন ২০২৫ পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য ২১ টাকা ৮৪ পয়সা।

বাটা সু কোম্পানি

চামড়া খাতের এই কোম্পানিটি দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান করেছে ৭ টাকা ৫ পয়সা, যেখানে আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ১৩ টাকা ৭৩ পয়সা।

ছয় মাসে ইপিএস দাঁড়িয়েছে ১৯ টাকা ৮৭ পয়সা (পূর্বে ছিল ২৭ টাকা ১৬ পয়সা)।তবে ক্যাশ ফ্লো বেড়েছে—২৯ টাকা ৩৫ পয়সা (পূর্বে ১১ টাকা ৫০ পয়সা)।শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য ২২৯ টাকা ৬০ পয়সা।

ব্যাংক খাতে একাধিক কোম্পানি চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে চাপে রয়েছে। বিশেষ করে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও এনআরবি ব্যাংক বড় ধরনের লোকসানে পড়েছে। অন্যদিকে মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থেকেছে। চামড়া খাতের বাটা সু কোম্পানি আয় কমলেও ক্যাশ ফ্লো বাড়িয়েছে, যা তার ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দেয়।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ