ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২

বাংলাদেশের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়ে যা বললেন কিউবা মিচেল

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ১৭ ১৪:২৫:৩১
বাংলাদেশের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়ে যা বললেন কিউবা মিচেল

নিজস্ব প্রতিবেদক: দূর ইংল্যান্ডের উত্তর-পূর্ব কোণায় এক নগরীর নাম সান্দারল্যান্ড। সেখানে এক তরুণ ফুটবলারের প্রতিদিন কাটে অনুশীলনে, পরিশ্রমে, আর অপেক্ষায়—নিজেকে প্রমাণ করার, আর কোনো একদিন দেশের প্রতিনিধিত্ব করার। তবে দেশ মানে শুধু জন্মভূমি নয়, কখনো কখনো সেটা হয় হৃদয়ের টান। সেই হৃদয়ের ডাকেই এখন সাড়া দিচ্ছেন কিউবা মিচেল—বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকার জন্য।

৮ বছর সান্দারল্যান্ডের অ্যাকাডেমিতে বেড়ে ওঠা কিউবার গল্পটা সিনেমার মতো। অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে খেলেছেন নিয়মিত। এবারের মৌসুমে ক্লাবটি যখন বহু প্রতীক্ষিত প্রিমিয়ার লিগে ফিরল, তখন কিউবা ছিলেন স্কোয়াডের অংশ। কিন্তু স্বপ্নের দরজা খোলার সময়টায় ক্লাবের পরিকল্পনায় জায়গা হলো না তার। স্কোয়াড ছোট করতে গিয়ে যাদের নাম বাদ পড়ল, তাদের একজন তিনি।

তবে কিউবা হাল ছাড়েননি। বরং এই বিরতির মাঝেই তার জীবনে উঁকি দিল এক নতুন স্বপ্ন—বাংলাদেশের জাতীয় দলের হয়ে খেলা।“এই মুহূর্তে সব কিছু বেশ শান্ত, তবে প্রি-সিজনে কিছু সুযোগ রয়েছে যেগুলো কাজে লাগাতে চাই। আমার বাংলাদেশের হয়ে খেলার কথা ছিল, কিন্তু রেজিস্ট্রেশন কয়েক ঘণ্টা দেরি হওয়ায় সেটা হয়নি। এখন অপেক্ষা অক্টোবর পর্যন্ত,”—বললেন তিনি স্থানীয় পত্রিকা ম্যাকেম নিউজ-এর সঙ্গে আলাপে।

বাংলাদেশের হয়ে খেলাটা কিউবার কাছে শুধু এক পেশাদার সিদ্ধান্ত নয়, বরং এক আবেগের নাম।“শুধু অভিজ্ঞতার দিক থেকেই নয়, বাংলাদেশের হয়ে খেলা জীবনে একবারই ঘটার মতো কিছু। খুব বেশি ফুটবলার এই সুযোগ পায় না,”—বলতে বলতেই যেন তার কণ্ঠে মিশে গেল আত্মমর্যাদার স্পর্শ।

সান্দারল্যান্ডের মাঠে খেলার সময় পরিচয় হয়েছে আরেক বাংলাদেশি ফুটবলারের সঙ্গে—হামজা চৌধুরী। ইংল্যান্ডের হয়ে অনূর্ধ্ব-২১ দলে খেলা এই মিডফিল্ডার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেকের পর আলোচনায় ছিলেন অনেকদিন। কিউবা জানালেন, হামজার সঙ্গেও তার হয়েছে কথা।

“আমি ইতিমধ্যে হামজার সঙ্গে কথা বলেছি। তার বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা, সমর্থকদের উন্মাদনা—সব শুনে দারুণ রোমাঞ্চিত আমি। সেখানে গিয়ে খেলতে চাই। দেখতে চাই কী কী দরজা খুলে যায়।”

বাংলাদেশের ফুটবল এখন পরিবর্তনের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। এক সময় যেটি শুধুই ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় সীমাবদ্ধ ছিল, আজ সেটা প্রবাসী প্রতিভার সংমিশ্রণে বিশ্বদরবারে নিজের অবস্থান খুঁজে নিচ্ছে। কিউবা মিচেলের মতো তরুণদের আগমন সেই রূপান্তরেরই এক নতুন পৃষ্ঠা।

আর কিউবা? সে প্রস্তুত। সান্দারল্যান্ডের কুয়াশা পেরিয়ে এবার তার গন্তব্য হতে পারে বাংলার সবুজ গালিচা। সেখানে হয়তো অপেক্ষা করছে এক নতুন শুরু—একটি পতাকা, একটি জাতি, একটি স্বপ্ন।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ