ঢাকা, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

শেয়ারবাজারে আলোড়ন: ৯ স্টকে বাই সিগন্যাল, নতুন সুযোগ?

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ০৮:২৬:৫৪
শেয়ারবাজারে আলোড়ন: ৯ স্টকে বাই সিগন্যাল, নতুন সুযোগ?

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের জন্য টেকনিক্যাল সিগন্যাল একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক, যা অনেক সময় কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন বা সার্বিক বাজার পরিস্থিতির আগেই সম্ভাব্য প্রবণতা সম্পর্কে ধারণা দেয়। সম্প্রতি মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) লেনদেন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ৯টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারে একইসাথে তিনটি শক্তিশালী টেকনিক্যাল সিগন্যাল—মুভিং এভারেজ, এমএসিডি (MACD) এবং এঙ্গালফিং প্যাটার্ন—গঠিত হয়েছে। স্টকনাউয়ের তথ্য অনুযায়ী, এটি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে।

এই ৯টি সম্ভাবনাময় কোম্পানি হলো:

এবি ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফিনিক্স ফাইন্যান্স, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস এবং রিং শাইন টেক্সটাইল।

মুভিং এভারেজ: শেয়ারের স্থিতিশীলতার পরিমাপক

মুভিং এভারেজ হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ের শেয়ার মূল্যের গড়। সাধারণত ৫০ দিনের ও ২০০ দিনের মুভিং এভারেজকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।

যদি কোনো শেয়ারের দাম ৫০ দিনের মুভিং এভারেজের উপরে উঠে আসে, তবে তা স্বল্পমেয়াদী বুলিশ সিগন্যাল নির্দেশ করে।

আর যদি ২০০ দিনের মুভিং এভারেজের উপরে অবস্থান করে, তবে সেটি দীর্ঘমেয়াদী শক্তিশালী অবস্থানকে বোঝায়।

এই ৯টি কোম্পানির বেশ কয়েকটিতেই মুভিং এভারেজ ইতিবাচক প্রবণতা দেখাচ্ছে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।

ম্যাকডি (MACD) সিগন্যাল: বাজারের গতিবিধি ও মোমেন্টামের নির্দেশক

MACD বা মুভিং এভারেজ কনভারজেন্স ডাইভারজেন্স হলো বাজারের প্রবণতা এবং গতি (মোমেন্টাম) বোঝার একটি বহুল ব্যবহৃত টেকনিক্যাল টুল।

যখন MACD লাইন সিগন্যাল লাইনকে অতিক্রম করে উপরের দিকে ওঠে, তখন তাকে একটি শক্তিশালী কেনার সিগন্যাল হিসেবে গণ্য করা হয়।

বিপরীতভাবে, নিচে নেমে গেলে তা বিক্রির ইঙ্গিত দেয়।

এই ৯টি কোম্পানির শেয়ারের MACD চার্টে একটি ইতিবাচক ক্রসওভার লক্ষ্য করা গেছে, যা বাজার বিশ্লেষকদের মতে একটি সম্ভাব্য আপট্রেন্ডের আগাম ইঙ্গিত হতে পারে।

এঙ্গালফিং প্যাটার্ন: প্রবণতা পরিবর্তনের শক্তিশালী পূর্বাভাস

এঙ্গালফিং ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন অন্যতম নির্ভরযোগ্য রিভার্সাল সিগন্যালগুলোর মধ্যে একটি।

বুলিশ এঙ্গালফিং ইঙ্গিত দেয় যে বাজারে নতুন করে কেনার চাপ সৃষ্টি হতে পারে, যা মূল্য বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।

অন্যদিকে, বিয়ারিশ এঙ্গালফিং দাম কমার সতর্কবার্তা দেয়।

এই ৯টি কোম্পানির শেয়ারে বুলিশ এঙ্গালফিং প্যাটার্ন দেখা গেছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

বাজার বিশ্লেষকদের পর্যবেক্ষণ:

বাজার বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন যে, "টেকনিক্যাল সিগন্যাল শতভাগ নির্ভুল না হলেও, এগুলো বাজারে বিনিয়োগকারীদের মনস্তত্ত্ব এবং প্রবণতা বোঝার অন্যতম কার্যকর উপায়। একইসাথে তিনটি সিগন্যাল মিলে গেলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাড়তি সতর্কতা এবং একইসাথে আগ্রহ তৈরি হয়।"

তাদের মতে, বিশেষ করে এবি ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংকের মতো ব্যাংক খাতের কিছু কোম্পানির শেয়ারে এই টেকনিক্যাল সিগন্যালগুলো এখন অনেক বেশি ইতিবাচক। তবে ফিনিক্স ফাইন্যান্স, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস বা রিং শাইন টেক্সটাইলের মতো শেয়ারে সিগন্যাল দেখা গেলেও সেগুলোতে এখনো কাঙ্ক্ষিত স্থিতিশীলতা আসেনি।

বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বার্তা:

মুভিং এভারেজ, MACD এবং এঙ্গালফিং—এই তিনটি সিগন্যাল একসাথে পাওয়া অনেক সময় বাজারে বড় ধরনের পরিবর্তনের পূর্বাভাস দেয়।

তবে, বিনিয়োগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শুধুমাত্র টেকনিক্যাল চার্টের ওপর নির্ভর না করে কোম্পানির মৌলভিত্তি, ডিভিডেন্ড ইতিহাস এবং সাম্প্রতিক কোম্পানিভিত্তিক সংবাদ ও পরিস্থিতিও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করা অত্যাবশ্যক।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ