ঢাকা, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২

উপদেষ্টা আসিফের বাবা বিল্লাল মাস্টারকে গ্রেপ্তার করা হোক, সবকিছু বেরিয়ে যাবে

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৮ ২১:৫৯:৩৯
উপদেষ্টা আসিফের বাবা বিল্লাল মাস্টারকে গ্রেপ্তার করা হোক, সবকিছু বেরিয়ে যাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার বাঙ্গরা বাজার থানা এলাকায় একই পরিবারের চারজনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একমাত্র মেয়ে নাজমুন নাহার আঁখি এক সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিজের ও তার পরিবারের ওপর হওয়া বর্বরতার বিচার চেয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, ঘটনার পর দুই মাস পেরিয়ে গেলেও মূল আসামিদের এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি এবং তিনি ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আঁখি জানান, তাদের পরিবারের ওপর এই হামলা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। তিনি বলেন, "আমাদের ঘটনার পর পর যারা আপনাদের মতন সাংবাদিকদের সামনে বা মিডিয়ারের সামনে যে বক্তব্যগুলো দিয়েছেন, যেমন মোস্তফা (করিবাড়ি), তিনি বলেছেন যে আমরা গতকালকে সন্ধ্যায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই পরিবারকে একদম শেষ করে ফেলব।"

আঁখি তার বক্তব্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে বলেন, হামলার দিন তিনি ও তার ছোট বোন প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে পুলিশের সাহায্য চেয়েও পাননি। তিনি বলেন, "বাঙ্গরা থানা থেকে করিবাড়ি আসতে সর্বোচ্চ, একদম যদি যানজটও থাকে, ১৫ মিনিট সময় লাগে। সে জায়গার মধ্যে ছয়টার পর পর ঘটনা শুরু, তারা নয়টার দিকে পুলিশ আসে।" তিনি আরও বলেন, এই দীর্ঘ সময়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে না পৌঁছানোয় তাদের পরিবারের সবাইকে হত্যা করা সম্ভব হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের জন্য তিনি সরাসরি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও তার বাবা বিল্লাল মাস্টারকে দায়ী করেন। আঁখি বলেন, "আমার প্রথম দাবি হচ্ছে উপদেষ্টা আসিফের বাবা বিল্লাল মাস্টারকে গ্রেপ্তার করা। উনাকে গ্রেপ্তার হোক, সবকিছু বেরিয়ে যাবে।"

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আঁখির বাবাও বক্তব্য দেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোর করে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। তাকে বলতে বাধ্য করা হয়েছিল যে, আসিফ মাহমুদ ও তার বাবা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।

তিনি বলেন, "আমাকে উঠাইয়া নিয়ে ওরা বলছে যে তুমি এরকম একটা বক্তব্য দাও, আসিফ মাহমুদ, আসিফ মাহমুদের বাবা এটাতে জড়িত না।"

আঁখি আরও জানান, তার পরিবারকে মিথ্যা মাদক মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তার মা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং একজন নারী হওয়ায় তাকে অন্য কোনো মামলায় জড়ানো সহজ ছিল না, তাই মাদক মামলার নাটক সাজানো হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

কান্নায় ভেঙে পড়ে আঁখি বলেন, "আমার স্বজনরা হারাইছি আমি... একটা পরিবারে মা, ভাই, বোন যদি চলে যায়, আর কে থাকে?" তিনি জানান, এই ঘটনায় সাতটি শিশু এতিম হয়েছে এবং তাদের সবার দায়িত্ব এখন তার ওপর। তিনি নিজের শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়ে বলেন, তার মাথায় ৭২টি, হাতে ১৬টি, পায়ে ২০টি এবং কোমরে ২৬টি সেলাই পড়েছে।

বিচার ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, "আমি যদি বাংলাদেশে বিচার পাই, একমাত্র আপনাদের দ্বারা আমি বিচারটা পাবো।" তিনি আরও বলেন, "যেখানে উপদেষ্টা এটার সাথে জড়িত, তার বাবা জড়িত, আপনারা সত্যটা যাচাই করেন।"

এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে এবং নিজের ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তিনি প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।

আল-আমিন ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ