ঢাকা, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

শেয়ারবাজারে কালো দিন: ৬ খাতে ধস, বিনিয়োগকারীদের মাথায় হাত!

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১২ ১৭:১৫:৪৩
শেয়ারবাজারে কালো দিন: ৬ খাতে ধস, বিনিয়োগকারীদের মাথায় হাত!

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) নেমে এসেছে এক মহাবিপর্যয়। এদিন ডিএসই'র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স একদিনে ৮১ পয়েন্ট কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চরম হতাশা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এই ভয়াবহ পতনের ধাক্কায় বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬টি খাত, যেখানে শতভাগ কোম্পানির শেয়ারে ধস নেমেছে।

৬টি খাতে শতভাগ কোম্পানির শেয়ারে ধস:

তথ্যপ্রযুক্তি: এই খাতে মোট ১১টি কোম্পানির শেয়ারে বড় ধরনের পতন হয়েছে।

সিমেন্ট: সিমেন্ট খাতের শতভাগ কোম্পানি লোকসানের মুখে পড়েছে।

পেপার অ্যান্ড প্রিন্টিং: এই খাতের ৬টি কোম্পানির শেয়ারই পতনের শিকার হয়েছে।

টেলিযোগাযোগ: ৩টি টেলিযোগাযোগ কোম্পানির শেয়ার দর আজ কমেছে।

ভ্রমণ ও অবকাশ: ৪টি ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের কোম্পানির শেয়ারে ধস নেমেছে।

পাট: পাট খাতের ৩টি কোম্পানিও এই পতনের ধাক্কা সামলাতে পারেনি।

এই ৬টি খাতে মোট ২৭টি কোম্পানি আজ দিনের শেষে বড় আকারে শেয়ার দর হারিয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।

কোন খাতে কত ক্ষতি?

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আইএসএন আজ সবচেয়ে বেশি ধসের মুখোমুখি হয়েছে, যা ৬.৫১ শতাংশ দরপতনের সঙ্গে। একই খাতের ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের শেয়ার ৫.৯৯ শতাংশ কমেছে। সিমেন্ট খাতের অ্যারামিট সিমেন্টের শেয়ার ৬.০৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বড় ধাক্কা।

বিশ্লেষকদের উদ্বেগ:

বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, একক খাতের নয়, একাধিক খাতের একসাথে পতন শেয়ারবাজারের সামগ্রিক আস্থা দুর্বল করছে। বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও আর্থিক ঝুঁকি বিবেচনা করেও এই পতনের ফলে অপ্রত্যাশিত ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ভৌগোলিক, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বর্তমানে স্থিতিশীল থাকলেও বাজারে উদ্বেগ এবং অস্বাভাবিক লেনদেনের কারণে এই ধরনের পতন ঘটতে পারে। বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ খাতের মতো সংবেদনশীল খাতের শেয়ার দর কমে বিনিয়োগকারীরা চরম মনস্তাত্ত্বিক চাপের মুখে পড়েছেন।

কারসাজির আশঙ্কা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতি আহ্বান:

বিনিয়োগকারীদের আশঙ্কা, এই পতনের ধাক্কা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগকারীর আস্থা হ্রাস করতে পারে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা, যারা এই ছয় খাতের শেয়ার ধরেছিলেন, তারা আর্থিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। অনেক বিশ্লেষক এই ধসের পেছনে কারসাজিকারীদের হাত দেখছেন, যারা বিএসইসিকে চাপে রাখতে ধারাবাহিকভাবে বাজারে পতনের ছক কষছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্বচ্ছতা ও নিয়ন্ত্রণের দাবি:

আজকের এই পতনের পর বাজারে সুরাহার জন্য বিনিয়োগকারীরা আরও স্বচ্ছতা এবং লেনদেন নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাজারে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে হলে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায়, কারসাজিকারীরা বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি করে আবারও বাজারে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে।এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য ধারণ এবং সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ