ঢাকা, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫, ২৩ আশ্বিন ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

বিনিয়োগকারীদের উচ্ছ্বাস: রেকর্ড ভাঙা ৮ শেয়ারের উত্থান!

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৮ ১৮:১১:০৪
বিনিয়োগকারীদের উচ্ছ্বাস: রেকর্ড ভাঙা ৮ শেয়ারের উত্থান!

দেশের শেয়ারবাজারে বুধবার (০৮ অক্টোবর) এক ব্যতিক্রমী চিত্র দেখা গেছে। যেখানে সার্বিকভাবে বাজার ছিল পতনমুখী, সেখানে বীমা ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতের আটটি কোম্পানি তাদের শেয়ারের মূল্যে বছরের সর্বোচ্চ উচ্চতা ছুঁয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। স্টকনাও সূত্রে জানা গেছে, এই আটটি কোম্পানি হলো— সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, সিভিও পেট্রো কেমিক্যাল, গ্রীনডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, পিপলস ইন্স্যুরেন্স, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, সাপোর্ট ও সিমটেক্স।

বীমা খাতের নেতৃত্বে সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ও গ্রীনডেল্টা:

আজকের লেনদেনে সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার ৭০ টাকা ৪০ পয়সায় পৌঁছে বছরের সর্বোচ্চ দর স্পর্শ করে, যা দিনশেষে ৭০ টাকা ক্লোজিং মূল্যে স্থির হয়। মাত্র ২৮ টাকা সর্বনিম্ন মূল্য থেকে এই শেয়ারের এমন ঊর্ধ্বমুখী যাত্রা বিনিয়োগকারীদের জন্য উল্লেখযোগ্য মুনাফা এনে দিয়েছে। গ্রীনডেল্টা ইন্স্যুরেন্সও ৫৯ টাকা ৯০ পয়সা সর্বোচ্চ দরে লেনদেন হয়ে দিনশেষে ৫৮ টাকা ৮০ পয়সায় শেষ করে। এটি বছরের শুরুতে মাত্র ৩৭ টাকায় ছিল।

সিভিও পেট্রো কেমিক্যাল ও অন্যান্য বীমা কোম্পানির ঊর্ধ্বগতি:

সিভিও পেট্রো কেমিক্যাল লিমিটেডের শেয়ার ২১৩ টাকা ৯০ পয়সা ছুঁয়ে বছরের সর্বোচ্চ দরে লেনদেন হয়েছে, যা দিনশেষে ২১১ টাকা ২০ পয়সায় ক্লোজিং হয়। এই শেয়ারটিও ৮৬ টাকা ৫০ পয়সা সর্বনিম্ন দর থেকে ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধি দেখেছে। পিপলস ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার ৩৮ টাকা ৮০ পয়সা সর্বোচ্চ দরে লেনদেন হয়ে ৩৬ টাকা ৯০ পয়সায় শেষ হয়, যার সর্বনিম্ন দর ছিল ২৪ টাকা। রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার ৭৬ টাকা ৫০ পয়সায় রেকর্ড উচ্চতা স্পর্শ করে দিনশেষে ৭২ টাকা ১০ পয়সায় স্থির হয়, যেখানে সর্বনিম্ন দর ছিল ৪৭ টাকা ৭০ পয়সা।

সাপোর্ট ও সিমটেক্সের উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স:

সাপোর্ট লিমিটেডের শেয়ার আজ ৪৫ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়ে বছরের সর্বোচ্চ দর নিশ্চিত করে, যা দিনশেষে ৪৪ টাকা ১০ পয়সায় ক্লোজিং হয়। এক বছর আগে এর সর্বনিম্ন দাম ছিল মাত্র ১৭ টাকা ১০ পয়সা। সিমটেক্সের শেয়ারও ২৪ টাকা ১০ পয়সায় সর্বোচ্চ দরে পৌঁছে দিনশেষে ২৩ টাকা ৮০ পয়সায় স্থির হয়, যার সর্বনিম্ন দর ছিল ১৪ টাকা ৪০ পয়সা।

বিশ্লেষকদের সতর্কবাণী: সাময়িক উচ্ছ্বাস না দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তি?

এই রেকর্ড উচ্চতা নিঃসন্দেহে বিনিয়োগকারীদের জন্য আনন্দের খবর। তবে বাজার বিশ্লেষকরা এর পেছনে গভীর কিছু কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না। তাদের মতে, এই উত্থান মূলত স্বল্পমেয়াদী বাজার সেন্টিমেন্ট এবং জল্পনা-কল্পনার ফসল। কোম্পানির মৌলিক ভিত্তি, ডিভিডেন্ড বা সামগ্রিক পারফরম্যান্সের তুলনায় এই দিকগুলোই মধ্যম মূলধনের এই শেয়ারগুলোতে আকস্মিক চাহিদা সৃষ্টি করেছে।

বিশ্লেষকরা জোর দিয়ে বলেন, মৌলিক শক্তি ছাড়া এমন কৃত্রিম দাম বৃদ্ধি দীর্ঘমেয়াদী টেকসই হয় না এবং এটি বাজারে অস্থিরতা ও সংশোধনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে প্রায়শই একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী লাভবান হয়, আর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতির শিকার হন। তাই বিনিয়োগকারীদেরকে সতর্কতার সাথে বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং কোম্পানির মৌলিক বিষয়াদি বিবেচনা করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

আব্দুর রহিম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ