বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ৯ কোম্পানির ক্যাশ ফ্লো হ্রাস পেয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে ২১টি মার্চ ২০২৫ প্রান্তিক পর্যন্ত আর্থিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্র অনুযায়ী, এদের মধ্যে ৯টি কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ (CFO per share) পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে।
এই প্রবণতা বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ সূচক, যা কোম্পানিগুলোর কার্যকরী অর্থপ্রবাহ ব্যবস্থাপনার অবস্থা প্রতিফলিত করে। নিচে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর মার্চ প্রান্তিকের ক্যাশ ফ্লো তুলনামূলকভাবে তুলে ধরা হলো:
ডরিন পাওয়ার
এই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো (EPS) দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ২৮ পয়সা, যেখানে আগের বছর একই সময় তা ছিল ২৪ টাকা ৯৭ পয়সা। কমেছে ১৩ টাকা ৬৯ পয়সা বা প্রায় ৫৫ শতাংশ।
বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার
এই কোম্পানির অবস্থান আরও নাজুক। এ প্রান্তিকে তাদের শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো মাইনাস ৫ টাকা ৪৮ পয়সা হয়েছে, যা আগের বছর ছিল মাইনাস ১ টাকা ৭৮ পয়সা। অর্থাৎ, লোকসান বেড়েছে প্রায় তিন গুণ।
এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন
শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৯ পয়সায়, যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ৮৯ পয়সা। পতনের হার প্রায় ৯৫ শতাংশ।
জিবিবি পাওয়ার
এই প্রান্তিকে ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ১৪ পয়সা, যা আগের বছরে ছিল ৩ টাকা ৮ পয়সা। অর্থাৎ ক্যাশ ফ্লো প্রায় ৯৫.৪ শতাংশ কমে গেছে।
খুলনা পাওয়ার কোম্পানি
শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো কমে হয়েছে ৮১ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ৩ টাকা ২১ পয়সা। পতনের হার প্রায় ৭৫ শতাংশ।
ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং
এ কোম্পানির ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ৫১ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ৪৪ পয়সা। কমেছে প্রায় ৬৫ শতাংশ।
এমজেএল বাংলাদেশ লিমিটেড (MJLBD)
প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো ২৯ পয়সা, যেখানে আগের বছর ছিল ৮ টাকা ৪ পয়সা। পতন হয়েছে ৭ টাকা ৭৫ পয়সা বা ৯৭ শতাংশের বেশি।
পদ্মা অয়েল
সবচেয়ে বড় নেতিবাচক ক্যাশ ফ্লো দেখা গেছে পদ্মা অয়েলের ক্ষেত্রে। তাদের শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো হয়েছে মাইনাস ২৭ টাকা ২১ পয়সা, যেখানে আগের বছর এটি ছিল ৩ টাকা ৮ পয়সা। এ হারে পতন দেশের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে অন্যতম।
শাহজীবাজার পাওয়ার
ক্যাশ ফ্লো কমে হয়েছে ১ টাকা ৯৯ পয়সা, আগের বছর ছিল ৯ টাকা ৩২ পয়সা। অর্থাৎ ক্যাশ ফ্লো কমেছে প্রায় ৭৯ শতাংশ।
প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ
বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টিকোণ থেকে ক্যাশ ফ্লো একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক, কারণ এটি কোম্পানির আয় ও ব্যয়ের মধ্যে প্রকৃত নগদ প্রবাহ নির্দেশ করে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অপারেশনাল ব্যয়ের চাপ, মূলধনী বিনিয়োগে অব্যাহত প্রবণতা এবং ডুয়েট রেভিনিউ সংগ্রহের ক্ষেত্রে বিলম্বের ফলে এই খাতে নগদ অর্থপ্রবাহ চাপে পড়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থপ্রবাহে এমন হ্রাস কোম্পানির চলমান প্রকল্প বাস্তবায়ন, ঋণ পরিশোধ এবং ভবিষ্যতের লভ্যাংশ প্রদানে প্রতিকূল প্রভাব ফেলতে পারে।
সম্ভাব্য করণীয়
কার্যকর অর্থপ্রবাহ ব্যবস্থাপনা: বিদ্যমান প্রকল্পগুলোর নগদ প্রবাহ পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অপারেশনাল খরচ পুনর্মূল্যায়ন করা।
ঋণ ও দায় পরিশোধ পরিকল্পনা: স্বল্পমেয়াদি দায় নিরসনে কৌশলগত রিফাইন্যান্সিং ও মূলধনের গঠন পুনর্বিন্যাস।
পরিচালন দক্ষতা বৃদ্ধি: বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণে প্রযুক্তিনির্ভর অটোমেশন বাড়িয়ে অপচয় হ্রাস।
এই প্রতিবেদন বিনিয়োগকারীদের কাছে ঝুঁকি বিবেচনায় রাখার পাশাপাশি কোম্পানিগুলোর আর্থিক অবস্থান পুনর্মূল্যায়নের জন্য একটি সহায়ক রেফারেন্স হতে পারে।
জামিরুল ইসলাম/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- দুই কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ার দর বৃদ্ধি: ডিএসইর কড়া সতর্কবার্তা জারি
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ৬৪% ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- শেয়ার কারসাজি: বিএসইসি’র কড়া তদন্তের নির্দেশ, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক
- বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কবার্তা: ৩,০০০ সদস্যের প্রতারক চক্রের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস
- ২,৩০০ কোটি টাকার বন্ডে শেয়ারবাজারে আলোড়ন: বিএসইসি'র অনুমোদন
- বিনিয়োগকারীদের চিন্তা দুর করলো ৯ কোম্পানির শেয়ার
- দুই কোম্পানির ডিভিডেন্ডে হতাশ বিনিয়োগকারীরা
- এশিয়া কাপ শিরোপা নিলো না ভারত
- শেয়ারবাজারে আতঙ্ক! ১৪ প্রতিষ্ঠানের রদবদলে অন্ধকারে বিনিয়োগকারীরা
- এইচএসসি রেজাল্ট ২০২৫: ফল নিয়ে যা জানা গেল
- রেকর্ড চাহিদা: বিনিয়োগকারীদের চাহিদার শীর্ষে ২৪ কোম্পানির শেয়ার
- সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা নিয়মে যুগান্তকারী পরিবর্তন
- সরকারি বেতন কাঠামো ২০২৫ নিয়ে আসলো নতুন সিদ্ধান্ত
- পুঁজি সংগ্রহে ব্যর্থ শেয়ারবাজার: দায়ী কারা? ফাঁস করলেন বিশেষজ্ঞরা
- ডিভিডেন্ড পেল বিনিয়োগকারীরা