ঢাকা, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

আশার আলো নিভে গেল? শেয়ারবাজারে ফের ধাক্কা, আপনার করণীয় কী?

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৮ ১৫:১৪:১৭
আশার আলো নিভে গেল? শেয়ারবাজারে ফের ধাক্কা, আপনার করণীয় কী?

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শেয়ারবাজারে উত্থানের যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, তাতে ফের হোঁচট খেলেন বিনিয়োগকারীরা। গত সপ্তাহে টানা পতনের পর তিন দিন ধরে বাজারে কিছুটা সুবাতাস বইছিল, ডিএসইর প্রধান সূচকে ৭৭ পয়েন্টের উত্থান বিনিয়োগকারীদের মনে আশার সঞ্চার করেছিল। কিন্তু আজ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার আবারও বাজারের চিত্র পাল্টে গেল। দিনের শুরুতে সূচকের ইতিবাচক গতি দেখা গেলেও, শেষ বেলায় তা আর ধরে রাখা যায়নি। লেনদেন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ৩৫ পয়েন্টেরও বেশি কমে গেছে।

লেনদেন ও দরপতনে বড় ধাক্কা:

আজ ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও চোখে পড়ার মতো কমে গেছে। ৫৬৫ কোটি টাকার নিচে নেমে এসেছে লেনদেন, যেখানে গত কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল প্রায় ৭০৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ, একদিনের ব্যবধানে ১৪৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার লেনদেন কমেছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে চার ভাগের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।

বাজার বিশ্লেষকদের ভিন্নমত:

তবে বাজার বিশ্লেষকরা এই ওঠানামাকে স্বাভাবিক বলেই মনে করছেন। তাদের মতে, এমন পতন দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে। ক্ষণস্থায়ী পতনের মাঝেও কিছু কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধি এবং লেনদেনের ধারাবাহিকতা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, বিনিয়োগকারীরা এখনও বাজারে সক্রিয় এবং সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে নজর রাখছেন।

দিনের লেনদেনের চিত্র:

আজ ডিএসইতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছিল, কিন্তু এর স্থায়িত্ব ছিল খুবই কম। পরবর্তীতে সূচকে কিছুটা অস্থিরতা দেখা যায়। দুপুর ১টার পর থেকে সূচকের একটানা পতন শুরু হয়, যা দিনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এর ফলে দিনশেষে সূচকের পাশাপাশি টাকার অঙ্কে লেনদেন কমেছে এবং বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দরপতন হয়েছে।

ডিএসইর সূচক ও লেনদেনের বিস্তারিত:

আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৫.০৫ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩৮০.০৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইএস ৬.৭১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৬৪.৭৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৭.০৯ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৮৫.৯৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

ডিএসইতে মোট ৩৯৬টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নেয়। এর মধ্যে মাত্র ৭০টির দর বেড়েছে, ২৮২টির দর কমেছে এবং ৪৪টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। মোট ৫৬৪ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চিত্র:

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)-তেও একই চিত্র দেখা গেছে। সূচকের পাশাপাশি টাকার অঙ্কে লেনদেন কমেছে এবং বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দরপতন হয়েছে।

সিএসইতে আজ ১৩ কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যেখানে আগেরদিন লেনদেন হয়েছিল ২১ কোটি ৭১ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ২০৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৮টির দর বেড়েছে, ১৩৬টির দর কমেছে এবং ২২টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬৫.২৩ পয়েন্ট কমে ১৫ হাজার ২৩.৪১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। উল্লেখ্য, আগেরদিন সূচক সিএএসপিআই ৬৫.৩৯ পয়েন্ট বেড়েছিল।

বিনিয়োগকারীদের করণীয়:

বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকতে হবে এবং দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের দিকে নজর দিতে হবে। স্বল্পমেয়াদী ওঠানামা দেখে আতঙ্কিত না হয়ে, কোম্পানির মৌলভিত্তি ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

আব্দুর রহিম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ