ঢাকা, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫, ২৩ আশ্বিন ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

ফের উল্টে গেল ইসলামী ব্যাংকের সেই ৫ শেয়ার: একীভূতকরণ অনিশ্চয়তায় বড় পতন

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৮ ২০:১৫:০৫
ফের উল্টে গেল ইসলামী ব্যাংকের সেই ৫ শেয়ার: একীভূতকরণ অনিশ্চয়তায় বড় পতন

একীভূতকরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা দেশের পাঁচটি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারদরে আবারও বড় ধরনের পতন ঘটেছে। ছয় কার্যদিবস ধরে টানা বৃদ্ধির পর কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও, বুধবার (৮ অক্টোবর) ব্যাংকগুলোর শেয়ার আবারও তীব্র দরপতনের মুখে পড়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বুধবার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল), এক্সিম ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংকের শেয়ারদর লেনদেন শুরুর দামের তুলনায় ৯ শতাংশ থেকে ১৫.৬৮ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে এই পাঁচ ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলম ও নজরুল ইসলাম মজুমদারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করতে 'ব্যাংক রেজুলেশন অর্ডিন্যান্স ২০২৫' জারি করেছে সরকার। এই অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে একীভূত করার জন্য বিশেষ বিধান তৈরি করা হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতিমধ্যেই এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে উদ্যোগী হয়েছে। একীভূত হওয়ার পর নতুন ব্যাংকটির মালিকানা সরকারের কাছে যাবে এবং এ জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।

তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারদর সর্বোচ্চ ১৩ টাকা ৭০ পয়সায় পৌঁছেছিল। এরপর ধারাবাহিক দরপতনে ২৩ সেপ্টেম্বর তা ৩ টাকায় নেমে আসে। তবে গত সপ্তাহে দফায় দফায় দাম বাড়তে শুরু করে এবং ৭ অক্টোবর প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে ৫ টাকা ৭০ পয়সায় উঠে আসে। কিন্তু বুধবার দিনের শেষে পরিস্থিতি আবারও বদলে যায়। লেনদেন শুরুর সময় এসআইবিএল-এর শেয়ার ছিল ৬ টাকা ১০ পয়সা, যা শুরুর দামের তুলনায় ৪০ পয়সা বেশি। তবে দিনের শেষে দাম নেমে আসে ৫ টাকা ২০ পয়সায়, অর্থাৎ দিনের শুরুর তুলনায় ১৪.৭৫ শতাংশ দরপতন হয়।

রেকর্ড দরপতনের পর কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানো অন্যান্য ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারও বুধবার আবার নিম্নমুখী হয়েছে। এর মধ্যে এক্সিম ব্যাংকের শেয়ারে সবচেয়ে বেশি দরপতন হয়েছে। দিনের শুরুতে ব্যাংকটির শেয়ার ছিল ৫ টাকা ১০ পয়সা, কিন্তু দিনের শেষে তা নেমে যায় ৪ টাকা ৩০ পয়সায়—শুরুর তুলনায় দরপতন ছিল ১৫.৬৮ শতাংশ। এর আগে গত বছরের ১১ আগস্ট ব্যাংকটির শেয়ার দাম সর্বোচ্চ ১১ টাকায় ছিল। তবে একের পর এক দরপতনে ২৩ সেপ্টেম্বর তা ২ টাকা ৮০ পয়সায় নেমে আসে। পরে কয়েক কার্যদিবস টানা বেড়ে মঙ্গলবার প্রতিটি শেয়ার ৪ টাকা ৭০ পয়সায় উঠেছিল, কিন্তু বুধবারের লেনদেনেই আবার সব উল্টে যায়।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, একীভূতকরণ প্রক্রিয়াকে ঘিরে কিছুদিনের জন্য বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়লেও, এখন এই প্রক্রিয়া ঘিরে অনিশ্চয়তা নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সরকারের হাতে মালিকানা যাওয়ার পর এই ব্যাংকগুলোর ভবিষ্যৎ কাঠামো এবং লাভজনকতা কীভাবে প্রভাবিত হবে—সেই প্রশ্নই নতুন করে বাজারে চাপ সৃষ্টি করছে, যা শেয়ারদরের পতনে ভূমিকা রাখছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ