ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২

৩৮৯ কোটি টাকার ঋণে এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ক্রোক

অর্থনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৪ ১৮:৩৩:২৫
৩৮৯ কোটি টাকার ঋণে এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ক্রোক

ব্যাংক এশিয়ার দায়ের করা মামলায় অর্থঋণ আদালতের যুগান্তকারী আদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংক এশিয়ার প্রায় ৩৮৯ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ক্রোক (জব্দ) করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার ৫ নম্বর অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান আজ সোমবার (৪ আগস্ট) এ আদেশ দেন।

এক বছরের পুরনো ঋণ, খেলাপির পথে এক্সিম

মামলার নথিপত্র অনুযায়ী, এক বছর আগে তারল্য সংকটে থাকা এক্সিম ব্যাংক ব্যাংক এশিয়ার কাছ থেকে ঋণ নেয় ৩৮৮ কোটি ৯৫ লাখ ২৬ হাজার ৯৪৪ টাকা। নির্ধারিত সময় পার হলেও প্রতিষ্ঠানটি কোনো অর্থ ফেরত দেয়নি। ফলে এই ঋণ বর্তমানে ‘খেলাপি’ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। এতে আর্থিক ঝুঁকিতে পড়ে ব্যাংক এশিয়া।

আদালতের নজরে আসে অনিরাপদ ঋণের বাস্তবতা

বাদীপক্ষ শুনানিতে জানায়, এক্সিম ব্যাংকের এই খেলাপি ঋণের বিপরীতে কোনো দায়বদ্ধ সম্পদ নেই। তবে যে ভবনে এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় অবস্থিত, সেটিই একমাত্র দৃশ্যমান স্থাবর সম্পদ।

আদালতের কাছে তারা আরও বলেন, ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থা নাজুক হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠানটিকে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার উদ্যোগ নিচ্ছে। এ অবস্থায় প্রধান কার্যালয়টি জব্দ না করলে ব্যাংক এশিয়ার এই বিপুল অঙ্কের অর্থ আদায় অনিশ্চিত হয়ে যাবে।

বিচারকের রায়: কারণ দর্শাও, না হলে স্থায়ী ক্রোক

শুনানি ও নথি পর্যালোচনার পর বিচারক মুজাহিদুর রহমান এক্সিম ব্যাংককে ১৫ দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন—কেন তাদের প্রধান কার্যালয় ক্রোক করা হবে না। পাশাপাশি তিনি আদেশ দেন, কারণ দর্শানো বা আপত্তি না দেওয়া পর্যন্ত ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় অস্থায়ীভাবে জব্দ থাকবে।

পরবর্তী শুনানি ২১ আগস্ট

এই মামলায় এক্সিম ব্যাংকের জবাব দাখিলের জন্য ২১ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত। ওইদিন পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

পটভূমি বিশ্লেষণ

বাংলাদেশে একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় জব্দের ঘটনা অত্যন্ত বিরল। বিষয়টি ব্যাংক খাতে আর্থিক নিয়ন্ত্রণ, দায়বদ্ধতা এবং খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের আইনি পদক্ষেপ ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে এটি একই সঙ্গে খেলাপি ঋণের প্রকৃত পরিস্থিতির ভয়াবহতাও তুলে ধরে।

আল-আমিন ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ