ঢাকা, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

শেয়ারবাজারে ঈদের পর প্রথম দিন: চাপের শুরু, স্থিরতায় শেষ

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ১৫ ১৫:১৮:৩২
শেয়ারবাজারে ঈদের পর প্রথম দিন: চাপের শুরু, স্থিরতায় শেষ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ১০ দিনের ঈদ ছুটির পর রোববার (১৫ জুন) পুনরায় লেনদেন শুরু করেছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জ। প্রথম দিনেই বাজারে দেখা গেছে বৈচিত্র্যময় প্রবণতা। আন্তর্জাতিক অস্থিরতা এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কমার প্রত্যাশার দ্বৈত প্রভাব বাজারে পড়েছে স্পষ্টভাবে। দিনটিকে তাই বিনিয়োগকারীদের জন্য পর্যবেক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচনাবিন্দু হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

লেনদেনের শুরুতে সূচক নিম্নমুখী, পরে স্থিতিশীলতা

দিনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এক ধাপে ২৫ পয়েন্টের বেশি হারায়। এতে স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চাপ তৈরি হয়। তবে আধা ঘণ্টার মধ্যেই বাজার ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ায়। দিন শেষে ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৬ পয়েন্ট বেড়ে বন্ধ হয়, যা অ্যাডজাস্টমেন্টের পর দাঁড়ায় প্রায় ১৫ পয়েন্টে।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দেখা গেছে একই রকম প্রবণতা। সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলোর দরবৃদ্ধির হার ছিল তুলনামূলক বেশি।

দরপতন বেশি, লেনদেন বেড়েছে

ডিএসইতে লেনদেন শেষে ১৪৫টি প্রতিষ্ঠানের দর বেড়েছে, ১৭৯টির কমেছে এবং ৩৭টির দর অপরিবর্তিত ছিল। অর্থাৎ দাম কমার হার আজও বেশি থাকলেও মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল উর্ধ্বমুখী। এটি ইঙ্গিত দেয়, বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ সক্রিয় অবস্থানে ছিল এবং বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় ছিল।

সিএসইতে বাজারভিত্তিক দরবৃদ্ধি তুলনামূলক ভালো ছিল, যা দেশি ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ার দিকেও ইঙ্গিত দেয়।

রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটের প্রভাব

বিশ্লেষকদের মতে, লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কিছুটা প্রশমনের বার্তা দিচ্ছে। এটি দীর্ঘমেয়াদে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারে।

অন্যদিকে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দামে চাপ তৈরি করছে। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের আমদানি ব্যয় বাড়বে, যা বিনিময় হার, মুদ্রাস্ফীতি ও রপ্তানিমুখী শিল্পে প্রভাব ফেলতে পারে।

মূল্যায়ন ও করণীয়

ঈদের পর প্রথম কার্যদিবসে বাজারে যে ওঠানামা দেখা গেছে, সেটি মূলত বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ দুই ধরনের অর্থনৈতিক সংকেতের ফল। এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের জন্য মূল কৌশল হওয়া উচিত—মৌলভিত্তির ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়া, গুজব বা সংবেদনশীল খবরের ভিত্তিতে তাড়াহুড়ো না করা এবং পোর্টফোলিও বৈচিত্র্য নিশ্চিত করা।

মোটের ওপর, আজকের বাজার পরিস্থিতি দেখিয়েছে—বিনিয়োগকারীরা সতর্ক থাকলেও বাজারে অংশগ্রহণ বাড়ছে এবং পুঁজিবাজার ধীরে ধীরে নতুন প্রেক্ষাপটের সাথে মানিয়ে নিচ্ছে। আন্তর্জাতিক ও রাজনৈতিক অগ্রগতির ওপর ভবিষ্যতের বাজারচিত্র অনেকাংশে নির্ভরশীল থাকবে।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ