ঢাকা, শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের চাহিদার শীর্ষে চার কোম্পানির শেয়ার

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৬ ২৩:০৯:২১
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের চাহিদার শীর্ষে চার কোম্পানির শেয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত মাসে (জুলাই) বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখিয়েছেন প্রাইম ব্যাংক এবং ব্র্যাক ব্যাংকে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-এর তথ্য অনুযায়ী, নিট বিদেশি বিনিয়োগ এ মাসে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। মোট ১৪৫টি কোম্পানিতে বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে, যার মধ্যে ২৪টির শেয়ারে বেড়েছে এবং ২৭টিতে কমেছে।

বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি শেয়ার কিনেছেন প্রাইম ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, ম্যারিকো এবং উত্তরা ব্যাংকে। ব্র্যাক ব্যাংকে শেয়ার কেনা হয়েছে ২৩৩ কোটি টাকার, প্রাইম ব্যাংকে ৭৮ কোটি, আইডিএলসি ফাইন্যান্সে ১৯ কোটি, ম্যারিকোতে ১১ কোটি এবং উত্তরা ব্যাংকে ৩.৯২ কোটি টাকার।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মূলত শক্তিশালী আর্থিক ভিত্তি এবং সু-প্রশাসনসম্পন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। বাজারে ‘জাঙ্ক স্টক’-এর সংখ্যা বেশি থাকায় বিনিয়োগ মূলত সীমিত কিছু কোম্পানিতে কেন্দ্রীভূত হয়। এছাড়া সামষ্টিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা, দুর্বল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বিদেশি বিনিয়োগকে প্রভাবিত করতে পারে।

এমএসসিআই ও এফটিএসই রাসেলের সতর্কতা

বাজার সূচক সরবরাহকারী এমএসসিআই তাদের জুন ২০২৫ পর্যালোচনায় জানিয়েছে, দুটি কোম্পানির শেয়ারে ফ্লোর প্রাইস এখনও বহাল রয়েছে, যা বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের মূলধন ফেরত পাওয়ায় বিলম্ব ঘটাচ্ছে। এমএসসিআই ‘বিশেষ ব্যবস্থা’ অব্যাহত রাখবে, যা সূচকে সম্ভাব্য পরিবর্তন সীমিত করবে। এফটিএসই রাসেলও বলেছে, ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া শেয়ারের পর বাংলাদেশের অন্যান্য সিকিউরিটিজের যোগ্যতা পুনর্মূল্যায়ন করা হবে।

অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বিনিয়োগ সম্ভাবনা

ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ আয়োজিত 'ফরেন ইনভেস্টরস সামিট ২০২৫'-এ অর্থনৈতিক বিষয়ক বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল। তিনি বলেন, "বৈশ্বিক স্টক মার্কেটের তুলনায় বাংলাদেশি বাজার শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। এটি বিনিয়োগের জন্য ইতিবাচক সংকেত।"

কনটেক্সিওয়েল ইনভেস্টমেন্ট এলএলসি-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক টাকাও হিরোসে বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ দীর্ঘমেয়াদী বিদেশি বিনিয়োগের জন্য অপরিহার্য। তিনি বলেন, "আমরা দ্রুত এবং আক্রমণাত্মক বিনিয়োগ করি, কিন্তু অস্থিরতা দেখা দিলে অন্য দেশে সরিয়ে নেব। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা পর্যবেক্ষণ করছে—তাদের ভয় দেখাবেন না।"

এশিয়া ফ্রন্টিয়ার ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের ফান্ড ম্যানেজার রুচির দেশাই বলেন, "রাজনৈতিক এবং নীতিগত স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা গেলে আগামী পাঁচ-ছয় বছরে বাংলাদেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনা কোনো বাধার সম্মুখীন হবে না।"

আল-আমিন ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ