ঢাকা, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

‘শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ রাষ্ট্রপতির কাছে নেই’

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৫ ১৯:৫০:০১
‘শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ রাষ্ট্রপতির কাছে নেই’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের কোনো লিখিত বা 'দালিলিক প্রমাণ' তৎকালীন রাষ্ট্রপতির হাতে ছিল না। এই জ্যেষ্ঠ নেতা 'কালের সংলাপে' অংশ নিয়ে সরকারের পরিবর্তন ও পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন।

হাবিব জানান, প্রধানমন্ত্রী যখন দেশ ত্যাগ করেন, ঠিক তখনই রাষ্ট্রপতি বিবৃতি দেন যে তিনি পদত্যাগ করেছেন এবং পদত্যাগপত্রটি তার কাছে সংরক্ষিত আছে। বিএনপি নেতার দাবি, রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্য "সঠিক ছিল না।" তিনি প্রশ্ন তোলেন, প্রধানমন্ত্রী ‘পালিয়ে’ যাওয়ার পর পদত্যাগপত্র তৈরি হলো কখন এবং কাকে তা হস্তান্তর করা হলো? তার মতে, তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সামাল দিতে 'দেশের প্রয়োজন মেটাতে' রাষ্ট্রপতি নিজ দায়িত্বে এই অসত্য দাবি করেছিলেন।

দালিলিক প্রমাণের অভাব: রাষ্ট্রপতির স্বীকারোক্তি

এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে সাংবাদিক মতিউর রহমান যখন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, তখন একটি ভিন্ন চিত্র সামনে আসে। হাবিবের তথ্য অনুসারে, রাষ্ট্রপতি মতিউর রহমানকে নিশ্চিত করেন যে তার কাছে পদত্যাগ সংক্রান্ত 'কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই।'

রাষ্ট্রপতির এই স্বীকারোক্তির পর ক্ষমতাসীন দলের অনেকেই তার পদত্যাগের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এমনকি, এই সময় 'আমরা তাকে এই পদ থেকে সরিয়েই ছাড়ব' বলেও দাবি ওঠে।

ঐক্যমতের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে

এমন পরিস্থিতিতে, হাবিবুর রহমান হাবিব এবং তার দল রাষ্ট্রপতির অপসারণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। তিনি যুক্তি দেন, যেহেতু বর্তমান সরকার ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত এবং শপথ গ্রহণ করেছে এই রাষ্ট্রপতির কাছেই, তাই তাকে সরাতে হলে 'সব রাজনৈতিক দলের ঐক্যমতের' ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

বিএনপির এই নেতা সতর্ক করেন যে, কোনো একক পক্ষের পদত্যাগ চাওয়ায় কাজ হবে না। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি যদি চলে যান তাহলে দেশে সাংবিধানিক স্থিতিশীলতা চরমভাবে বিঘ্নিত হবে। এই সংকট নিরসন অসম্ভব হয়ে উঠবে এবং জাতি 'আবারও অস্থিরতার' মুখে পড়বে।

বিদেশি দূতাবাসেও ছবি সরানোয় বিস্ময়

হাবিবুর রহমান হাবিব তার শেষ পর্যবেক্ষণে একটি অসঙ্গতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "এরপর একদিন দেখলাম সব জায়গা থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরানো হচ্ছে।" তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, পদাধিকারবলে রাষ্ট্রপতি যতক্ষণ আসনে আছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তার ছবি বিদেশি দূতাবাসসহ সব সরকারি কার্যালয়ে বহাল থাকা বাধ্যতামূলক। অপসারণের পরেই কেবল তার ছবি নামানো উচিত।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ