ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২

আর্জেন্টিনার ফাইনালে যাওয়ার পেছনের নায়ক স্কালোনি

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২২ ডিসেম্বর ১৪ ১৫:১১:৩৭
আর্জেন্টিনার ফাইনালে যাওয়ার পেছনের নায়ক স্কালোনি

এই ভদ্রলোকের নাম লিওনেল স্কালোনি। মেসিদের কোচ। স্কালোনির গল্পটা অন্যরকম। ২০১৮ বিশ্বকাপে নিজ দেশের ব্যর্থতা চোখের সামনে দেখার পর পণ করেছিলেন, দায়িত্বটা পেলে কিছু একটা করে দেখাবেন। এলো সেই প্রতিজ্ঞা পূরণের সুযোগ।

স্কালোনি কোনো হাই প্রোফাইল কোচ ছিলেন না। বিয়েলসা থেকে শুরু করে ম্যারাডোনা, সাবেলা বা সাম্পাওলি; সবার একটা হাইপ পয়েন্ট ছিলো। কিন্তু স্কালোনির ছিলো ভালো করার, পুরো দলকে এক সুতোয় গাঁথার মানসিকতা। একটা দৃঢ়প্রতিজ্ঞা।

শুরুতে ছিলেন আর্জেন্টিনার বয়সভিত্তিক দলের কোচ। দলের দুঃসময়ে সেখানেই স্কালোনির কিছু কাজ দেখে তাকে মনে ধরে যায় আর্জেন্টাইন ফুটবল ফেডারেশনের। ২০২১ সালের কোপা আমেরিকার আগে দায়িত্ব তুলে দিলো চিরতরুণ মানুষটার হাতে।

স্কালোনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন একটা হারের ভেতর দিয়ে। তারপর লিওনেল মেসিকে কেন্দ্র করে তারুণ্য নির্ভর দল নিয়ে টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থেকে কোপা আমেরিকা জিতে পা রাখেন কাতার বিশ্বকাপে। মাঝে টানা তিন বছর আর হারেননি।

কিন্তু সৌদি আরবের কাছে ২-১ গোলে অপ্রত্যাশিত হার দিয়ে শুরু হয় কাতারের অভিযাত্রা। এমন হারে খাদের কিনারায় পৌঁছায় আর্জেন্টিনা। তবে ওই ধাক্কাকে শক্তিতে পরিণত করে একে একে সব বাধা টপকে ফাইনালে উঠলো আলবিসেলেস্তেরা।

এখন ৩৬ বছরের শিরোপা খরা ঘুচানোর খুব কাছে আর্জেন্টিনা। ২০১৪ সালের পর আরেকবার সোনালী ট্রফিটা ছোঁয়া থেকে আর এক ধাপ দূরত্বে মেসির-ডি মারিয়ারা। বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে আর্জেন্টিনার এমন সাফল্যের পেছনে কারণ খুঁজতে গেলে বের হয়ে আসে স্কালোনির চৌকসতা। বিশ্বকাপে স্কালোনিকে দেখে মনে হয়েছে বেশ হিসেব আর পরিকল্পনা করেই মাঠে নামেন তিনি। এই বিশ্বকাপে তিনি কোনো দুটো ম্যাচে একই ফরমেশনে খেলা শুরু করেননি। প্রতিটি ম্যাচে আলাদা ফরমেশন এবং ম্যাচের মধ্যে এনেছেন এক বা একাধিকবার বদল।

পুরো আসরের দিকে তাকালে দেখা যায়, কখনো ৪-৪-২, কখনো ৫-৩-২, কখনো ৪-৩-৩ ফরমেশনে দলকে খেলিয়েছেন এই কোচ। প্রতি ম্যাচে প্রতিপক্ষের শক্তি অনুযায়ী ফরমশেন বদলেছেন। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটা এর সেরা উদাহরণ।

ক্রোয়েশিয়া মূলত পরিকল্পনা করেছিল, মিড ফিল্ডে বল দখলে রেখে ম্যাচ গোলশূন্য রেখে লড়ার কৌশলে চলেছে। এই জিনিসটা স্কালোনি ধরতে পেরে ফাঁদ পাতলেন। তাদের বিপক্ষে ৪-৪-২ ফরমেশনে খেলালেন শুরুতে।

তাতে ক্রোয়েশিয়া বল দখলে পেলেও মাঝমাঠে হয়ে পড়লো খালি। এই সুযোগটা নিয়েই মাঝমাঠ দখলে রেখে কাউন্টার অ্যাটাকে গেলো আর্জেন্টিনা। এভাবেই তিন গোলের লিড হলো। লিড পেয়েই আবার ফরমেশন বদল। মুহূর্তেই ৪-৪-২ হয়ে গেল ৫-৩-২ ফরমেশন!

এমন কৌশল আর বুদ্ধিতে ফাইনালে পৌঁছে স্কালোনির ভাষ্য, ‘আমি খুব বেশি আবেগপ্রবণ না হতে চেষ্টা করছি। এটাকে শব্দে পরিণত করা খুব কঠিন। একজন আর্জেন্টাইন হিসেবে আমি সবসময় এটাই স্বপ্ন দেখতাম।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি যা করছি, প্রত্যেক আর্জেন্টাইনই তাই করতো যখন আপনি আপনার দেশ, জাতিকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। আমার খেলোয়াড়রা যা করছে, সেটা না করা অসম্ভব। এটা রোমাঞ্চকর, আবেগময়।’

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ