ঢাকা, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৬ আশ্বিন ১৪৩২

স্টেট ডিফেন্স: 'শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি, দেশ ছাড়তে বাধ্য হন'- নতুন মোড়!

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১৫:৩২:৩৯
স্টেট ডিফেন্স: 'শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি, দেশ ছাড়তে বাধ্য হন'- নতুন মোড়!

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করেননি, বরং তাকে ভারতে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল—এমন বিস্ফোরক দাবি করেছেন শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত (স্টেট ডিফেন্স) আইনজীবী মো. আমির হোসেন। আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে জেরার সময় তিনি এই বক্তব্য দেন। জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চলা বিচারে ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে নাহিদ দুই দিন ধরে সাক্ষ্য দিচ্ছিলেন।

সাক্ষী নাহিদ ইসলামের জবানবন্দিতে দেওয়া বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন আমির হোসেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট সরকার পতনের লক্ষ্যে ডাকা এক দফা কর্মসূচি ছিল সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ। এই আন্দোলনের পেছনে দেশি-বিদেশি শক্তির ইন্ধন ছিল এবং সেই সূত্রেই ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

স্টেট ডিফেন্সের এই বক্তব্যে আপত্তি জানায় প্রসিকিউশন। তাদের মতে, মামলার প্রেক্ষাপটে এমন আলোচনা অপ্রাসঙ্গিক এবং কেবল মামলা সম্পর্কিত বিষয়গুলোতেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত। জবাবে শেখ হাসিনার আইনজীবী বলেন যে, ড. ইউনূসকে নিয়ে মন্তব্য করা তার উদ্দেশ্য নয়, তবে সাক্ষীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এই প্রসঙ্গ টানতে হচ্ছে।

আমির হোসেন দাবি করেন, শেখ হাসিনা ও কামাল নির্দোষ। তিনি বলেন, আন্দোলন দমনের জন্য হেলিকপ্টার বা মারণাস্ত্র ব্যবহারের কোনো নির্দেশ শেখ হাসিনা দেননি। বরং তিনি জনগণের জানমাল ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছেন। আইনজীবী আরও বলেন যে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়নি, তাই এই আসামিরা কোনো অপরাধের জন্য দায়ী নন।

তবে, আমির হোসেনের এসব দাবি অস্বীকার করে সাক্ষী নাহিদ ইসলাম বলেন যে, এগুলো সত্য নয়। তিনি ৫ আগস্ট সারাদেশে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতনের বিষয়ে সমন্বয়ক হাসনাত-সারজিসের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন বলেও উল্লেখ করেন।

আজ সকাল ১১টার পর ট্রাইব্যুনালে নাহিদের দ্বিতীয় দিনের জেরা শুরু হয় এবং দুপুর সাড়ে ১২টায় তা শেষ হয়। জেরা শেষে তিনি সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। এর আগে, ১৮ সেপ্টেম্বর বেলা সোয়া ১১টা থেকে ট্রাইব্যুনাল ৪৭ নম্বর সাক্ষী হিসেবে দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেন এনসিপি আহ্বায়ক। সেদিন দুপুরে তার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিরতি দেওয়া হয় এবং বিকেল ৪টা পর্যন্ত স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী তাকে জেরা করেন। জেরা সেদিন শেষ না হওয়ায় আজ বাকি অংশটুকু সম্পন্ন হয়।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ