ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫, ২২ আশ্বিন ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কারসাজির গন্ধ! তদন্তে বিএসইসি

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৭ ২০:৩৬:০৪
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কারসাজির গন্ধ! তদন্তে বিএসইসি

দেশের শেয়ারবাজারে আবারও কারসাজির ভূত ভর করেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানি কেঅ্যান্ডকিউ বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ারে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং লেনদেনের উল্লম্ফনের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এই কৃত্রিম উত্থানকে ঘিরে বাজারে উদ্বেগ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে, যা আবারও কারসাজি চক্রের সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, বিএসইসির সহকারী পরিচালক লামিয়া আক্তার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-কে কেঅ্যান্ডকিউ’র শেয়ারে কারসাজির বিষয় তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডিএসই-কে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এই অস্বাভাবিক লেনদেন ও মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন বিএসইসির কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে।

বাজারের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি বছরের ১৫ জুন কেঅ্যান্ডকিউ’র প্রতিটি শেয়ারের দর ছিল ১৯০ টাকা ৭০ পয়সা। কিন্তু তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে, অর্থাৎ গত রবিবার (৬ অক্টোবর), শেয়ারটির দাম দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৫০ টাকা ৯০ পয়সায় পৌঁছায়। সোমবার (৭ অক্টোবর) অবশ্য এর দর কিছুটা কমে ৪৪২ টাকা ৫০ পয়সায় অবস্থান করছে।

বিএসইসি এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং লেনদেনকে 'সন্দেহজনক' আখ্যা দিয়েছে, যা 'কৃত্রিম চাহিদা' সৃষ্টির ইঙ্গিত বহন করে। সংস্থাটি মনে করে, এ ধরনের আচরণ বাজারের স্বচ্ছতা এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এরই মধ্যে স্টক ডিলার, স্টক ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধিদের সতর্ক করা হয়েছে, যাতে তারা কোনো ধরনের ম্যানিপুলেটিভ লেনদেনে জড়িত না হয়।

বিএসইসি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, এমন সন্দেহজনক লেনদেন গুরুতর বিধিভঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হবে। এটি সিকিউরিটিজ আইনের দ্বিতীয় তফসিলের আচরণবিধি ৬ ও ৮ (যা কৃত্রিম লেনদেন ও জালিয়াতি নিষিদ্ধ করে) এবং সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক ডিলার, স্টক ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা, ২০০০-এর বিধি ১১ (যা ন্যায্য ব্যবসা আচরণ নির্ধারণ করে) -এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

আইন ভঙ্গের কঠোর সতর্কবার্তার পর বাজার সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা আরও দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। এটি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি পুরো শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতার জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন, যদি বিএসইসি সময়মতো দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে, তাহলে ভবিষ্যতে এ ধরনের কারসাজি এবং অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে, যার ফলে বাজার আরও স্বচ্ছ, বিশ্বাসযোগ্য ও সুরক্ষিত হবে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ