শেয়ারবাজারে দুঃসময়: দুই সপ্তাহে মূলধন কমল ১১ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে গত দুই সপ্তাহে নেমে এসেছে মন্দার ছায়া। চলতি মাসের ১৬-২০ মার্চ পর্যন্ত বিদায়ী সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারের মূলধন কমেছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা, যা গত সপ্তাহের ৬ হাজার কোটি টাকার কমতির সঙ্গে মিলিয়ে দুই সপ্তাহে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা মূলধন হ্রাস পেয়েছে। এই পতনের ফলে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা হতাশায় দিন পার করছেন, অথচ লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে কিছুটা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সূচকের পতন
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-এ প্রায় প্রতিটি সূচকই পতনের দিকে চলে গেছে। ডিএসই এক্স (ডিএসইএক্স) সূচক ২৩.৯১ পয়েন্ট বা ০.৪৬ শতাংশ কমে ৫,২০১.৭০ পয়েন্টে পৌঁছেছে। ডিএসই-৩০ সূচকও ১৩.৬৮ পয়েন্ট বা ০.৭২ শতাংশ কমে ১,৮৮৭.৮৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এমনকি ইসলামী শরিয়াহ সূচক ডিএসইএসও ৭.২৬ পয়েন্ট বা ০.৬২ শতাংশ কমে ১,১৫৮.০২ পয়েন্টে নেমেছে।
আরও পড়ুন:
শেয়ারবাজারে ১০ কোম্পানির পতন, ‘ফকির’ বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণ: শেয়ারবাজারে দাম বেড়েছে ৭ খাতে, কমেছে ১২ খাতে
তবে এ সকল পতন সত্ত্বেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। গত সপ্তাহে মোট ১০০ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যার বাজারমূল্য দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৮৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে যা ছিল ১ হাজার ৯৫৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকার বেশি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ৪২৯ কোটি ৬৫ লাখ ৯০ হাজার টাকায়, যা প্রায় ২২ শতাংশেরও বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও পতন
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)-এও কমেছে সূচক। সিএএসপিআই সূচক ১৬.৮২ পয়েন্ট বা ০.১১ শতাংশ কমে ১৪ হাজার ৫৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যদিও সিএসসিএক্স সূচক অপরিবর্তিত রয়েছে ৮ হাজার ৮৫০ পয়েন্টে। সিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমে গেছে। এক সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ২৮ কোটি ৬২ হাজার ৪৯৯ টাকার, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৩৩ কোটি ৯ লাখ ২৪ হাজার ৮৬৭ টাকা। ফলে, সিএসইতে লেনদেন কমেছে ৫ কোটি ৯৮ লাখ ৬২ হাজার ৩৬৮ টাকা বা ১৭.৬১ শতাংশ।
বাজারের এই পতনের পেছনে কি কারণ?
প্রথমত, বিশ্ব অর্থনীতি এবং দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা যে কোনো বাজারের জন্য চাপ হয়ে দাঁড়ায়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং অর্থনৈতিক বৃদ্ধির অদূরদর্শীতা শেয়ারবাজারের জন্য কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিনিয়োগকারীরা যে কোনো মুহূর্তে উদ্বিগ্ন হয়ে বাজার থেকে সরে যেতে পারে, যার ফলে এই পতন ঘটছে।
দ্বিতীয় সপ্তাহের পরবর্তী চিত্র
তবে এক সপ্তাহের মধ্যে লেনদেন বেড়েছে, যা আশার আলো হিসেবে দেখা যেতে পারে। ডিএসইতে শেয়ারবাজারের লেনদেনের পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে কিছু বিনিয়োগকারী আশাবাদী হতে পারেন, যদিও শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যাওয়ার কারণে তাঁরা এখনো রিস্ক নিয়ে এগোতে সাহস পাচ্ছেন না।
শেয়ারবাজারের এই পতনকে শুধু ক্ষতির দৃষ্টিতে না দেখে, ভবিষ্যতের জন্য নতুন সুযোগও হতে পারে। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক চিত্রের উন্নতি হলে আবারও বাজারের চাঙ্গাভাব ফিরে আসতে পারে। তবে তা হতে হলে স্বচ্ছতা, শেয়ারবাজারের শক্তিশালী অবকাঠামো এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা জরুরি।
রাজিব/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- নকল অ্যাপ, ভুয়া ব্রোকারেজ: শেয়ারবাজারের বড় প্রতারণা উন্মোচন
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ৬৪% ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কবার্তা: ৩,০০০ সদস্যের প্রতারক চক্রের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস
- শেয়ারবাজারে আলোড়ন: ৯ স্টকে বাই সিগন্যাল, নতুন সুযোগ?
- সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর: নতুন পে-স্কেল, কার কত বেতন বাড়বে
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করলো ৮ কোম্পানি
- বিনিয়োগকারীদের চিন্তা দুর করলো ৯ কোম্পানির শেয়ার
- শেয়ারবাজারে নতুন মোড়: ফিরছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা!
- ২,৩০০ কোটি টাকার বন্ডে শেয়ারবাজারে আলোড়ন: বিএসইসি'র অনুমোদন
- পে-স্কেল নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুখবর দিলেন অর্থ উপদেষ্টা
- উদ্যোক্তা পরিচালকের ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ার বিক্রি: বিনিয়োগকারীদের আস্থা কি ঝুঁকিতে?
- ইন্টার মায়ামি বনাম শিকাগো ফায়ার: শেষ ৮ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচ
- আগামীকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে ৪ পরিবর্তন
- রেকর্ড চাহিদা: বিনিয়োগকারীদের চাহিদার শীর্ষে ২৪ কোম্পানির শেয়ার
- পুঁজি সংগ্রহে ব্যর্থ শেয়ারবাজার: দায়ী কারা? ফাঁস করলেন বিশেষজ্ঞরা