ঢাকা, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

তামিম : ক্রিকেট হেরে গেছে, ইলেকশনের ফিক্সিং বন্ধ করুন

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ১৩:১৪:১৮
তামিম : ক্রিকেট হেরে গেছে, ইলেকশনের ফিক্সিং বন্ধ করুন

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আসন্ন পরিচালক পর্ষদ নির্বাচন থেকে নিজের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তার সঙ্গে আরও ১৪ জন প্রার্থীও এই নির্বাচন থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করেছেন। এই সিদ্ধান্তের পর গণমাধ্যমের সামনে এসে তামিম বিসিবি নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে কঠোর ভাষায় নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন, যা দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

"নোংরামি ও অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন": তামিমের ক্ষোভ

মনোনয়ন প্রত্যাহারের কারণ ব্যাখ্যা করে তামিম সরাসরি বিসিবি নির্বাচনকে 'নোংরামি' এবং 'অগ্রহণযোগ্য' বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, "মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি আমিসহ ১৪-১৫ জন। প্রত্যাহার করার কারণ খুবই স্পষ্ট। মনে হয় না এটা নিয়ে আমাকে বিস্তারিত বা ব্যাখ্যা করে কিছু বলার আছে।" তামিমের এই মন্তব্য আসন্ন নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।

"ক্রিকেট হেরে গেছে, ইলেকশনের ফিক্সিং বন্ধ করুন"

সাবেক এই অধিনায়ক আরও বলেন, "ক্রিকেট হেরে গেছে, ইলেকশনের ফিক্সিং বন্ধ করুন। এটা নির্বাচন নয়, বোর্ডের জন্য কালো অধ্যায়। নোংরামির সঙ্গে থাকতে পারবো না, তাই সরে দাঁড়ানো প্রতিবাদ।" তামিমের এই বিস্ফোরক উক্তি দেশের ক্রীড়ামহলে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, নির্বাচনের পেছনে এমন কিছু ঘটছে যা ক্রিকেটের নীতির পরিপন্থী।

স্বচ্ছতার অভাব ও ধারাবাহিক ক্ষোভ

তামিমের মতে নির্বাচনটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়ায় হচ্ছে না। এই নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "আমি শুরু থেকেই বলে আসছি, নির্বাচনটা কীভাবে হচ্ছে বা কোনদিকে যাচ্ছে এটা সবাই এখন দেখছে। যখন যা মনে হচ্ছে, তখন তা করা হচ্ছে। এটা আসলে নির্বাচন না। ক্রিকেটের সাথে এই জিনিসটা কোনোদিক থেকেই মানায় না।" তার এই বক্তব্য বোর্ডের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে অসঙ্গতির দিকে আঙুল তুলেছে।

হেভিওয়েট প্রার্থীদের সম্মিলিত প্রতিবাদ

তামিম মনে করেন যারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন, তাদের বেশিরভাগই নিজেদের অবস্থানে প্রভাবশালী ছিলেন এবং শক্তিশালী ভোট ব্যাংকের প্রত্যাশা করতেন। তাদের এই সরে আসা বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতির বিরুদ্ধে এক সম্মিলিত প্রতিবাদ। এ ব্যাপারে তামিম বলেন, "আজকে কারা কারা প্রত্যাহার করেছে তা আপনারা নামগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন যে তারা নিজেদের জায়গা থেকে হেভিওয়েট। তাদের ভোট ব্যাংকও অনেক শক্তিশালী। এটা আমাদের একটা প্রতিবাদ যে এই নোংরামি অংশে আমরা থাকতে পারব না।"

"বাংলাদেশ ক্রিকেট এটা ডিজার্ভ করে না"

তামিম জোর দিয়ে আরও বলেন, "বিভিন্ন সময়ে অনেক ধরনের কথা বলা হয়েছে। তবে দিন শেষে আমার মনে হয়, আমরা কোনোভাবেই এই নোংরামির সাথে থাকতে পারব না।" সবশেষে তিনি মন্তব্য করেন, "বাংলাদেশ ক্রিকেট এটা ডিজার্ভ করে না। বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তরাও এটা ডিজার্ভ করে না।" তার এই বক্তব্য দেশের ক্রিকেট ভক্তদের মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

আগামী ৬ অক্টোবর বিসিবি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তামিমসহ মোট ১৫ জন প্রভাবশালী প্রার্থীর সরে যাওয়ায় নির্বাচনকে ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্কের মাত্রা বহুগুণে বেড়ে গেল। এই ঘটনা বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে, যেখানে নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন উঠেছে।

আব্দুর রহিম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ