ঢাকা, শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২

মেইক সিফট ওপেনার কার্যকারিতা এবং বাংলাদেশ দলের বাস্তবতা

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২২ অক্টোবর ০৮ ১৮:৫০:১৭
মেইক সিফট ওপেনার কার্যকারিতা এবং বাংলাদেশ দলের বাস্তবতা

এ ব্যর্থতার পুরো দায় কি শুধুই ব্যাটারদের? বাংলাদেশের কোচিং স্টাফ আর ‘থিংকট্যাঙ্ক’ হিসেবে যারা পরিচিত, তাদের কি কোনোই দায় নেই? দলের ব্যাটিং বিপর্যয় এড়াতে আর ওপেনিং জুটিটা মজবুত ও স্থিতিশীল করতে কোচরা কি পদক্ষেপ নিয়েছেন?

মাঝে কিছুদিন ৭-৮ জন ওপেনারকে পরখ করা হলো। তাতে কাজ না হওয়ায় এখন তারা পড়ে আছেন মেকশিফট ওপেনার নিয়ে। দেখে মনে হচ্ছে বাংলাদেশের ‘থিংক ট্যাঙ্কে’র মাথায় মেকশিফট ওপেনারে ‘ভূত’ চেপে বসেছে। এ ‘ভূত’ সহসা যাবে বলেও মনে হয় না।

বাংলাদেশ ম্যানেজমেন্ট কি পাকিস্তাননের ওপেনিং জুটির ব্যাটিংটা দেখেন না? বাবর আজম আর মোহাম্মদ রিজওয়ানের কেউ কিন্তু টিপিক্যাল পাবিস্তানিদের মত ‘ইয়াহু’ মার্কা ‘বিগ হিটার’ নন। তারা ৬ ওভারে চার ও ছক্কা হাঁকিয়ে মাঠ গরম করেন না। একদম পটে আঁকা ছবির মত ব্যাটিং করছেন, তাও নয়।

তবে বাবর আর রিজওয়ান দুটি কাজ করেন। তাহলো প্রথম ৬ ওভারে গড়পড়তা ৮ থেকে ৯ রান মানে ৪৫ থেকে ৫০ প্লাস রান জুড়ে দেন। আর একজন ১২০ থেকে ১৩০ প্লাস স্ট্রাইকরেটে পুরো ২০ ওভার খেলতে চেষ্টা করেন।

লক্ষ্য এক ও অভিন্ন। হয় ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত খেলা, না হয় ম্যাচ জিতিয়ে সাজঘরে ফেরা। ত্রিদেশীয় আসরের কথাই ধরা যাক, পরপর দুই ম্যাচে বাংলাদেশ (২১ রানে) আর নিউজিল্যান্ডকে (৬ উইকেটে) হারালো পাকিস্তান।

দুই ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান আর বাবর আজম পরপর দুই ম্যাচের জয়ের নায়ক, রূপকার। আগের দিন বাংলাদেশের সঙ্গে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে দলকে ১৬৭ রানের লড়াকু পুঁজি গড়ে দিয়েছিলেন রিজওয়ান। সেখানে অধিনায়ক বাবর আজমের অবদান ছিল ২২। তবে প্রথম উইকেটে ৫২ রানের শক্ত ভিত গড়ার কাজটি ঠিক করে যান পাকিস্তানী ক্যাপ্টেন।

আজ (শনিবার) উইকেটরক্ষক ব্যাটার রিজওয়ানের ব্যাট কথা বলেনি। ফ্লিক করতে গিয়ে ৪ রানে লেগবিফোর উইকেটের ফাঁদে জড়িয়ে সাজঘরে ফেরত গেছেন; কিন্তু তাতে কি? তার ওপেনিং পার্টনার বাবর আজম ঠিকই দাঁড়িয়ে গেছেন।

শনিবার ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪৮ রানের মাঝারি লক্ষ্যের পিছু ধেয়ে ৬ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে পাকিস্তান। ৫৩ বলে ৭৯ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে ১০ বল আগে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে ম্যাচ সেরা অধিনায়ক বাবর আজম।

মানে বাকিরা অল্প-স্বল্প অবদান রাখলেও দুই ওপেনারের একজন একদিক আগলে রাখার পাশাপাশি ম্যাচ শেষ করে আসায় দল অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছে যাচ্ছে। সেখানে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটির ছন্নছাড়া অবস্থা।

শেষ ৪ ম্যাচে মেহেদি মিরাজ আর সাব্বির রহমানের মেকশিফট ওপেনিং ওপেনিং জুটিতে উঠেছে ১৯ (২.৫ ওভারে), ১১ (১.৩ ওভার), ২৭ (৩.৪ ওভারে) আর ২৫ (৪.২ ওভারে)।

এই দু’জনার ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ দেখে মনে হয় না রিজওয়ান আর বাবরের মত তাদেরকে দল জিতিয়ে কিংবা ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত খেলে আসার কথা বলা হয়েছে। আর তাই তারা নিজেদের মত করে খাপছাড়া ও লক্ষ্যহীন ব্যাটিং করছেন।

মিরাজ তবু এশিয়া কাপের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৮ আর আরব আমিরাতের বিপক্ষে ৪৬ রানের দুটি মোটামুটি ইনিংস খেলেছেন। কিন্তু মেকশিফট ওপেনার হিসেবে সাব্বির ৪ ম্যাচে (৫+০+১২+১৪ ) কিছুই করতে পারেননি। পুরোই ব্যর্থ।

এখন প্রশ্ন উঠেছে আগামীকাল কিউইদের বিপক্ষেও কি এই মেকশিফট ওপেনাররাই ওপেন করবেন? ঢাকায় আজ নির্বাচক হাবিবুল বাশারের কথা শুনে হচ্ছে তারা আরও দেখতে চান। তার কথা, ‘মেকশিফট ওপেনার দিয়ে আমরা কেবল শুরু করেছি। সম্ভবত একটু সময় দিতে চাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট। কাউকে যদি সুযোগ দেয়, তাকে একটু লম্বা সময় সুযোগ দেওয়া উচিত। তারপর যিনি আসবেন যদি অন্য কোনো কম্বিনেশনে তারাও কিন্তু এমন লম্বা সময় পাবে। কাউকে যদি দেখতে হয়, অন্তত চার পাঁচটা ম্যাচ দেখতে হবে। তারপর যদি আপনি একটা সিদ্ধান্তে আসতে পারেন। একটা দুটা ম্যাচ দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।’

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ