ঢাকা, বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২

ভূমি আইন ২০২৪: খাজনা না দিলে বাজেয়াপ্ত হবে আপনার জমি

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৬ ১১:৩৪:৪১
ভূমি আইন ২০২৪: খাজনা না দিলে বাজেয়াপ্ত হবে আপনার জমি

ছাড় পাচ্ছেন না মালিকরা, তিন বছর বকেয়া হলেই জমি যাবে খাস খতিয়ানে

নিজস্ব প্রতিবেদক: জমি আছে, খাজনা দিচ্ছেন না—এমন অভ্যাস থাকলে এবার বিপদে পড়তে পারেন। কারণ নতুন ‘ভূমি মালিকানা ও ব্যবহার আইন, ২০২৪’-এর প্রস্তাবিত বিধান অনুযায়ী, টানা তিন বছর খাজনা (ভূমি উন্নয়ন কর) না দিলে সেই জমি বাজেয়াপ্ত করে সরকারের খাস খতিয়ানে যুক্ত করা হবে। ভূমি মন্ত্রণালয় বলছে, ভূমি ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতেই এমন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

একটানা তিন বছর খাজনা বকেয়া রাখলেই শেষ মালিকানা

আইনের খসড়ায় উল্লেখ রয়েছে:

তিন অর্থবছর খাজনা বকেয়া থাকলে সংশ্লিষ্ট জমি মালিকানাসহ বাজেয়াপ্ত হবে এবং সরকারি খাস খতিয়ানে স্থানান্তরিত হবে।

এর মানে, জমি আপনার নামে থাকলেও যদি নিয়মিত খাজনা না দেন, তাহলে সেই জমি আর আপনার হাতে থাকবে না।

স্মার্ট ভূমি কার্ডে মালিকানা যাচাই

প্রস্তাবিত আইনে প্রতি জমির জন্য থাকবে আধুনিক স্মার্ট কার্ড বা সার্টিফিকেট অব ল্যান্ড ওনারশিপ (CLO)। এতে থাকবে—

ইউনিক নম্বর ও QR কোড

জমির মালিকের নাম, দাগ-খতিয়ান ও মৌজা

খাজনা ও হালনাগাদ তথ্য

এই কার্ড হবে জমির মালিকানার চূড়ান্ত দলিল, যার ভিত্তিতেই সব লেনদেন ও নামজারি হবে।

জালিয়াতিতে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা

জমি দখল ও নকল কাগজের মাধ্যমে প্রতারণা বন্ধে দণ্ডও রাখা হয়েছে নতুন আইনে।

জাল দলিল ব্যবহার করলে—

২ বছরের জেল অথবা

৫ লাখ টাকা জরিমানা

অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে

কৃষিজমি অধিগ্রহণে কড়াকড়ি

উন্নয়ন প্রকল্পে দুই বা তিন ফসলি কৃষিজমি অধিগ্রহণ করা যাবে না

খুব প্রয়োজন হলে মন্ত্রণালয়ের বিশেষ অনুমতি লাগবে

বরং অনুর্বর জমি অগ্রাধিকার দিতে হবে

শ্রেণি পরিবর্তনে অনুমতি বাধ্যতামূলক

সরকারের অনুমতি ছাড়া জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না

এক বিঘা পর্যন্ত ভূমি এর বাইরে

নিয়ম ভাঙলে হতে পারে—

এক বছরের জেল বা

৫০ হাজার টাকা জরিমানা

স্যাটেলাইট ম্যাপিংয়ে ডিজিটাল ভূমি মানচিত্র

ভূমি ব্যবস্থাপনা স্বচ্ছ করতে তৈরি হবে স্যাটেলাইটভিত্তিক ডিজিটাল ম্যাপ, যেখানে আলাদা করে দেখা যাবে—

আবাসিক, বাণিজ্যিক, জলাভূমি, বনাঞ্চল ও কৃষিজমি

হস্তান্তরের সঙ্গে সঙ্গে নামজারি ও খাজনা হালনাগাদ

জমি বিক্রি, হস্তান্তর বা উত্তরাধিকার পেলেই

নামজারি করতে হবে

CLO কার্ড হালনাগাদ করতে হবে

খাজনা দিতে হবে নির্ধারিত ফি সহ

জমির কাগজ আছে বলেই মালিকানা থাকবে—এ ধারণা বদলে যাচ্ছে। খাজনা বকেয়া রাখলে তিন বছরের মাথায় জমি বাজেয়াপ্ত হয়ে যেতে পারে সরকারের হাতে।

তাই এখনই সাবধান হোন—খাজনা পরিশোধ করুন, দাখিলা সংগ্রহ করুন এবং স্মার্ট জমি কার্ড হালনাগাদ রাখুন, যেন নিজের জমি নিজের কাছেই থাকে।

FAQ (এক লাইনে):

প্রশ্ন: খাজনা না দিলে জমির কী হবে?

উত্তর: তিন বছর বকেয়া থাকলে জমি বাজেয়াপ্ত হয়ে সরকারের খাস খতিয়ানে চলে যাবে।

প্রশ্ন: স্মার্ট ভূমি কার্ড কী?

উত্তর: জমির মালিকানা যাচাইয়ের জন্য QR কোডসহ আধুনিক সনদ (CLO), যা সব লেনদেনে দরকার হবে।

প্রশ্ন: জমি শ্রেণি পরিবর্তনে কী শাস্তি থাকবে?

উত্তর: অনুমতি ছাড়া করলে এক বছরের জেল বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা।

প্রশ্ন: তিন ফসলি কৃষিজমি কি অধিগ্রহণ করা যাবে?

উত্তর: না, মন্ত্রণালয়ের বিশেষ অনুমতি ছাড়া সরকার অধিগ্রহণ করতে পারবে না।

আল-আমিন ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ