ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিএনপি-গণঅধিকার মুখোমুখি, ১৪৪ ধারা জারি

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ১৩ ১৪:০৯:২০
বিএনপি-গণঅধিকার মুখোমুখি, ১৪৪ ধারা জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় নির্বাচনের আগেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পটুয়াখালীর গলাচিপা। মাঠে নেমেছে রাজনীতির দুই তরুণ মুখ—বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাসান মামুন ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর। আর সেই প্রতিযোগিতা এখন রূপ নিচ্ছে মুখোমুখি অবস্থানে। যার জেরে সৃষ্ট উত্তেজনা থামাতে অবশেষে উপজেলাজুড়ে জারি হলো ১৪৪ ধারা।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাতে গলাচিপা উপজেলার বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের পাতাবুনিয়া বটতলা বাজারে নূরকে কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ ওঠে। ফেসবুকে রাতেই নূর জানান, পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হাসান মামুনের অনুসারীরা তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এই পোস্ট রাতারাতি ভাইরাল হয়, আর রাজনৈতিক উত্তেজনায় ঘি ঢালে।

পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন গলাচিপা ও দশমিনায় গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ও অফিসে হামলা-ভাঙচুরের খবর ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজনার পারদ চড়তেই থাকে।

শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান স্বাক্ষরিত এক আদেশে জারি করা হয় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা। এরপর উপজেলা জুড়ে মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হয়—কেউ যেন আইন ভাঙার চেষ্টা না করে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস ও বকুলবাড়িয়ায় সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে সহিংসতার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই ১৩ জুন সকাল ৮টা থেকে ১৫ জুন সকাল ৮টা পর্যন্ত গলাচিপা পৌরসভা ও আশপাশের এলাকায় পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তি একত্র হওয়া, সভা-সমাবেশ, মিছিল, প্রতিবাদ, দেশীয় অস্ত্র ও বিস্ফোরক বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

গণঅধিকার পরিষদের পাল্টা কর্মসূচি

এই পরিস্থিতিতে গণঅধিকার পরিষদও চুপ থাকেনি। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় সংবাদ সম্মেলন ও ৪টায় বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেয় গলাচিপা উপজেলা শাখা। তবে ১৪৪ ধারার কারণে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

‘জানমাল রক্ষাই অগ্রাধিকার’— প্রশাসন

গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘সাধারণ মানুষের জানমাল ও সরকারি সম্পত্তি রক্ষার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।’

এদিকে স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের মতে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই পটুয়াখালী-৩ আসনে শুরু হয়েছে প্রার্থীতা নিয়ে ‘অঘোষিত শোডাউন’। দুই তরুণ নেতৃত্বের প্রভাব বিস্তার কেন্দ্র করেই গলাচিপার রাজনীতিতে দেখা দিয়েছে এ অস্থিরতা।

তবে পরিস্থিতি যাতে সহিংস রূপ না নেয়, সে লক্ষ্যে প্রশাসনের নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। এখন দেখার বিষয়—এই উত্তেজনার আগুন নিভে, না আরও ছড়িয়ে পড়ে।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ